এক ভবঘুরেকে খুন করার অভিযোগে উত্তাল হল কালিয়াচক। মঙ্গলবার সকালে কালিয়াচক থানার মহেশপুর চাতরা বাগান থেকে তার ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ জানায়, নিহতের নাম মোমিন মন্ডল (৪৪)। তাঁর বাড়ি ওই থানা এলাকার আলিপুরে। ঘটনার খবর চাউর হতেই বাসিন্দারা থানার সামনে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। একদল উত্তেজিত জনতা থানায় ঢুকে পুলিশের একটি জিপ ভাঙচুর করে। থানা লক্ষ করে ঢিল ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। পরে পুলিশ উত্তেজিত জনতাকে থানা থেকে সরিয়ে দেয়। থানা থেকে সরে গেলেও রাত পর্যন্ত জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন বাসিন্দারা। ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। আন্দোলনে সিপিএম, কংগ্রেস ও তৃণমূলের নেতা-কর্মীরাও যোগ দেন।
মালদহের পুলিশ সুপার জয়ন্ত পাল বলেন, “আজকে সকালে এক ভিখারি’র মৃতদেহ আমবাগান থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। এরপরই স্থানীয় বাসিন্দারা দোষীদের গ্রেফতার, পরিবারের একজনের চাকরির দাবিতে জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেছে। ওরা যে দাবি করছে তা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে। কারণ, আমাদের পক্ষে অভিযুক্তকে ধরা সম্ভব। কিন্তু চাকরি আমরা দিতে পারব না।”
কালিয়াচকের এখানে ওখানে ভিক্ষা করে সংসার চালাতেন মোমিনবাবু। তাঁর ৭ ছেলে মেয়ে। স্বামীকে খুনের খবর শোনার পর ছেলেমেয়ে নিয়ে আনোয়ারা বিবি থানায় ছুটে যান। কংগ্রেস বিধায়ক আবু হাসেম খান চৌধুরী বলেন, “কালিয়াচকে আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে। যে ভাবে একজন নিরপরাধকে খুন করা হয়েছে তাতে ক্ষোভ হওয়াটাই স্বাভাবিক।”
কালিয়াচক ১ ব্লকের তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি মোজাহার হোসেন তিনি বলেন, “যাকে খুন করা হয়েছে সে নিরপরাধ ও ভবঘুরে। তাঁকে অন্যায় ভাবে খুন করা হয়েছে। জাতীয় সড়ক অবরোধ করে যারা বিক্ষোভে সামিল হয়েছে তাদের দাবি ন্যায্য। আমিও তাঁদের সঙ্গে সহমত। তাই আমিও বিক্ষোভে সামিল হই।” দুপুর ১টা থেকে জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন বাসিন্দারা। টানা সাড়ে ৬ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধে এক দিকে কালিয়াচক থেকে ফরাক্কা পর্যন্ত ১২ কিমি, কালিয়চক থেকে মালদহ পর্যন্ত ২৪ কিমি যানজটে কয়েক হাজার বাস, ট্রাক, গাড়ি আটকে পড়ে। পরে রাত ৮টা নাগাদ কালিয়াচক ১ বিডিও দীপ্তার্ক বসু নিহতের স্ত্রীকে বিধবা ভাতা ও ছেলেমেয়েদের পড়ার খরচ দেওয়ার আশ্বাস গিয়ে অবরোধ উঠে যায়। |