সাড়ে তিন মাস পর ফের মোহনবাগান আক্রমণে দেখা যাবে টোলগে-ওডাফা জুটিকে। চার কোটির দুই বিদেশি স্ট্রাইকার পারবেন কি নির্বাসন-উত্তর মোহনবাগানে প্রথম জয় এনে দিতে? সামনে যে সন্তোষ কাশ্যপ। কল্যাণীতে এ দিন অনুশীলনের পর যিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, “টোলগে-ওডাফা যুগলবন্দির কিছু রহস্য আমারও জানা।”
তেরো ম্যাচে জয় চাই ন’টা। কিন্তু সালগাওকরের কাছে গোয়ার মাঠে হারের পর তিন পয়েন্ট আসেনি আনোয়ার, র্যান্টিদের বিরুদ্ধেও। এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার কল্যাণী পুরসভার মাঠে নবিদের সামনে সন্তোষ কাশ্যপের ওএনজিসি। যাদের বিরুদ্ধে সবুজ-মেরুন শিবির শেষ জয় পেয়েছে পাক্কা দু’বছর আগে। ২০১১ সালের ১৮ জানুয়ারি। মাত্র তিন মাস আগে ব্যর্থতার স্টিকার গায়ে সেঁটে গঙ্গাপারের তাঁবু থেকে ফিরে যেতে হয়েছিল সন্তোষকে। এ বার চোট-আঘাত কিংবা কার্ড সমস্যা না থাকা চনমনে দল নিয়ে নবিদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ার পালা তাঁর। |
মোহনবাগান ম্যাচ কি নিজেকে প্রমাণ করার জন্য বাড়তি তাগিদের? টেলিফোনে ‘মুম্বইয়ের কৃশানু’ সন্তোষ বলছেন, “কীসের প্রমাণ? অবনমনের আওতায় থাকা দলকে সাত নম্বরে নিয়ে এসেছি। মোহনবাগান বরং রেলিগেশন জোনে থাকায় চাপে রয়েছে।”
বছর দশেক আগে হলে ওএনজিসি কোচের এই মন্তব্যের পর মাঠে নেমে বাড়তি অ্যাড্রিনালিন ক্ষরণ হত সবুজ-মেরুন জার্সিধারীদের। কিন্তু এখন ‘জমানা বদল গয়া’। প্রতিকূলতার সাপ-লুডোতে ‘অপারেশন সাসপেনশন’ এড়ানো গিয়েছে। আই লিগের সরণিতে হাঁ করে বসে আছে ‘রেলিগেশন’-এর অজগর।
হঠাৎ ‘বিনয়ী’ মোহনবাগান কোচ করিম বেঞ্চারিফা তাই বলছেন, “ওএনজিসি-র হারানোর কিছু নেই। সব চাপ আমাদের। জিততে হবেই। তা হলেই সব চাপ কেটে যাবে।”
নিউ ইয়র্ক থেকে নলহাটির মোহনবাগান সমর্থকদের মাথার ওপর পাহাড় প্রমাণ চাপ সরাতে বিতর্কিত সেই ডার্বি ম্যাচের পর শুক্রবারই ফের মাঠে নামছেন ওডাফা ওকোলি। ফলে বিপক্ষকে উড়িয়ে দেওয়ার জন্য সেই টোলগে-ওডাফা জুটি আক্রমণে। কিন্তু চার কোটির ফরোয়ার্ড লাইন তো গোটা মরসুম মাঝমাঠ থেকে বল না আসার ‘অ্যানিমিয়া’-য় আক্রান্ত। সেই অসুবিধা তাড়াতে করিমের ভরসা নামিবিয়া থেকে আসা চতুর্থ বিদেশি কুইন্টন জেকবস। যিনি ইউনাইটেড স্পোর্টসের বিরুদ্ধে নবি-টোলগেকে মাঝমাঠ থেকে বেশ কিছু ঠিকানা লেখা বল বাড়িয়ে সেই অ্যানিমিয়ার আয়রন ট্যাবলেট হিসাবে দেখা টিম ম্যানেজমেন্টের কাছে। মোহনবাগান শিবিরের খবর, কুইন্টনের কুঁচকির চোট সেরে গিয়েছে। শুক্রবার তাঁর প্রথম দলে থাকার সম্ভাবনাই বেশি। কুইন্টন খেললে সে ক্ষেত্রে নির্মল-খেলেম্বা-আইবর এবং নবির ভারতীয় রক্ষণ নিয়েই কাতসুমি-যতীনদের বিরুদ্ধে লড়তে হবে বাগানের মরক্কান কোচকে। আক্রমণাত্মক মেজাজে মোহনবাগানের মাইকেল এসিয়েন নবি বলছেন, “কাল ওডাফা নামছে। এটাই আমাদের প্লাস পয়েন্ট।” করিমের লক্ষ্য একটাই, আক্রমণাত্মক খেলে যেন তেন প্রকারে চাই তিন পয়েন্ট। ‘হাম ভি হ্যায় জোশ মে’ মার্কা এই পরিস্থিতিতেও ম্যাচের চব্বিশ ঘণ্টা আগে সমস্যামুক্ত নয় সবুজ-মেরুন শিবির। ইউনাইটেড স্পোর্টস ম্যাচে চোট পাওয়ায় গোলে নেই অরিন্দম ভট্টাচার্য। তাঁর জায়গায় শিল্টনকে রেখেই কল্যাণীতে প্রথম তিন পয়েন্ট পাওয়ার নকশা আঁকছেন করিম।
|
শুক্রবার আই লিগে
• মোহনবাগান-ওএনজিসি (কল্যাণী, ২-০০)
• স্পোর্টিং ক্লুব দ্য গোয়া-চার্চিল ব্রাদার্স।
|
ডার্বিতে ইতিহাস, নিরাপত্তা অফিসার পাঠাচ্ছে এআইএফএফ
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
আগের ডার্বি ভেস্তে গিয়েছে নিরাপত্তার প্রশ্নে। ৯ ফেব্রুয়ারি আই লিগে মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল ফিরতি ম্যাচের আগে সেই লড়াই ঘিরে ইতিহাস গড়ে ফেলল এআইএফএফ। নিরাপত্তা অফিসার পাঠিয়ে ডার্বির যাবতীয় ব্যবস্থাপনা দেখে নেওয়ার সিদ্ধান্ত ফেডারেশন নিয়েছে। যা ভারতীয় ফুটবলে নজিরবিহীন। এ জন্য বড় ম্যাচের দু’দিন আগে ৭ তারিখ প্রাক্তন পুলিশ কর্তা এবং বর্তমানে মণিপুর ফুটবল সংস্থার প্রেসিডেন্ট বি কে রোকা-কে কলকাতায় পাঠানো হচ্ছে। আসন্ন ডার্বির আয়োজক মোহনবাগান। যারা প্রথম ডার্বি যুবভারতীতে নিরাপত্তা নেই অভিযোগে দ্বিতীয়ার্ধে আর খেলেনি। চাকরিজীবনে ডিজি পদে থাকা রোকা মোহনবাগান কর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন, যুবভারতী ঘুরে দেখবেন, প্রয়োজনে স্থানীয় নিরাপত্তা বাহিনীর (অর্থাৎ বিধাননগর পুলিশ) সঙ্গেও কথা বলবেন। ফেডারেশন রোকার রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রয়োজনে বড় ম্যাচের নিরাপত্তা ব্যবস্থা কোনও নিরাপত্তা এজেন্সির হাতেও দিতে পারে। |