|
|
|
|
গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ঠেকাতে রাজ্য সফরে বেরোবেন রাহুল |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
এক দিকে সাংগঠনিক রদবদল, অন্য দিকে রাজ্যে রাজ্যে সফর কংগ্রেস সহ-সভাপতি হওয়ার পরে এ ভাবেই নিজের ইনিংস শুরু করতে চাইছেন রাহুল গাঁধী।
আঞ্চলিক নেতৃত্বের অভাব ও সাংগঠনিক ব্যর্থতার কারণে একের পর এক রাজ্যে কংগ্রেসের জমি হারানোর ছবিটা রাহুলের সামনে স্পষ্ট। তাই দলের রাশ হাতে নিয়ে সেই ক্ষত মেরামতকেই অগ্রাধিকার দিতে চাইছেন তিনি।
রাহুলের ঘনিষ্ঠ সূত্রে বলা হচ্ছে, রদবদলের মাধ্যমে দলের কেন্দ্রীয় সংগঠনকে আরও কার্যকরী করে তুলতে চাইছেন তিনি। পাশাপাশি, কড়া হাতে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব দমন করে আঞ্চলিক নেতৃত্বকে মজবুত করার লক্ষ্যও তাঁর রয়েছে। এ বছর যে সব রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন হবে, তার মধ্যে কর্নাটক, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তীসগঢ় গুরুত্বপূর্ণ। আগামী মাস থেকে এই রাজ্যগুলিতে ধারাবাহিক সফর করবেন রাহুল।
জয়পুরের চিন্তন শিবিরে সহ-সভাপতি মনোনীত হওয়ার পর গত বুধবার কংগ্রেস সদর দফতরে এসে দলীয় কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন রাহুল। আগামী কাল ফের কংগ্রেসের সম্পাদক ও বিভিন্ন রাজ্যের ভারপ্রাপ্ত নেতাদের বৈঠকে ডেকেছেন তিনি। কংগ্রেস সূত্রে বলা হচ্ছে, সাংগঠনিক পুনর্গঠনের ব্যাপারে এই বৈঠকেই ইঙ্গিত দিতে পারেন রাহুল।
তবে সংগঠনকে কার্যকরী করে তুলতে প্রবীণদের সবাইকে যে সরিয়ে দেওয়া হবে, তা কিন্তু নয়। কয়েক জন বর্ষীয়ান নেতাকে সরিয়ে জিতেন্দ্র সিংহ, মীনাক্ষী নটরাজন, অশোক তাওয়ারের মতো তুলনামূলক ভাবে নবীন নেতাদের বড় দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। পাশাপাশি, মোহন প্রকাশ, গুলচ্যান সিংহ চড়ক, মধুসূদন মিস্ত্রির মতো কিছু নেতাকে এআইসিসি-র তরফে রাজ্যের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিতে পারেন রাহুল।
এই সাংগঠনিক রদবদলের পরেই রাজ্য সফরে বেরোতে চাইছেন রাহুল। তাঁর এক ঘনিষ্ঠ নেতা জানান, রাজস্থানের বারমের থেকে সফর শুরু করতে পারেন রাহুল। এই রাজ্য সফরে দলের হয়ে প্রচার নয়, রাজ্যস্তরে নেতৃত্বের জটিলতা কাটানোই তাঁর লক্ষ্য। কারণ, সম্প্রতি একাধিক রাজ্যের নির্বাচনে দেখা গিয়েছে, নেতৃত্ব নিয়ে সঙ্কট ও সংশয় থাকলেই কংগ্রেস ধরাশায়ী হয়েছে।
রাজস্থানে এই মুহূর্তে কংগ্রেস ক্ষমতায়। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌতের বিরুদ্ধে দলেরই একাংশ সক্রিয়। সেই রেষারেষি বন্ধে জোর দেবেন রাহুল। পাশাপাশি মধ্যপ্রদেশ ও কর্নাটকেও নেতৃত্ব নিয়ে সংশয় দূর করতে চাইবেন তিনি। এই দুই রাজ্যেই কংগ্রেসে নেতার অভাব নেই। মধ্যপ্রদেশে যেমন দিগ্বিজয় সিংহ, কমল নাথ, জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া, সুরেশ পচৌরির মতো নেতারা রয়েছেন, তেমনই কর্নাটকে এস এম কৃষ্ণ, মল্লিকার্জুন খার্গে, সিদ্দারামাইয়া, বি কে হরিপ্রসাদের মতো নেতা রয়েছেন।
কিন্তু এঁরা পারস্পরিক রেষারেষি ও কলহ নিয়েই ব্যস্ত। এই কলহ বন্ধ করতে কড়া বার্তা দিতে চান রাহুল। মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে কাউকে তুলে ধরা না হলেও, কোনও এক জনকে এখন থেকেই নির্বাচন কমিটির প্রধানের দায়িত্ব দিতে চাইছেন তিনি।
তবে কংগ্রেসের এক কেন্দ্রীয় নেতার মতে, সনিয়া গাঁধী কংগ্রেসের দায়িত্ব নিয়ে এ ভাবেই দলে পরিবর্তন আনতে চেয়েছিলেন। কিন্তু কখনও পরিস্থিতির কারণে পারেননি, কখনও আবার দলের নেতারাই তাঁকে বিভ্রান্ত করেছেন। তাই রাহুলও শেষ পর্যন্ত কতটা সফল হবেন, তা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে। যদিও রাহুল নিয়মিত ভাবে রাজ্য সফর করলে বাস্তব পরিস্থিতি সম্পর্কে অনেক বেশি ওয়াকিবহাল থাকতে পারবেন বলে ওই নেতার অভিমত। |
|
|
|
|
|