|
|
|
|
নির্দেশ খাদ্যমন্ত্রীকে |
খাদ্য সুরক্ষা বিল দ্রুত রূপায়ণ চাইছেন সনিয়া |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
কেন্দ্রের প্রস্তাবিত খাদ্য সুরক্ষা বিল নিয়ে সরকারের অন্দরমহলে নানান ওজর-আপত্তি তুলে চলেছেন কৃষিমন্ত্রী শরদ পওয়ার। কিন্তু খাদ্যমন্ত্রী কে ভি টমাসকে ডেকে সনিয়া গাঁধী জানান, এ বিষয়ে কোনও কথা তিনি শুনবেন না। প্রস্তাবিত বিলটি নিয়ে এখনই মন্ত্রিসভার কাছে নোট পাঠাক খাদ্য মন্ত্রক। মন্ত্রিসভার অনুমোদনের পর সংসদের আসন্ন বাজেট অধিবেশনের প্রথমার্ধেই যেন বিলটি পাশ করানো হয়।
আগামী লোকসভা ভোটে খাদ্য সুরক্ষা আইনকে কংগ্রেস যে বড় অস্ত্র করতে চাইছে, সে ব্যাপারে আর কোনও রহস্য নেই। ১০০ দিন কাজের প্রকল্প রূপায়ণ করে গত লোকসভা ভোটে যে ফায়দা তুলেছিল কংগ্রেস, এ বার খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পকেও সে ভাবেই ব্যবহার করতে চান সনিয়া-রাহুল। তা ছাড়া লোকসভা ভোটের আগে কঠিন সংস্কার দাওয়াইয়ের সঙ্গে ভারসাম্য রক্ষার জন্যও সামাজিক দায়বদ্ধতার এই প্রকল্প রূপায়ণ জরুরি বলে মনে করেন তাঁরা।
কিন্তু ১০ জনপথ ঘনিষ্ঠ কংগ্রেসের এক নেতা জানান, সেই কৌশল আখেরে কতটা সফল হবে তা নিয়ে এখন চিন্তিত সনিয়া-রাহুল। কারণ, ২০০৯ সালে লোকসভা ভোটে যাওয়ার প্রায় দু’বছর আগে থেকে গোটা দেশে ১০০ দিন কাজের প্রকল্প শুরু হয়ে গিয়েছিল। সেই প্রকল্পের সুফল পেয়েছিলেন গ্রামের মানুষ। তুলনায় খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্প অনেক পিছিয়ে রয়েছে। বাজেট অধিবেশনে বিলটি পাশ হলেও লোকসভা ভোটের আগে তা সারা দেশে রূপায়ণের জন্য এক বছরও হাতে থাকবে না। আর সে জন্যই ধৈর্য হারাচ্ছেন সনিয়া-রাহুল। খাদ্যমন্ত্রী টমাসকে পরশু বাড়িতে ডেকে তাই সনিয়া জানিয়ে দেন, আর কোনও অজুহাত তিনি শুনতে নারাজ।
সরকারের একটি সূত্র অবশ্য বলছে, খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্প রূপায়ণ নিয়ে এখনও আপত্তি জানিয়ে চলেছেন কৃষিমন্ত্রী শরদ পওয়ার। পওয়ারের বক্তব্য, বিপুল সংখ্যক মানুষকে আইন করে খাদ্য সুরক্ষার নিশ্চয়তা দেওয়ার আগে দশ বার ভাবা উচিত। তা ছাড়া এ বছর যে খাদ্য উৎপাদন কম হতে পারে, তাও প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়কে জানিয়েছেন তিনি।
তবে টমাস-সহ কংগ্রেস নেতৃত্বের বক্তব্য, এর পরেও খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্প রূপায়ণ করতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। কারণ, গ্রামাঞ্চলের ৭৫ শতাংশ এবং শহরের ৫০ শতাংশ মানুষকে এই প্রকল্পের আওতায় এনে মাথাপিছু মাসে ৫ কেজি করে খাদ্যশস্য দিলে ৫.৬৮ কোটি টন খাদ্যশস্য দরকার। গত পাঁচ বছরে গড়ে ৬.০৪ কোটি টন খাদ্যশস্য সংগ্রহ করেছে সরকার।
কংগ্রেস নেতৃত্বের মতে, গরিব-ধনী পার্থক্য না করে দেশের প্রায় ৮০ কোটি মানুষকে দু’টাকা কিলো দরে গম ও তিন টাকা কিলো দরে চাল দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েলও শেষ পর্যন্ত যাঁদের প্রয়োজন, তাঁরাই এই সুবিধা নেবেন। ফলে খাদ্য সঙ্কটের আশঙ্কা অমূলক। বরং গরিব-বড়লোক বিভেদ না রাখায় বিতর্ক কম হবে। কে গরিব কে স্বচ্ছল, মাপতে গেলেই সমস্যা হতে পারত। তাতে কংগ্রেসের লক্ষ্যটাই ভেস্তে যেত। |
|
|
|
|
|