|
|
|
|
শীর্ষ মাও-নেতা সুশীল রায়ের হাজিরা পরোয়ানা প্রত্যাহার |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঝাড়গ্রাম |
বছর দু’য়েক আগে প্রবীণ মাওবাদী নেতা সুশীল রায়কে বেলপাহাড়ির পুরনো একটি নাশকতা ও খুনের মামলায় হাজির হওয়ার জন্য পরোয়ানা জারি করেছিল ঝাড়গ্রাম এসিজেএম আদালত। মাওবাদী সংগঠনের পলিটব্যুরো সদস্য সুশীলবাবু গুরুতর অসুস্থ। তাঁর পক্ষে ঝাড়গ্রাম আদালতে হাজির হওয়া সম্ভব নয় বলে বুধবার ঝাড়গ্রাম এসিজেএম আদালতে সুশীলবাবুর আইনজীবী কৌশিক সিংহ হাজিরা-পরোয়ানা ( প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট) প্রত্যাহারের আবেদন করেছিলেন। আবেদন মঞ্জুর করে সুশীলবাবুর বিরুদ্ধে জারি করা হাজিরা-পরোয়ানা প্রত্যাহার করে নিল আদালত।
২০০৫ সালের ২৩ মে রাষ্ট্রদ্রোহ, ষড়যন্ত্র, ও বেআইনি অস্ত্র মজুতের অভিযোগে বেলপাহাড়ির তামাজুড়ি থেকে সুশীলবাবুকে গ্রেফতারের দাবি করেছিল পুলিশ। ওই মামলায় ২০০৬ সালে সুশীলবাবুকে দোষী সাব্যস্ত করে তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় ঝাড়গ্রামের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালত। ওই বছরেই আলিপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে থাকাকালীন গিরিডির দু’টি মামলায় তদন্তের জন্য তাঁকে নিয়ে যায় ঝাড়খণ্ডের পুলিশ। ঝাড়খণ্ডের চাইবাসা জেলে থাকাকালীন অসুস্থ হয়ে পড়েন সুশীলবাবু। ইতিমধ্যে বেলপাহাড়ি, লালগড় ও শালবনির ৩টি মামলায় জামিন পান তিনি। ২০০৪ সালে বেলপাহাড়ির দলদলিতে ল্যান্ডমাইন ফাটিয়ে পুলিশের গাড়ি উড়িয়ে সাত পুলিশকর্মী-সহ ৮ জনের খুনের মামলায় সুশীলবাবু জামিন পেলেও তাঁর অনুপস্থিতিতে মামলাটির বিচার প্রক্রিয়া শুরুর কাজ ব্যহত হয়। ফলে ২০১০ সালের ২২ সেপ্টেম্বর সুশীলবাবুর বিরুদ্ধে হাজিরা-পরোয়ানা জারি করে ঝাড়গ্রাম এসিজেএম আদালত। সুশীলবাবুকে ঝাড়গ্রাম আদালতে হাজির করার জন্য চাইবাসার এসপি এবং সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষকে বেশ কয়েকবার ‘তাগিদপত্র’ (রিমাইন্ডার) পাঠান ঝাড়গ্রামের এসিজেএম। সুশীলবাবু আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন। গত বছর সেপ্টেম্বরে তাঁকে নয়াদিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্স-এ ভর্তি করানো হয়। এখনও সেখানে পুলিশ প্রহরায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন সুশীলবাবু।
এ দিন আদালতে সুশীলবাবুর আইনজীবী কৌশিক সিংহ বলেন, “আমার মক্কেল দুরারোগ্য কিডনির ক্যানসারে আক্রান্ত। তাঁর ডান কিডনিটি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। অস্ত্রোপচার করে মূত্রস্থলি বাদ দিতে হয়েছে। চাইবাসা জেলে থাকাকালীন পড়ে গিয়ে কোমরের হাড়ও ভেঙে গিয়েছে। বাম চোখটিও নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কোনও মতেই সুশীলবাবুর পক্ষে আদালতে হাজির হওয়া সম্ভব নয়।” সুশীলবাবুর বিরুদ্ধে জারি হওয়া হাজিরা-পরোয়ানা প্রত্যাহারের আবেদন জানান কৌশিকবাবু। বিচারক প্রিয়জিৎ চট্টোপাধ্যায় আবেদন মঞ্জুর করেন। বেলপাহাড়ির রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় সুশীলবাবু যাবজ্জীবন কারাবাসের সাজাপ্রাপ্ত হওয়া সত্ত্বেও তাঁর শারীরিক অবস্থার বিবেচনা করে ইতিপূর্বে ওই মামলায় তাঁকে জামিন দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। |
|
|
|
|
|