|
|
|
|
সন্দীপকে ঘিরেই ঘুরপাক খাচ্ছে ভোট রাজনীতি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • আগরতলা |
ভোটের আগে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সমীর বর্মনের ছেলে তথা বর্তমান প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সুদীপ রায়বর্মনের দাদা সন্দীপের গ্রেফতারি ও চাপের মুখে তাকে ছেড়ে দেওয়া নিয়ে ত্রিপুরার রাজ্য-রাজনীতিতে তীব্র টানাপোড়েন শুরু হয়ে গেল। প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের অভিযোগ, ভোটের আগে কংগ্রেসের ভাবমূর্তি কালিমালিপ্ত করতেই সন্দীপ রায়বর্মনকে ঘিরে শাসক বামফ্রন্টের অঙ্গুলি হেলনে ষড়যন্ত্র রচনা করা হয়েছে। অন্য দিকে, সিপিএম এই ঘটনাটিকে সামনে রেখে এখন রাজ্য জুড়ে প্রচারে নেমে পড়েছে।
২৬ জানুয়ারি জিরানিয়ার একটি ইটভাটা থেকে পুলিশ সন্দীপবাবু ও আরও দু’জনকে গ্রেফতার করে। পুলিশ তখনই জানায়, সন্দীপবাবুদের কাছ থেকে বেআইনি অস্ত্র ও বিদেশি টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। সেই রাতেই জিরানিয়া থানায় কংগ্রেস কর্মীরা বিক্ষোভ দেখায়। অস্ত্র আইনে মামলা রুজু হওয়া সত্ত্বেও থানা থেকেই পুলিশ সন্দীপবাবুকে ব্যক্তিগত জামিনে ছেড়ে দিয়ে তখনকার মতো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। যদিও তারই সঙ্গে ধৃত এক ব্যক্তিকে আদালত পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেয়। কংগ্রেসিরা আগরতলায় মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনেও বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।
সিপিএমের মুখপাত্র গৌতম দাস বলেন, সন্দীপ রায়বর্মণকে ‘অস্ত্র আইনে’ গ্রেফতার করার পরও পুলিশ চাপের মুখে ছেড়ে দিয়ে ‘ভুল’ করেছে। তাঁকে আবার গ্রেফতার করে সমস্ত বিষয়টি তদন্ত করার জন্য আবেদন জানিয়েছে সিপিএম। এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে গৌতমবাবু জানান। সন্দীপ রায়বর্মনের গ্রেফতারের ঘটনা সিপিএমের ‘সাজানো ঘটনা’ বলে কংগ্রেস যে প্রচার করছে তারও প্রতিবাদ করেছেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, ‘‘কংগ্রেসের ষড়যন্ত্র ধরা পড়তেই সিপিএমকে কাঠগড়ায় তোলা হচ্ছে।’’ গৌতমবাবুর বক্তব্য, রাজ্যে নির্বাচনী প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে প্রশাসনের দায় ভার নির্বাচন কমিশনের।
সন্দীপের গ্রেফতারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সে দিন আগরতলায় মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনের সামনে যে ভাবে কংগ্রেস কর্মী, সমর্থকরা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন, জিরানিয়া থানায় ইটপাটকেল ছুড়েছেন, পুলিশকে হুমকি দেওয়া হয়েছে তার নিন্দায় এবং ঘটনার তদন্তের দাবিতে আজ সিপিএম আগরতলায় বিক্ষোভ মিছিল বার করে। গৌতমবাবুর আশঙ্কা, ‘‘এ ভাবে চলতে থাকলে রাজ্যে শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পরিবেশ বিঘ্নিত হবে।’’
পাশাপাশি, প্রদেশ কংগ্রেসের মুখপাত্র অশোক সিন্হা আজ সাংবাদিকদের বলেন, “হাওয়া ভাল নয় বুঝতে পেরেই সিপিএম ব্যক্তিগত কুৎসা, রাজনৈতিক চরিত্রহননে নেমেছে। সন্দীপ রায়বর্মনের ঘটনাই তার প্রমাণ।” শাসক ব্যমফ্রন্টকে চ্যালেঞ্জ করে কংগ্রেস নেতৃত্বের বক্তব্য, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সুদীপ রায়বর্মণের দাদা সন্দীপকে ‘বেআইনি অস্ত্র’ রাখার অভিযোগে পুলিশ যে ভাবে গ্রেফতার করে পরে জামিনে ছেড়ে দেয়, তাতেই প্রমাণ হয় মামলাটি সাজানো। না হলে জামিন অযোগ্য ধারায় গ্রেফতার করে পুলিশ কী করে থানা থেকেই তাঁকে জামিন দিয়ে দেয়? প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের বক্তব্য, ‘‘কংগ্রেসের বিরুদ্ধে এই চক্রান্তে আসাম রাইফেলস, রাজ্য পুলিশের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে সিপিএম। রাজ্যে ভোটের আগে পরিকল্পিত ভাবে কংগ্রসের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত সিপিএম।”
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অবশ্য তাঁর ভাইয়ের প্রসঙ্গে সরাসরি মুখ খোলেননি। তবে আজ এক ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে রাজ্যবাসীকে এক নতুন ত্রিপুরার আশ্বাস দেন। বলেন, “সেখানে ষড়যন্ত্র থাকবে না, দলীয় সন্ত্রাসও থাকবে না।” |
|
|
|
|
|