জব কার্ড বিলি ঘিরে নির্বাচনী বিধিভঙ্গের নালিশ
রাজ্যের তিনটি বিধানসভা কেন্দ্রের উপ-নির্বাচনের জন্য ইতিমধ্যেই নির্বাচনী বিধি জারি হয়েছে। তারই মধ্যে নলহাটি বিধানসভা এলাকায় তৃণমূল পরিচালিত একটি পঞ্চায়েতের তরফে জব কার্ড বিলিকে কেন্দ্র করে বিতর্কের সৃষ্টি হল। বুধবার মুরারই ২ ব্লকের রুদ্রনগর পঞ্চায়েতের বোনহা গ্রামের ঘটনা।
এ ক্ষেত্রে বিরোধীরা ভোটারদের প্রভাবিত করার অভিযোগ তুললেও জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা তা মানতে চাননি। তিনি বলেন, “মহাত্মা গাঁধী জাতীয় কর্মসংস্থান প্রকল্পটি নির্বাচনী বিধির আওতাধীন নয়। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশাবলী আমাদের কাছে আছে।” জেলাশাসক এ কথা বললেও এলাকাবাসীর কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে মুরারই ২ ব্লকের বিডিও সোমনাথ পাল ওই জবকার্ড বিলি বন্ধ করার নির্দেশ দেন। তা নিয়ে জেলা প্রশাসনিক স্তরেও একপ্রস্থ বিতর্ক তৈরি হয়েছে। কার্ড বিলি বন্ধ করে দেওয়ার ক্ষেত্রে বিডিও-র যুক্তি, “আমি জানতাম নির্বাচনী বিধি জারি থাকার জন্য ওই কাজ করা যাবে না। তার জন্যই সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত প্রধানকে কার্ড বিলি বন্ধ করতে বলেছিলাম। পরে এ ব্যাপারে খোঁজ নেওয়ার জন্য ব্লক অফিস থেকে নির্বাচনী বিধির দায়িত্বে থাকা প্রতিনিধিদলও পাঠিয়েছি।” সোমনাথবাবুর এই যুক্তি অবশ্য খারিজ করে দিয়েছেন স্বয়ং জেলাশাসক। ওই বিডিও কেন এমন সিদ্ধান্ত নিলেন তা খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। পরে অবশ্য বিডিও নিজের ভুল স্বীকার করে বলেন, “আমার বুঝতে একটু ভুল হয়েছিল। তবে ওখানে যাতে কোনও গণ্ডগোল না হয়, তার জন্য আপাতত কার্ড বিলি বন্ধ করতে বলি।”
দেওয়ালে দেওয়ালে। জোরকদমে চলছে উপনির্বাচনের প্রচার। বুধবার তোল নিজস্ব চিত্র।
প্রশাসনের সূত্রে খবর, নলহাটি বিধানসভা কেন্দ্রের উপ-নির্বাচনের (আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি হবে) জন্য গত ১২ জানুয়ারিই নির্বাচনী বিধি জারি করে দিয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। কমিশনের নির্দেশে অবশ্য নির্বাচন ক্ষেত্র ছাড়া জেলার অন্য জায়গাগুলিতে নির্বাচনী বিধির হেরফের আছে। এ ছাড়াও ১০০ দিন কাজের প্রকল্প-সহ কয়েকটি উন্নয়নমূলক প্রকল্পের কাজের ক্ষেত্রে নির্বাচনী বিধিতে ছাড় দেওয়া হয়েছে। এ দিন মুরারই ২ ব্লকের রুদ্রনগর পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে বোনহা গ্রামে শ’ দেড়েক জবকার্ডধারীকে নতুন কার্ড বিলি করা হচ্ছিল। তা দেখতে পেয়ে এলাকাবাসীর একাংশ সংশ্লিষ্ট বিডিওকে অভিযোগ করেন। রুদ্রনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান খলিল মণ্ডল বলেন, “পুরনো জবকার্ড নতুন ভাবে বিলি করার জন্য সকালে বোনহা গ্রামে গিয়েছিলাম। সঙ্গে পঞ্চায়েত কর্মীরাও ছিলেন। কয়েকটি কার্ড বিলি হওয়ার পরই বিডিও-র ফোন পেয়ে তা বন্ধ করে দিই।”
বোনহা গ্রামেরই তৃণমূল কর্মী মেজাদ মণ্ডল বলেন, “পুরনো জবকার্ডধারীদের কাছ থেকে জবকার্ড জমা নিয়ে পঞ্চায়েতের খাজনা যাঁদের বাকি আছে, সেই সমস্ত জবকার্ডধারীদের কাছ থেকে খাজনার টাকা নিয়ে জবর্কাড বিলি করা চলছিল।” তাঁর কথার সূত্র ধরেই বিজেপি-র জেলা সহ-সভাপতি শুভাশিস চৌধুরী বলেন, “জবকার্ডধারীদের খাজনা টাকা পরিশোধের ক্ষেত্রেই ভোটারদের প্রলোভিত করার সুযোগ থাকছে। আমরা তাই এ ব্যাপারে তদন্তের দাবি করছি।” বিষয়টি ইতিমধ্যেই দলীয় নেতৃত্বকে জানিয়েছেন উপ-নির্বাচনে বিজেপি-র প্রার্থী অনিল সিংহ। তিনি বলেন, “এ বিষয়ে দলীয় নেতৃত্বই যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার নেবেন।” তৃণমূল প্রার্থী বিপ্লব ওঝা ঘটনার কথা জানেন না বলে এড়িয়ে গেলেও কংগ্রেস প্রার্থী আব্দুর রহমানের অভিযোগ, “এ ক্ষেত্রে অবশ্যই নির্বাচন বিধি লঙ্ঘন করা হয়েছে। এ বিষয়ে কী করা যায় তা নিয়ে আমরা দলে আলোচনা করছি।” অন্য দিকে, ওই কেন্দ্রে ফরওয়ার্ড ব্লকের প্রার্থী দীপক চট্টোপাধ্যায়ের প্রশ্ন, “জবকার্ড বিলির কি এখনই সময়?” তাঁর মত, “সারা বছর ধরে ধারাবাহিক কার্যক্রমের মধ্যে এই কাজ পড়ে। এখন নির্বাচনের সময় এই ভাবে জব কার্ড বিলি করা যায় না বলেই আমি মনে করি।” বামফ্রন্টের তরফে এ বিষয়ে শীঘ্রই জেলাশাসকের সঙ্গে কথা বলা হবে বলেও তিনি জানিয়েছেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.