গ্রেফতার হলেন সংগঠনের রাজ্য সভাপতি, জেলা সভাপতি-সহ ৫
উৎসবে ‘উৎপাত’ ছাত্র পরিষদের
ত্তরবঙ্গ উৎসব মঞ্চের সামনে কালো পতাকা নিয়ে ঢুকে উৎসবের প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে গোলমাল করায় গ্রেফতার করা হল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি রাহুল রায়, জেলা সভাপতি সৌরভ প্রসাদ-সহ ৫ জনকে। মঙ্গলবার দুপুরে বালুরঘাট হাইস্কুল মাঠে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ঘটনাটি ঘটে। সেই সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী রচপাল সিংহ ও শঙ্কর চক্রবর্তী। ছিলেন পরিষদীয় সচিব বিপ্লব মিত্র-সহ পুলিশ প্রশাসনের কর্তারা। রাহুলবাবু-সহ অন্যদের পুলিশ অফিসারেরা জামার কলার ধরে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে গিয়ে গ্রেফতার করেন বলে অভিযোগ। তাঁদের মাঠ থেকে থানা প্রায় ৫০ মিটার হাঁটিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। এর প্রতিবাদে আজ, বুধবার দুপুর ১২টা থেকে দু’টো জেলা জুড়ে পথ অবরোধের ডাক গিয়েছে ছাত্র পরিষদ।
বালুরঘাটে অমিত মোহান্তের তোলা ছবি।
দক্ষিণ দিনাজপুরের পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কিছু দুষ্কৃতী অনুষ্ঠান চত্বরে ঢুকে গোলমালের চেষ্টা করেছিল। পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” তবে রাত পর্যন্ত ধৃত ছাত্র নেতাদের বিরুদ্ধে পুলিশ কোনও ধারায় মামলা রুজু করেনি। তাঁদের থানার লকআপে রাখা হয়েছে বলে ছাত্র পরিষদের তরফে অভিযোগ করা হয়েছে। ডিএসপি উত্তম ঘোষ বলেন, “এই বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত হবে।”
পদযাত্রার পর জেলার ঐতিহ্যবাহী খন-গানের মাধ্যমে ৬ দিনের উৎসবের সূচনা করেন মন্ত্রী রচপাল সিংহ। মঞ্চের মাঠ ঘিরে ছিল পুলিশ পাহারা। এদিনই জেলা ছাত্র পরিষদের পূর্বঘোষিত ডেপুটেশন কর্মসূচী ছিল জেলাশাসকের কাছে। গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অব্যবস্থা, এনবিএসটিসি-র কর্মীদের পেনশন, বালুরঘাট কলেজে স্থায়ী অধ্যক্ষ নিয়োগ সহ পঠনপাঠনের উন্নয়নে ১১ দফা দাবিতে ছাত্র পরিষদ বিক্ষোভ মিছিল করেন। তাঁরা জেলা প্রশাসনিক ভবনে পৌঁছায়। জেলাশাসক দফতরে ছিলেন না। সেখান থেকে মাত্র ৫০ মিটার দূরে পুলিশ সুপারের অফিস লাগোয়া হাইস্কুল মাঠে পাশাপাশি চলছিল উদ্বোধনের অনুষ্ঠান। সেই সময় মঞ্চে ভাষণ দিচ্ছিলেন গঙ্গারামপুরের তৃণমূল বিধায়ক সত্যেন রায়। এর পরেই প্রশাসনিক ভবন থেকে ছাত্রপরিষদ কর্মী সমর্থকেরা দলীয় পতাকা, কালো পতাকা নিয়ে স্লোগান দিতে দিতে মঞ্চের দিকে এগোতে থাকেন। পুলিশের সঙ্গে তাঁদের ধস্তাধস্তি হয়। ডিএসপি উত্তম ঘোষের নেতৃত্বে পুলিশ গিয়ে ৫ জনকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায়।
সপার্ষদ। উত্তরবঙ্গ উৎসবে মঞ্চের দিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মঙ্গলবার জলপাইগুড়িতে সন্দীপ পালের তোলা ছবি।
ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি রাহুলবাবু অভিযোগ, “এনবিএসটিসির কর্মীরা ঠিকঠাক বেতন, পেনশন পাচ্ছেন না, বার্ধক্যভাতা মিলছে না। কলেজগুলিতে শিক্ষার সরঞ্জামের অভাব। অথচ লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে উত্তরবঙ্গ উৎসব হচ্ছে। কার স্বার্থে এই উৎসব তার প্রতিবাদ করে মন্ত্রীদের কাছে উত্তর জানতে গিয়েছিলাম।” একই ভাবে জেলা কংগ্রেস সভাপতি নীলাঞ্জন রায় বলেছেন, “ বঞ্চিত মানুষের কথা তুলে ধরে ছাত্রপরিষদ আন্দোলন করেছে। রাজ্যের চরম অর্থ সংকটের সময় এত ব্যয়বহুল অনুষ্ঠান কীসের তা জানতে গিয়ে ছাত্র যুবরা কোনও অন্যায় করেননি।”
যদিও তৃণমূলের তরফে বিষয়টির তীব্র নিন্দা করা হয়েছে। কারামন্ত্রী শঙ্কর চক্রবর্তী বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী উত্তরবঙ্গ উৎসবে এই জেলাকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। সেটাকে নষ্ট করার নোংরা প্রচেষ্টা চলছে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত মানুষ তা প্রত্যাখ্যান করেছেন।” আরেক মন্ত্রী রচপাল সিংহ বলেন, “এমন ভালো অনুষ্ঠান হলেও বিরোধীরা কেনও আপত্তি করেন বুঝতে পারি না। কিছু বোকা আছেন, তাঁরা এসব করেন।” অনুষ্ঠানে দেখা যায়নি বিরোধী দলের নেতানেত্রীদের। প্রাক্তন মন্ত্রী বিশ্বনাথ চৌধুরী বলেন, “আমন্ত্রণ করা হয়েছিল। কিন্তু দলের সাংসদকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি বলে যাইনি।” জেলা কংগ্রেস আগেই অনুষ্ঠান বয়কট করেছিল।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.