কলেজে বেনজির কাণ্ড
আঁচড়ে, কাপড় ছিঁড়ে হাতাহাতি শিক্ষিকাদের
ছাত্রীদের সামনেই হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়লেন কলেজ শিক্ষিকারা। এবং সেই হাতাহাতি এমনই যে, তা গড়াল হাসপাতাল পর্যন্ত। বৃহস্পতিবার এই ঘটনা ঘটেছে বেনিয়াপুকুরের মিল্লি আল আমিন কলেজে। বিবদমান দু’পক্ষ পুলিশের কাছে পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছে।
কলেজের দুই শিক্ষিকা বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় ও প্রবীণ কৌরের অভিযোগ, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষা সাবিনা নিশাত ওমর তাঁদের বেদম পিটিয়েছেন। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষার পাল্টা অভিযোগ, ওই দুই শিক্ষিকাই তাঁর উপরে চড়াও হন।
টিফিনের সময় ছাত্রীদের সামনেই শিক্ষিকাদের এই আচরণের পরে কলেজ আপাতত বন্ধ রাখা উচিত বলে মনে করছেন শিক্ষা প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত অনেকে। তাঁদের মতে, মহিলা কলেজে শিক্ষিকারা নিজেদের মধ্যে এ ভাবে মারামারি করছেন, নানা অশান্তির মধ্যেও এমন ঘটনা এ রাজ্যে এখনও বেশ বিরল।
ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষার সঙ্গে কলেজের তিন শিক্ষিকা বৈশাখীদেবী, প্রবীণদেবী ও জারিনা খাতুনের বিবাদ নতুন নয়। নভেম্বরেও তাঁদের মধ্যে এক দফা গোলমাল হয়। এ দিন কলেজে টিফিনের সময় নতুন করে গণ্ডগোল বাধে। হাতাহাতিতে সাবিনা, বৈশাখীদেবী ও প্রবীণদেবী আহত হন বলে অভিযোগ। দুই শিক্ষিকা চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা করান। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষা প্রথমে ওই হাসপাতালে চিকিৎসার পরে বেনিয়াপুকুরের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি হন।
এই শিক্ষিকার দাবি, তিনি আক্রান্ত। —নিজস্ব চিত্র
দুপুরে কলেজে গিয়ে দেখা যায়, ছাত্রীরা বেশ হতভম্ব। জায়গায় জায়গায় তাঁদের জটলা। ক্লাস হচ্ছে না? জবাবে ছাত্রীরা জানান, শিক্ষিকারা মারামারি করে হাসপাতালে গিয়েছেন। তাই ক্লাস হচ্ছে না। দু’-এক জন আংশিক সময়ের শিক্ষিকা মেয়েদের সামলানোর চেষ্টা করছেন।
বৈশাখীদেবী-সহ তিন শিক্ষিকা তখন চিত্তরঞ্জন হাসপাতালে। বৈশাখীদেবী বলেন, “জারিনার উদ্দেশে সাবিনা গালাগালি দিচ্ছিলেন। আমার চরিত্র নিয়ে বাজে কথা বলছিলেন। ওঁকে বলি, সব কথা মোবাইলে রেকর্ড করব। তা শুনে আমাকে মারতে শুরু করেন।
আঁচড়ে দেন, জামাকাপড় ছিঁড়ে দেন।” সম্প্রতি বৈশাখীদেবীর মেয়ে হয়েছে। তাঁর অভিযোগ, “আমার পেটে ঘুষি মেরেছেন সাবিনা।”
তবে কলেজের অধিকাংশ শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী, পরিচালন সমিতির সচিব মহম্মদ জাহাঙ্গিরের অভিযোগ, বৈশাখীদেবীর নেতৃত্বে কলেজের পরিবেশ নষ্ট করছেন ওই তিন জন। এ দিন তাঁরাই সাবিনাকে মেরেছেন। তাঁদের অভিযোগ, বৈশাখীদেবী নিজেই নিজের শাড়ি-জামা ছিঁড়ে, গায়ে মারধরের চিহ্ন তৈরি করে কলেজের দুর্নাম করছেন।
তৃণমূল সাংসদ সুলতান আহমেদ ওই কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি। ইতিপূর্বে কলেজে গোলমাল পাকানোর জন্য তিনি দায়ী করেছেন বৈশাখীদেবীকেই। সুলতান বলেন, “সমস্যাটা আইনশৃঙ্খলার। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষা নার্সিংহোমে। পরিচালন সমিতির জরুরি বৈঠক ডেকে এ বিষয়ে আলোচনা হবে।”
কিন্তু তাঁদের সামনে শিক্ষিকারা এ ভাবে মারামারি করলে ছাত্রীরা কী শিখবেন? এই অবস্থায় কলেজ খোলা রাখারই বা দরকার কী? পরিচালন সমিতির সচিব বলেন, “ছাত্রীদের কী দোষ? কলেজ বন্ধ রাখলে ওদের পড়াশোনার ক্ষতি হবে।” তৃণমূল কংগ্রেসের শিক্ষক সংগঠন ‘ওয়েবকুপা’ অবশ্য বৈশাখীদেবীদের পাশেই দাঁড়িয়েছে। ওই শিক্ষিকার ফোন পেয়ে চিত্তরঞ্জনে তাঁকে দেখতে যান সংগঠনের সভাপতি কৃষ্ণকলি বসু-সহ কয়েক জন। কৃষ্ণকলিদেবী বলেন, “সংগঠনগত ভাবে আমরা ওই তিন শিক্ষিকার পাশে আছি।”
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.