সময়টা ২৮ মার্চ, ১৯৯৯। নিয়ন্ত্রণরেখা সংলগ্ন এলাকায় প্রাক্ কার্গিল সংঘর্ষের অস্থিরতা তখন চরমে। ঠিক এই পরিস্থিতিতেই গোপনে পাক সেনা কপ্টারে চড়ে ভারতে ঢুকে গোটা একটা রাত কাটিয়েছিলেন মুশারফ। অন্তত তেমনই দাবি পাক সেনার প্রচারশাখার (মিডিয়া উইং) অবসরপ্রাপ্ত অফিসার কর্নেল আশফাক হুসেনের।
সম্প্রতি এক টিভি অনুষ্ঠানে নিজের মতামত জানিয়েছেন হুসেন। তবে এর আগে নিজের বই ‘উইটনেস টু ব্লান্ডার: কার্গিল স্টোরি আনফোল্ডস্’-এও এই ইতিবৃত্ত জানিয়েছিলেন তিনি।
আর তাতেই পরিষ্কার, ভারতের চৌহদ্দির এগারো কিলোমিটার ভিতরে ‘জিরকিয়া মুসতাকর’ নামে এক জায়গায় রাত কাটান মুশারফ।
হুসেনের আরও দাবি, কার্গিল যুদ্ধের কিছু দিন আগে থেকেই ভারতে অনুপ্রবেশ করেছিল পাক সেনা। ১৯৯৮-এর ১৮ ডিসেম্বর ক্যাপ্টেন নদিম আলি এবং হাবিলদার ললিক জানকে প্রথম ভারত অভিযানে পাঠান পাক সেনা কর্তৃপক্ষ।
এর পর পাক সেনা তাদের নানা ইউনিটকে নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে ভারত ভূখণ্ড দখলের নির্দেশ দিতে শুরু করে। ১৯৯৯-এর ৩ মে এই অনুপ্রবেশ নজরে আসে ভারতীয় মেষপালকদের। তবে ইতিহাসের প্রথা মেনেই এ ইতিহাসও বিতর্কিত। কেমন? তদানীন্তন পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ জানিয়েছিলেন, কার্গিল সংঘর্ষের সম্পর্কে কিছুই জানানো হয়নি তাঁকে। কিন্তু মুশারফের দাবি ছিল, সময় থাকতেই পাক সেনার অভিযান সম্পর্কে জানানো হয়েছিল শরিফকে। অবশ্য হুসেনের দাবি, নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর ভারতীয় ভূখণ্ড দখলের পুরো পরিকল্পনাই মুশারফ-সহ আরও তিন জন সেনা অফিসারের।
এ দিন অবশ্য মুশারফের গোপনে ভারত অনুপ্রবেশের চেষ্টাকে ‘সাহসী’ পদক্ষেপ বলেছেন ভারতের প্রাক্তন সেনাপ্রধান ভি কে সিংহ। একই সঙ্গে তাঁর প্রশ্ন, ভারতীয় চৌহদ্দিতে এসে, থেকে কী ভাবে নিরাপদে ফিরে গেলেন মুশারফ? ভারতের তরফে নিশ্চয়ই কিছু ভুল ছিল, নিশ্চিত প্রাক্তন ভারতীয় সেনাপ্রধান। তবে তাঁর বক্তব্য, পাকিস্তানই যে কার্গিলের হোতা তা হুসেনের কথা থেকেই প্রমাণ হয়ে গিয়েছে। |