ট্রামের সঙ্গে ঘষা, বাসযাত্রী হারালেন হাত
রেষারেষি চলছিল দু’টি বাসে। একটি ‘ওভারটেক’ করে এগিয়ে গেল। পিছনের বাসটি ততক্ষণে একটি ট্রামের সঙ্গে ঘষটাতে শুরু করেছে। আচমকা বাসে তীব্র আর্তনাদ। যাত্রীরা দেখতে পেলেন, এক যাত্রীর বাঁ হাত কনুই থেকে কেটে পড়ে গেল আসনের নীচে।
বুধবার বিকেল পৌনে পাঁচটায় শিয়ালদহের ঘটনা। পুলিশ জানায়, শ্যামবাজারমুখী বাস দু’টির রেষারেষি চলছিল শিয়ালদহ উড়ালপুল থেকেই। এপিসি রোড ও কাইজার স্ট্রিটের মোড়ের কাছে একটি বাস অন্যটিকে বাঁ দিকে চেপে দিলে সেটি রাজাবাজারমুখী ট্রামের গায়ে ঘষটাতে ঘষটাতে এগিয়ে যায় অন্তত কুড়ি ফুট। পুলিশ জানায়, রাজারহাটের দেওরার বাসিন্দা সুকুমার রায় (৪৫) বাসের বাঁ দিকে জানলার ধারে বসেছিলেন। তাঁর কনুইয়ের কিছুটা বাইরে বেরিয়ে ছিল। ঘষটানিতে বাঁ হাত কনুই থেকে কেটে বাসের ভিতরে পড়ে যায়।
হাসপাতালে সুকুমারবাবু। বুধবার। —নিজস্ব চিত্র
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, যাত্রীদের চিৎকারে ঘাবড়ে গিয়ে ৩০বি রুটের ওই বাসের চালক বাস থামিয়ে দেন। গুরুতর জখম সুকুমারবাবু ঢলে পড়েন। অধিকাংশ যাত্রী বাস থেকে পথে নেমে পড়েন। ডাকা হয় ট্রাফিক পুলিশকে। রেষারেষি করতে থাকা ৩০ডি রুটের অন্য বাসটি দ্রুত চলে যায়। শিয়ালদহ ট্রাফিক গার্ডের এক সার্জেন্ট এবং এলাকার কিছু বাসিন্দা সুকুমারবাবুকে এনআরএস হাসপাতালে নিয়ে যান। কাটা হাতটি নিয়ে হাসপাতালে যান বিনোদ সাউ নামে এক ভ্যানচালক। পুলিশ জানায়, রাত পৌনে আটটা পর্যন্ত সেখানেই ভর্তি ছিলেন সুকুমারবাবু। চিকিৎসকেরা জানান, এনআরএসে এ ধরনের অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা না থাকায় তাঁকে রাতেই পাঠানো হয় পিজিতে।
পুলিশ জানায়, ৩০বি রুটের বাসচালক গ্রেফতার হয়েছেন। ৩০ডি রুটের বাসচালকের খোঁজ চলছে।
এ দিন এনআরএসে গিয়ে দেখা যায়, ওটি-র সামনে উদ্বিগ্ন মুখে দাঁড়িয়ে সুকুমারবাবুর পরিজনেরা। তাঁর ভাগ্নে তরুণ সেনগুপ্ত জানান, নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারে একমাত্র রোজগেরে সুকুমারবাবু অর্ডিন্যান্স ফ্যাক্টরি বোর্ডে এক ঠিকাদারের অধীনে কাজ করেন। তাঁর একমাত্র মেয়ে এ বার মাধ্যমিক দেবে। এ দিন নেতাজি ইন্ডোরের সামনে থেকে ৩০বি রুটের বাসটিতে উঠেছিলেন সুকুমারবাবু।
২০০৯ সালের ২৫ অগস্ট এমনই একটি ঘটনা ঘটে ডাফরিন রোডে। স্বামী বরুণ চক্রবর্তীর সঙ্গে জয়শ্রী চক্রবর্তী যাচ্ছিলেন মিনিবাসে। বরুণবাবুর কোলে পাঁচ বছরের ছেলে শুভ। বিপরীতমুখী একটি বাস থেকে বেরিয়ে আসা লোহার পাত ঢুকে যায় মিনিবাসে। কেটে দেয় বরুণ, জয়শ্রী ও সামনের আসনে বসা আশিস পালের ডান হাতের প্রায় পুরোটা। রক্ষা পায় শুভ। চিকিৎসার পরে আশিসবাবু চলে যান অসমের বাড়িতে। ওই দুর্ঘটনায় সরকার ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দিয়েছিল। এ দিন বরুণবাবু বলেন, “সব রকম সহযোগিতার আশ্বাস মিলেছিল। কিন্তু মামলাও আর এগোলো না। সরকারি সাহায্যও পেলাম না।” জয়শ্রীদেবী বলেন, “অস্ত্রোপচারে ডান কাঁধেরও সামান্য বাদ দিতে হয়। এখনও পুঁজ বেরোয়। প্রচুর ওষুধ খেতে হয়েছে। সর্বদা লোকের উপরে নির্ভর করতে হয়।”
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.