|
|
|
|
|
নৃশংসতম ধর্ষণে ফাঁসি,
অর্ডিন্যান্সে সায় মন্ত্রিসভার
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
|
ধর্ষণের নৃশংসতম ঘটনার ক্ষেত্রে সাজা হবে ফাঁসি। অর্ডিন্যান্স জারি করে অবিলম্বে এই ব্যবস্থা চালু করতে চলেছে মনমোহন সরকার। আজ কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা এই অর্ডিন্যান্সে সিলমোহর বসিয়েছে।
বর্তমান আইনে ধর্ষণের পরে খুন করা হলে, সেই খুনের জন্য ফাঁসির বিধান ছিল। অর্ডিন্যান্সে ধর্ষণ বা গণধর্ষণের পরে অনিচ্ছাকৃত খুন এবং সম্পূর্ণ ভাবে অক্ষম করে দেওয়ার মতো অপরাধের জন্য আমৃত্যু কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। এমনকী নৃশংস অপরাধের ক্ষেত্রে আইন মেনে ফাঁসির আদেশও দিতে পারবে আদালত। তবে ঠিক কোন কোন ক্ষেত্রে ফাঁসির সাজা হবে, তা অর্ডিন্যান্স জারির পরেই জানা যাবে। ধর্ষণ বা গণধর্ষণের ন্যূনতম শাস্তি হবে ২০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড। সরকারি সূত্রের খবর, খুব শীঘ্রই রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় অর্ডিন্যান্সে সই করবেন। তারপরে বিজ্ঞপ্তি জারি হবে।
দিল্লির গণধর্ষণ কাণ্ডের পরেই দোষীদের ফাঁসির দাবি উঠেছিল। আইন সংশোধনের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি জে এস বর্মার নেতৃত্বে কমিটি তৈরি হয়। সেই কমিটি ধর্ষণের অপরাধে ফাঁসির সাজার সুপারিশ করেনি। বরং ফাঁসি ব্যবস্থাকে ‘প্রাচীন’ বলে মত দিয়েছিল। সরকার কিন্তু নাগরিক আন্দোলনের দাবি মেনেই ফাঁসির বিধান রাখার ব্যবস্থা করেছে।
মন্ত্রিসভা সূত্রের খবর, এ বার ‘যৌন নির্যাতন’ শব্দটির আওতা বাড়িয়ে মহিলাদের বিরুদ্ধে সামান্যতম অপরাধের ক্ষেত্রেও আরও কড়া শাস্তির ব্যবস্থা রাখা হবে। ধর্ষণের ঘটনার পাশাপাশি এসএমএস বা ই-মেল পাঠিয়ে বিরক্ত করা, কর্মক্ষেত্রে হয়রানি, ব্যক্তিগত অবস্থায় লুকিয়ে দেখা, শরীরে হাত দেওয়া, নগ্ন করার চেষ্টা, ইভটিজিং, অনুসরণ বা বিরক্ত করা, অ্যাসিড ছোড়া এমনকী নারী পাচারের মতো অপরাধকেও যৌন নিগ্রহের আওতায় এনে শাস্তির মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে। বর্মা কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী বৈবাহিক সম্পর্কে স্ত্রীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে শারীরিক সম্পর্ককে যৌন নির্যাতনের আওতায় আনা হচ্ছে না।
তবে মোটের উপর বর্মা কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতেই আইন সংশোধন হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আর পি এন সিংহ। বর্মা কমিটি ফাঁসির সাজাকে ‘প্রাচীন’ বললেও মনমোহন সরকার নতুন আইনকে প্রগতিশীল বলেই দাবি করেছে। বস্তুত, দিল্লির ঘটনায় জেরে দেশজোড়া ক্ষোভের মুখে নারী নির্যাতন সংক্রান্ত আইন সংশোধনে তাঁদের তৎপরতার কথা তুলে ধরতে চাইছেন সরকার ও কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব। আজ মন্ত্রিসভার বৈঠকের পরে আইনমন্ত্রী অশ্বিনী কুমার বলেন, “আইন কড়া করতে সরকার যত দ্রুত সম্ভব পদক্ষেপ করেছে। এর উদ্দেশ্য সফল হবে বলেই আমাদের আশা।”
বুধবার প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ নিজেই বর্মাকে ফোনে ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন। তার আগে থেকেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে অর্ডিন্যান্স তৈরির কাজ শুরুর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। অর্ডিন্যান্সের খসড়া পাঠানো হয় আইন মন্ত্রকে। সাধারণত প্রতি সপ্তাহের বৃহস্পতিবারই কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠক বসে। কিন্তু গত কাল মন্ত্রিসভায় লোকপাল আইন নিয়ে আলোচনা থাকায় অর্ডিন্যান্সের প্রসঙ্গ ওঠেনি। আজ সন্ধ্যায় তাই প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে ফের বৈঠক ডাকা হয়। সরকারি সূত্রের বক্তব্য, সংসদে বিল এনে বর্মা কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী ফৌজদারি আইন সংশোধন করতে সময় লাগত। তাই বাজেট অধিবেশনের তিন সপ্তাহ আগেই অর্ডিন্যান্স এনে তৎপরতা দেখাল কেন্দ্র। |
|
|
|
|
|