জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের একটি ভূগর্ভস্থ জলের পাইপ ফেটে যাওয়ায় ছ’দিন ধরে পানীয় জলের সঙ্কটে ভুগছেন চুঁচুড়ার কোদালিয়া-১ পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দারা। বুধবার হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভার পক্ষ থেকে ছ’টি জলের গাড়ি পাঠানো হলেও সমস্যা মেটেনি বলে দাবি করেছেন ওই পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, পঞ্চায়েতকে এ ব্যাপারে জানানো হলেও তারা উদ্যোগী হচ্ছে না। বুধবারই অবশ্য হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভার পক্ষ থেকে ওই এলাকায় ছ’টি জলের গাড়ি পাঠানো হয়। কিন্তু তাতে সমস্যা মেটেনি বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
পঞ্চায়েত ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের পরে ওই কোদালিয়া এলাকায় পানীয় জল সরবরাহ করা শুরু করে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর। তবে, বাড়ি বাড়ি জলের সংযোগ এখনও দেওয়া হয়নি। রাস্তার ধারে ট্যাপকলের মাধ্যমে দিনের নির্দিষ্ট সময়ে জল সরবরাহ করা হয়। সেই জলই পানীয় হিসেবে ব্যবহার করেন ওই পঞ্চায়েত এলাকার অধিকাংশ মানুষ। অবশ্য নলকূপও রয়েছে। কিন্তু তা প্রয়োজনের তুলনায় সংখ্যায় কম বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। গত শুক্রবার পল্লিশ্রী এলাকায় জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের একটি পাইপ ফেটে যাওয়াতেই বিপত্তি দেখা দেয়। দেবীপুর, কালীতলা, লেনিননগল-সহ প্রায় ২২টি এলাকায় বন্ধ হয়ে যায় জল সরবরাহ। সমস্যায় পড়েন কয়েক হাজার মানুষ। |
বুধবার লেনিননগরের বাসিন্দা, রিকশা-চালক ভজা প্রামাণিকের ক্ষোভ, “ছ’দিন ধরে জল পাচ্ছি না। কিন্তু পঞ্চায়েতের কোনও উদ্যোগই চোখে পড়ছে না। জল ছাড়া কি চলে? পুরসভা জলের গাড়ি পাঠিয়েছে। কিন্তু এতে সমস্যা মিটছে না। ওইটুকু জল কত মানুষ নেবেন?” রামমন্দিরের বাসিন্দা শম্পা রায়ও বলেন, “পঞ্চায়েত কী করছে কিছুই বুঝতে পারছি না। ছ’দিন পরে একটি জলের গাড়ি এল। কিন্তু জলকষ্ট যেমন ছিল, তেমনই রয়ে গিয়েছে।”
পাইপ ফাটার কারণেই যে জলকষ্ট দেখা দিয়েছে, তা মেনে নিয়েছেন পঞ্চায়েত প্রধান তৃণমূলের দেবাশিস চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “জল সরবরাহের দায়িত্ব জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের। আমরা ওই দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। তাড়াতাড়ি পাইপ মেরামতির অনুরোধ জানিয়েছি। যত দিন তা না হচ্ছে, তত দিন পুরসভাকে জল সরবরাহের ব্যবস্থা করতে অনুরোধ করেছি।”
জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, দ্রুত পাইপ মেরামতির চেষ্টা চালানো হচ্ছে। পাশাপাশি, গ্রামবাসীরা যাতে সারাদিন জল পান, তার জন্য পল্লিশ্রী এলাকাতেই একটি জলাধার নির্মাণ করা হচ্ছে। ওই দফতরের জেলা অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার সুস্মিত বাগচি বলেন, “পাইপ ফাটার কারণে জলের সমস্যা। আশা করি, কয়েক দিনের মধ্যে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।”
জলের পাইপ ফেটেছে শুক্রবার। কিন্তু হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভার পক্ষ থেকে জলের গাড়ি পাঠাতে ছ’দিন লেগে গেল কেন?
পুরপ্রধান তৃণমূলের গৌরীকান্ত মুখোপাধ্যায়ের দাবি, “দু’তিন দিন আগে পঞ্চায়েত সমস্যার কথা জানিয়েছে। বিয়েবাড়ির জন্য জলের গাড়ির অভাব থাকায় ওই এলাকায় জল সরবরাহ করা যায়নি। বুধবার ছ’টি গাড়ি পাঠানো হয়।” যত দিন না পাইপ মেরামতির পরে জল সরবরাহ স্বাভাবিক হচ্ছে, তত দিনই জলের গাড়ি পাঠানো হবে বলে আশ্বাসও দিয়েছেন পুরপ্রধান। |