পদোন্নতি-নির্দেশিকা নিয়ে কাজ বন্ধ দুই বিশ্ববিদ্যালয়ে
লেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পদোন্নতির নিয়ম সংক্রান্ত সরকারি নির্দেশিকার প্রতিবাদে মঙ্গলবার কর্মবিরতি পালন করলেন যাদবপুর ও রবীন্দ্রভারতীর শিক্ষকেরা। কলকাতা, বারাসত রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, কল্যাণী-সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকারা এ দিন অবস্থান-বিক্ষোভ করেন।
বর্ধিত বেতনের বকেয়া টাকা না-পাওয়ার অভিযোগে আগেই কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছিলেন যাদবপুরের কিছু শিক্ষক। কেন ওই বকেয়া দেওয়া হয়নি, ১ ফেব্রুয়ারির মধ্যে রাজ্য সরকারকে তা জানানোর নির্দেশ দিয়েছে উচ্চ আদালত।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বা ইউজিসি-র নিয়ম মেনে কেরিয়ার অ্যাডভান্সমেন্ট স্কিম বা ক্যাস অনুযায়ী কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পদোন্নতির একটি নির্দেশিকা সম্প্রতি জারি করেছে রাজ্য। ২০১০-এর জুন থেকে ইউজিসি এই নিয়ম রূপায়ণ করতে বললেও রাজ্যে সেটি চালু হয়েছে ২৮ মাস পরে, ২০১২-র নভেম্বর থেকে। অভিযোগ, ওই সময়ে যে-সব শিক্ষক-শিক্ষিকার পদোন্নতি হওয়ার কথা, সরকারি নির্দেশিকা দেরিতে বাস্তবায়িত হওয়ায় তাঁদের ক্ষতি হবে। তাই ওই নির্দেশিকার বিরোধিতায় সরব শিক্ষক সংগঠনগুলি। যদিও রাজ্য সরকারের এক শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তি বলেন, “বাম আমলে তো কিছুই হয়নি। এত আর্থিক অনটন সত্ত্বেও তৃণমূল সরকার তো ক্যাস বলবৎ করেছে। শিক্ষক সংগঠনগুলির উচিত, রাজনীতি না-করে সরকারের সদিচ্ছাকে গুরুত্ব দেওয়া।”
কর্মবিরতিতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা। —নিজস্ব চিত্র
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (জুটা)-র সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম বিশ্বাস অবশ্য এ দিন বলেন, “শুধু আর্থিক ক্ষতি নয়, এটা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের স্বীকৃতিরও প্রশ্ন। সমস্যার গভীরতা বিচার করে কর্মবিরতির পথ নেওয়া হয়েছে। এতে পঠনপাঠনের যে-ক্ষতি হল, বাড়তি ক্লাস নিয়ে তা পুষিয়ে দেওয়া হবে।” রবীন্দ্রভারতীর শিক্ষক-শিক্ষিকারাও একই আশ্বাস দিয়েছেন। ওই দু’টি বিশ্ববিদ্যালয়েই অবশ্য পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী এ দিন পরীক্ষা হয়েছে। কর্মবিরতি না-করলেও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংগঠন ‘কুটা’ সরকারি নির্দেশিকার বিরোধিতা করে উপাচার্যের ঘরের সামনে অবস্থান-বিক্ষোভ করে।
কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ে আবার শিক্ষক সংগঠনের অবস্থান-বিক্ষোভে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সেখানকার শিক্ষাবন্ধু সমিতির বিরুদ্ধে। ওই সমিতি তৃণমূল প্রভাবিত। ওই বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, অবস্থান-বিক্ষোভের জন্য উপাচার্যের ঘরের সামনে পাতা শতরঞ্চিতে বসে পড়েন শিক্ষাবন্ধু সমিতির কয়েক জন। তাঁরা শিক্ষকদের চলে যেতে বলেন বলেও অভিযোগ। পরে শিক্ষকেরা উপাচার্যের ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে নিজেদের কর্মসূচি পালন করেন এবং তাঁকে স্মারকলিপি দেন। শিক্ষাবন্ধু সমিতি অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
ষষ্ঠ বেতন কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী ২০০৬-এর ১ জানুয়ারি কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন বৃদ্ধি হয়েছে। ২০০৯-এর ১ এপ্রিল থেকে নতুন হারে বেতন পাচ্ছেন তাঁরা। পেয়ে গিয়েছেন বকেয়া অর্থের ২০ শতাংশও। কিন্তু কেন্দ্রের প্রদেয় (৮০%) অর্থ এখনও মেলেনি। এই নিয়ে যে-সব শিক্ষক হাইকোর্টে মামলা করেছেন, তাঁদের আইনজীবী সুব্রত মুখোপাধ্যায় জানান, এ দিন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে আদালতে জানানো হয়েছে, কেন্দ্র রাজ্যগুলিকেই ওই ৮০% অর্থ শিক্ষকদের দিয়ে দিতে বলেছে। পরে রাজ্যকে টাকা ফেরানোর আশ্বাসও দিয়েছে কেন্দ্র। অন্য অনেক রাজ্য বকেয়া মিটিয়ে দিলেও পশ্চিমবঙ্গ সরকার তা মানেনি। সরকার শিক্ষকদের প্রাপ্য অর্থ দিচ্ছে না কেন, আদালত তা জানাতে বলেছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.