ঝোপঝাড়ে বোঝাই এক চিলতে জমি। গজ বিশেক বিস্তৃতি। নিম্ন বুনিয়াদি স্কুল আর সভাস্থলের মাঝে ব্যবধান এইটুকুই। শেয়ালকাঁটায় ছেয়ে থাকা মাঠে বাঁশের খাঁচায় পর পর সতেরোটা মাইক। স্কুলের দিকেই তাক করা। সকাল থেকেই ‘হ্যালো মাইক টেস্টিং...’।
রেজিনগর উপনিবার্চনে তৃণমূল প্রার্থীর সভায় সকাল থেকেই এই প্রস্তুতির ঠেলায় বৃহস্পতিবার মানিক কোহার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্লাস শুরু করেও শেষ করা যায়নি। স্কুলের বারান্দায় গ্রিল আঁকড়ে তারা শুনল তৃণমূলের
নির্বাচনী সভা। |
রেজিনগর উপনির্বাচনে এ দিন ছিল তৃণমূল প্রার্থী, সদ্য মন্ত্রীত্ব পাওয়া হুমায়ুন কবীরের প্রচারসভা। দুপুরে সেখানে আসেন দলীয় সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী। পৌনে এগারোটায় স্কুল শুরু হলেও মিনিট পনেরোর মধ্যেই তা পণ্ড হয়ে যায়। রেজিনগরের প্রান্তিক গ্রাম এনায়েৎপাড়ার ওই স্কুলের প্রধানশিক্ষক সনাতন মণ্ডল বলেন, “কী করব বলুন। যা দেখার তো আপনারাই দেখছেন। এ অবস্থায় স্কুল চালানো যায়!”
সাংসদের নিরাপত্তার জন্য সেখানে আগের দিন রাত থেকেই থানা গেড়েছিলেন অন্তত জনা পনেরো পুলিশকর্মী। কেন? জেলা পুলিশ কর্তারা নির্বিকার গলায় জানান, এ ছাড়া আর জায়গা কোথায়?
স্কুলের গায়ে সভা করার অনুমোদন কে দিল? জেলা প্রাথমিক স্কুল সংসদের চেয়ারম্যান সাগির হোসেন বলেন, “অনুমতি তো দেবে পুলিশ। তবে এ ব্যাপারে আমাকে কেউ কোনও অভিযোগ জানাননি।” সনাতনবাবু বলেন, “অভিযোগ জানিয়ে আমি আর শাসকদলের কোপে পড়তে চাইনি।” জেলাপুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীরও দায় ঠেলে দিয়েছেন স্থানীয় মহকুমাশাসক অধীর বিশ্বাসের দিকে। তিনি বলেন, “অনুমতি তো দিয়েছেন মহকুমাশাসক।” আর অধীরবাবুর কথায়, “পুলিশ যদি ওই মাঠেই সভা করার সুপারিশ করে আমার কী করার আছে!” |