নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
স্কুল সার্ভিস কমিশন বা এসএসসি-র সুপারিশে শিক্ষক হিসেবে কাজে যোগ দেওয়ার পরে কোনও শিক্ষক বা শিক্ষিকা যদি উচ্চতর ডিগ্রি পান, তা হলে তিনিও উচ্চ বেতনহার অনুযায়ী পারিশ্রমিক পাবেন। তবে দেখতে হবে ওই স্কুলে উচ্চতর বেতনক্রমের পদ খালি আছে কি না। মঙ্গলবার এই রায় দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাশিস করগুপ্ত। শুধু তা-ই নয়, উচ্চ ডিগ্রি পাওয়া সত্ত্বেও এক শিক্ষিকাকে বঞ্চিত করায় স্কুলশিক্ষা দফতরের কমিশনারের ১০ হাজার টাকা জরিমানাও করেছে আদালত। সেই টাকা পাবেন ওই শিক্ষিকা।
এত দিন বলা হত, স্নাতক বা স্নাতকোত্তর প্রার্থী যে-পদে নিযুক্ত হবেন, তাঁর বেতনও হবে সেই অনুযায়ী। অর্থাৎ পদটি যদি স্নাতক হয়, তা হলে প্রার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতা যা-ই হোক না কেন, তিনি স্নাতক স্তরের জন্য নির্ধারিত বেতনই পাবেন। হাইকোর্ট এ দিন জানিয়ে দিল, রাজ্য সরকার ১৯৯৯ সালের ১৩ জুলাই মেমো নম্বর ১৫৫এসি(বি)-তে জানিয়েছে, কোনও স্নাতক শিক্ষক যদি উচ্চতর শিক্ষাগত যোগ্যতা অর্জন করেন, তবে স্কুলে স্নাতকোত্তর শিক্ষক-পদে সুযোগ থাকলে তাঁকে নিয়োগ করতে হবে।
রাজ্যের স্কুলশিক্ষা দফতরের কমিশনার সম্পর্কে বিচারপতি দেবাশিস করগুপ্ত বলেন, “ভাবা যায় না, এ-রকম উচ্চ পদে থাকা এক ব্যক্তি নিজের দফতর সম্পর্কে এতটা অজ্ঞ!” দফতরের আইন না-জেনে ওই কর্তা পশ্চিম মেদিনীপুরের রামবাহাদুরপুর জুনিয়র হাইস্কুলের শারীরশিক্ষিকা কেয়া মাইতিকে চিঠি লিখে জানান, উচ্চতর ডিগ্রি লাভ করলেও এসএসসি-র নিয়ম অনুযায়ী তিনি উচ্চ বেতনক্রমের অধিকারী নন। স্কুলশিক্ষা সচিবকে বিচারপতির নির্দেশ, এক মাসের মধ্যে ওই কমিশনারের বেতন থেকে জরিমানার ১০ হাজার টাকা কেটে নিতে হবে।
কেয়াদেবী স্নাতকোত্তর ডিগ্রি পেয়ে স্কুল সমিতির কাছে বাড়তি বেতন চান। সমিতি তা দেয়নি। শিক্ষিকা স্কুলশিক্ষা দফতরে আর্জি জানালে কমিশনারও তা নাকচ করেন। ওই শিক্ষিকা হাইকোর্টে যান। এ দিন মামলার শুনানির সময় দেখা যায়, অন্যান্য রাজ্যের একই ধরনের মামলার রায়ে সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, শিক্ষকেরা উচ্চতর ডিগ্রি লাভ করলে ছাত্রছাত্রীরা উপকৃত হবে। তাই শিক্ষকদের উচ্চ বেতনক্রম থেকে বঞ্চিত করলে শিক্ষা বিস্তারের কাজই ব্যাহত হয়। |