3


 
করলা বাঁধের নিরাপত্তায় বসছে আলো, পুলিশ চৌকি
রলা নদীর বাঁধের নিরাপত্তায় আলোর ব্যবস্থার পাশাপাশি স্থায়ী পুলিশ চৌকির পরিকাঠামোও তৈরি করতে উদ্যোগী জলপাইগুড়ি পুরসভা। এলাকাটি পুর এলাকার আওতায় না পড়ায়, পদ্ধতিগত কারণেই এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনের থেকে সরকারি প্রস্তাবের অপেক্ষা করছেন পুর কর্তৃপক্ষ। প্রশাসন সূত্রের খবর আজ শুক্রবার জেলা শাসক নিজেই পুরসভার চেয়ারম্যানকে এ বিষয়ে প্রস্তাব দেবেন। ২৪ জানুয়ারি জেলাশাসকের দফতরের পেছন থেকে করলা নদীর পাঁকে মুখ গোঁজা অবস্থায় এক কিশোরীর দেহ উদ্ধার করা হয়। তদন্তে জানা যায়, রাত ৯টার পরে এক যুবক কিশোরীকে নিয়ে বাঁধে যায়। অন্ধকারে ঢাকা বাঁধের নীচে ঝোপের আড়ালে সহবাসের পরে কিশোরী বিয়ের জেদ করলে যুবকটি তাকে গলা টিপে খুন করে নদীর পাকে মুখ গুঁজে দেয় বলে পুলিশ জানতে পেরেছে।
শহরের সুভাষ সেতু থেকে জেলা শাসকের দফতরের পিছন দিয়ে বিস্তৃত প্রায় ১ কিমি লম্বা করলা বাঁধে কোথাও আলোর ব্যবস্থা না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে অবাধ নেশার কারবার থেকে শুরু করে অসামাজিক কাজকর্ম চলে বলে অভিযোগ। বাঁধের ওপরে সম্প্রতি পুলিশি নজরদারি শুরু হলেও সূর্যাস্তের পরে বাঁধের নীচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ঝোপজঙ্গলের এলাকা আড়ালেই থেকে যায় বলে অভিযোগ। কিশোরীর দেহ উদ্ধারের পরেই করলা এবং লাগোয়া তিস্তা বাঁধের জুবলি পার্ক ও স্পারগুলির নিরাপত্তা নিয়ে জেলা প্রশাসনের শীর্ষ পর্যায়ে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে। বাঁধের নিরাপত্তা বাড়াতে আলো লাগানোর জন্য পুরসভাকে প্রস্তাব দেওয়া হবে বলে জানান জেলা শাসক স্মারকী মহাপাত্র। সংবাদপত্রে জেলাশাসকের বক্তব্য জানার পরে পুরসভার তরফে প্রস্তুতি শুরু করে দেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়।
জেলা শাসক স্মারকী মহাপাত্র বলেন, “শুক্রবার পুরসভার চেয়ারম্যানের সঙ্গে একটি বৈঠক রয়েছে। সেখানেই বাঁধে আলো লাগানোর প্রস্তাব দেব চেয়ারম্যানকে, সেই সঙ্গে পুরসভা কী উদ্যোগ নিতে চাইছে তাও চেয়ারম্যানের থেকে জেনে নেব। বাঁধের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সব রকম পদক্ষেপ নেওয়া হবে।” জেলা পুলিশ সুপার অমিত জাভালগি বলেন, “বাঁধে ইতিমধ্যেই পুলিশি টহলদারি বাড়ানো হয়েছে। আলো বা অনান্য পরিকাঠামো তৈরি হলে নজরদারিতে সুবিধে হবে।” বাঁধে সর্বক্ষণের নজরদারি চালাতে পুলিশ প্রশাসন স্থায়ী পুলিশ চৌকি বসাতে চাইলে, চৌকির পরিকাঠামোও পুরসভা তৈরি করে দেবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বাঁধের ওপরে কংক্রিকেটের কাঠামো তৈরিতে সমস্যা হলে শক্তপোক্ত তাবু দিয়ে ছাউনি তৈরি করবে বলে পুরসভা জানিয়েছে। পুরসভার চেয়ারম্যান মোহন বসু বলেন, “যেহেতু বাঁধের এলাকাটি পুরসভার আওতায় পড়ে না। সে কারণে পুরসভা নিজে এই কাজ করতে পারে না। তবে পুরসভার বাস্তুকারদের পাঠিয়ে সমীক্ষা করে নিয়েছি। প্রশাসনের তরফে প্রস্তাব এলেই কাজ শুরু করে দেওয়া হবে।” মোহন বাবু বলেন, “অগুনতি সাধারণ বাসিন্দা মনোরম পরিবেশের কারণে তিস্তা ও করলার বাঁধে যান। তাঁরা যাতে নিরাপত্তার অভাব বোধ না করেন, পাশাপাশি শহরের সুস্থ পরিবেশ রক্ষা করতেই পুরসভার এই উদ্যোগ।” করলা বাঁধ লাগোয়া তিস্তা বাঁধেও আলোর ব্যবস্থা করা হবে বলে পুরসভা জানিয়েছে।

করলা বাঁধের নিরাপত্তায় পরামর্শ
১) করলা নদীর ১ কিলোমিটার এবং জুবলি পার্ক লাগোয়া তিস্তা বাঁধ সহ প্রায় দেড় কিলোমিটারের প্রতি ২০০ মিটার অম্তর আলো লাগানো হোক।
২) বাঁধে ঢোকার ৪টে পথে বিকেল থেকেই স্থায়ী নজরদারির ব্যবস্থা হোক।
৩) বাঁধে নিয়মিত পুলিশি টহলদারি সুনিশ্চিত করতে স্থায়ী পুলিশ চৌকি।
৪) নিয়মিত সাদা পোশাকে পুলিশি টহলদারি।
৫) মনোরম পরিবেশের কারণে বাঁধে ইকো পার্ক তৈরি করতে চেয়ে প্রশাসনকে প্রস্তাব পুরসভার। এতে বাঁধের পরিবেশ আমূল বদলে যাবে, দাবি পুরসভার।
প্রশাসনের গৃহীত পদক্ষেপ
১) বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত বাঁধের প্রবেশ পথে পুলিশ কর্মী মোতায়েন।
২) কোতোয়ালি থানার মোবাইল ভ্যানের নজরদারি।
৩) পুরসভাকে বাঁধে আলো লাগানো সহ ঝোপজঙ্গল সাফ করার প্রস্তাব।
৪) বিকেলের পরে বাঁধে মোটর বাইক এবং গাড়ির নম্বর নোট করছে পুলিশ।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.