|
|
|
|
মোদীর সঙ্গে কথা বলেই সংগঠন সাজাচ্ছেন রাজনাথ |
দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায় • নয়াদিল্লি |
রাহুল গাঁধী যখন ফেব্রুয়ারি থেকেই রাজ্যওয়াড়ি সফর শুরু করছেন, বিভিন্ন রাজ্যের সংগঠনকে ঢেলে সাজতে উদ্যোগী হলেন নতুন বিজেপি সভাপতি রাজনাথ সিংহ। আর লোকসভায় বিজেপির সম্ভাব্য মুখ নরেন্দ্র মোদীও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন এ কাজে।
সভাপতি পদের দায়িত্ব নিয়েই রাজনাথ জানিয়েছেন, নির্বাচনের আগে সংগঠন মজবুত করাই তাঁর প্রধান লক্ষ্য। নিতিন গডকড়ী ১৮টি রাজ্যে সাংগঠনিক নির্বাচন করে গিয়েছেন বটে, কিন্তু তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যগুলিই বাদ পড়েছে। দিল্লি, গুজরাত, রাজস্থানের মতো বড় রাজ্যগুলিতে নির্বাচন হওয়া এখনও বাকি। নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গেও রাজনাথের সংগঠন বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। রাজনাথ আলোচনা করছেন দলের অন্য নেতাদের সঙ্গেও। আজই সুষমা স্বরাজের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। সঙ্ঘ নেতৃত্বের সঙ্গেও পরামর্শ করছেন।
এর আগে রাজনাথ সভাপতি থাকাকালীন বসুন্ধরা রাজে সিন্ধিয়ার সঙ্গে তাঁর বিবাদ বাধে। গডকড়ী এসে সেই সঙ্কট মেটান। এ বছরের শেষে রাজস্থানে ভোট। বসুন্ধরা চাইছেন, শুধু মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তাঁকে তুলে ধরা নয়, রাজ্য সভাপতির দায়িত্বও তাঁর হাতে দেওয়া হোক। এ বার সভাপতি হয়ে রাজনাথ বসুন্ধরার সঙ্গে পুরনো বিবাদ মিটিয়ে ফেলতে চাইছেন। কিন্তু বসুন্ধরা তাঁর দাবি মানানোর জন্য কাল মোদীর দ্বারস্থ হয়েছিলেন। গুজরাতের গাঁধীনগরে মোদীর বাসভবনে প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে উভয়ের আলোচনা চলে।
গুজরাতেও সভাপতি বদল করতে হবে। জাতীয় রাজনীতিতে নিজের গুরুত্ব বাড়লে গুজরাতের সংগঠন যোগ্য হাতে তুলে দিতে চান মোদী। সেই বিষয়েও রাজনাথের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। বিহারে সাম্প্রতিক নির্বাচনে সি পি ঠাকুরকে সরিয়ে মঙ্গল পাণ্ডেকে সভাপতি করা হয়েছে। সি পি ঠাকুর মোদী-ঘনিষ্ঠ। মোদীকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী ঘোষণা করার অন্যতম দাবিদার তিনিও। সেখানেও কোনও ফের বদলের সম্ভাবনা রয়েছে কি না, খতিয়ে দেখছেন রাজনাথ। তবে যে ভাবে শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক আলোচনা ছাড়াই মোদীর প্রধানমন্ত্রিত্বের পক্ষে সওয়াল শুরু হয়েছে, তাতে লাগাম কষতে চান বিজেপির নতুন সভাপতি। তিনি আজ বলেছেন, “দলে সকলের একসঙ্গে কাজ করা উচিত। যে ভাবে নরেন্দ্র মোদীকে প্রধানমন্ত্রী করার দাবি উঠছে, তাতে সংযম বজায় রাখা উচিত।”
দলের মধ্য থেকে এই প্রকাশ্য দাবিতে রাশ টানার পিছনে যুক্তি একটাই, এখনও সংগঠন ঢেলে সাজানোর অবকাশ পাননি রাজনাথ, এনডিএ-র শরিকদের সঙ্গেও কথা হয়নি, তার আগেই অন্য বিতর্ক মাথাচাড়া দিচ্ছে। মোদীর নাম প্রকাশ্যে আনায় শরিক জেডি(ইউ) অসন্তুষ্ট হচ্ছে, আবার শিবসেনা সুষমা স্বরাজের নাম তুলে আনছে। আবার আজই এনডিএ-র আর এক পুরনো শরিক শিরোমণি অকালি দলের নেতা সুখবীর সিংহ বাদলও প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মোদীর নাম সুপারিশ করেছেন। দলের অনেকে মনে করছেন, মোদীই বাদলকে দিয়ে নিজের নাম তুলিয়ে চাপ সৃষ্টির কৌশল নিয়েছেন। রাজনাথ চান আপাতত এই বিতর্কে ইতি পড়ুক।
বিজেপির এক শীর্ষ নেতার কথায়, ভোট যত এগিয়ে আসবে, সমীকরণ অনেক বদলাবে। আজই রাজ ঠাকরের সঙ্গে হাত মেলানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন বালাসাহেব-পুত্র উদ্ধব। রাজনাথ জানেন, প্রথমে তাঁকে কর্নাটক, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ়, রাজস্থান, দিল্লির মতো নির্বাচনমুখী রাজ্যগুলির সমস্যাগুলি মেটাতে হবে। তার পরে তাঁকে পা বাড়াতে হবে গোটা দেশে ক্ষমতা দখলের জন্য। |
|
|
|
|
|