|
|
|
|
স্পষ্ট না গোর্খাল্যান্ডে |
সময় কিনতে পৃথক তেলেঙ্গানায় সায় কংগ্রেসের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
ঘরে-বাইরে প্রবল চাপের মুখে কংগ্রেস আজ জানাল, তারা পৃথক তেলেঙ্গানা রাজ্য গঠনের পক্ষেই। কংগ্রেসের এই দলীয় অবস্থান নিয়ে কারও সংশয় থাকা উচিত নয়। কিন্তু কংগ্রেস নেতৃত্বের বক্তব্য, পৃথক রাজ্য গঠনের প্রক্রিয়া সহজ নয়। সাংবিধানিক অনেক খুঁটিনাটি বিষয়ে নজর রাখতে হয় এর জন্য। সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করাও জরুরি। তাই সরকারের চূড়ান্ত ঘোষণা করতে সময় লাগছে। তবে গোর্খাল্যান্ডের দাবিটি এ দিনও ফের স্পষ্ট ভাষায় খারিজ করে দিয়েছে কংগ্রেস।
আপাত ভাবে এই ঘোষণা শুনতে যতটা সহজ ও সরল লাগছে, আদতে তা নয় বলেই মনে করছেন বিভিন্ন দলের নেতারা। কংগ্রেস শীর্ষ সূত্রেও বলা হচ্ছে, এই ঘোষণা কৌশলগত। এই কথা বলে আরও সময় কিনতে চাইছে দল ও সরকার। বিশেষত এমন একটা সময় এই ঘোষণা করা হল, যখন তেলেঙ্গানার সাত কংগ্রেস সাংসদ লোকসভা থেকে ইস্তফার হুমকি দিয়ে সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে সাক্ষাতের সময় চাইছেন, ইস্তফার হুমকি দিচ্ছেন তেলেঙ্গানার কংগ্রেস বিধায়করাও। এর ফলে রাজ্য ও কেন্দ্রে অস্থিরতার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে তেলেঙ্গানার আগুনকে আপাতত শান্ত করতেই হাইকম্যান্ড শেষ পর্যন্ত এই কৌশল নিয়েছে বলে ঘরোয়া আলোচনায় জানান কংগ্রেস নেতারা। তাতে কাজ হয়েছে ইতিমধ্যেই। শীর্ষ নেতৃত্বের আশ্বাস পেয়ে তেলেঙ্গানার কংগ্রেস সাংসদরা রাতেই ইস্তফার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নেন।
তেলেঙ্গানার ব্যাপারে সবুজ সঙ্কেত দেখালেও পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবির সামনে কোনও নমনীয়তা দেখাতে রাজি নয় কংগ্রেস। জয়পুরের চিন্তন শিবিরেই রাজ্য নেতারা জানিয়েছিলেন, পশ্চিমবঙ্গ ভাগ করা চলবে না। আর আজ কংগ্রেস মুখপাত্র পি সি চাকো বলেন, “গোর্খাল্যান্ড সংক্রান্ত দাবিগুলি নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে ইতিমধ্যেই একটা নিষ্পত্তি হয়ে গিয়েছে। এ ব্যাপারে আর নতুন কিছু হওয়ার নেই। পরিস্থিতি অশান্ত হলে সরকার প্রয়োজনে আলোচনায় বসবে।”
কংগ্রেস সদর দফতরে সাংবাদিক বৈঠকে চাকো বলেন, “কংগ্রেস পৃথক তেলেঙ্গানা রাজ্য গঠনের পক্ষে।” চাকোর এই মন্তব্য শুনে কার্যত সকলেই বিস্মিত হন। কারণ, সাম্প্রতিক কালে তেলেঙ্গানা প্রশ্নে কংগ্রেসের অবস্থান জানতে চাওয়া হলে দলীয় নেতারা বারবার তা এড়িয়ে গিয়েছেন। তাই চাকোকে ফের প্রশ্ন করা হলে জবাবে তিনি বলেন, “যা বলেছি ভেবে চিন্তেই বলেছি। এটাই দলের অবস্থান।” কিন্তু পরক্ষণেই তিনি এ-ও জানিয়ে দেন যে, সব পক্ষকেই ধৈর্য ধরতে হবে। প্রক্রিয়াগত কারণেই পৃথক রাজ্য গঠনে আরও সময় লাগবে।
দলের এক শীর্ষ নেতা পরে বলেন, পৃথক রাজ্যের দাবিতে বিক্ষোভের কারণে তেলেঙ্গানা পরিস্থিতির ক্রমাগত অবনতি হচ্ছিল। টিআরএস নেতা চন্দ্রশেখর রাও সুযোগ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ ও কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতাদের গালমন্দ করতেও বাকি রাখছেন না। তাই কংগ্রেস সদর দফতর থেকে এই বার্তা দেওয়া জরুরি ছিল। এই ঘোষণার পরে যা করার তা বাজেট অধিবেশনের পরে করা হবে। নয়তো বাজেট অধিবেশনের আগেই দেশে পৃথক রাজ্যের দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়ে যাবে। যেমন শুরু হয়েছে গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে। আগামী লোকসভা ভোটের আগে এটাই শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেট অধিবেশন। একে ঘিরে মনমোহন সরকারের পরিকল্পনা যাতে ভেস্তে না যায়, তাই বিশেষ সতর্কতা।
কংগ্রেসের ওই নেতা এ-ও জানান, বাজেট অধিবেশনের পর পৃথক তেলেঙ্গানা রাজ্য গঠনের ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক ঘোষণার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ, লোকসভা ভোটের আগে পৃথক রাজ্য গঠনের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে তেলেঙ্গানায় কংগ্রেসের রাজনৈতিক জমি ধরে রাখার পক্ষে দাবি বাড়ছে। দলের সদর দফতর থেকে আজকের ঘোষণার পর স্বাভাবিক ভাবেই সেই সম্ভাবনা আরও বেড়ে গেল।
|
তেলেঙ্গানার দাবিতে ফের আত্মহত্যা |
সংবাদসংস্থা • হায়দরাবাদ |
পৃথক তেলেঙ্গানার দাবিতে ফের হায়দরাবাদে আত্মঘাতী হলেন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্র। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত ছাত্রের নাম এন দীনেশ চন্দ্র। টিআরএস প্রধান কে চন্দ্রশেখরের উদ্দেশে একটি সুইসাইড নোটে পৃথক রাজ্য গঠনের প্রক্রিয়ায় বন্ধ বা ধর্মঘটের রাজনীতি এড়িয়ে চলার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি। |
|
|
|
|
|