স্কুলে যাতায়াতের বেহাল রাস্তা সংস্কারের দাবি নিয়ে রাস্তা আটকে বিক্ষোভ দেখালেন কয়েক হাজার ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষক-শিক্ষিকা। মঙ্গলবার নামখানা-বকখালি রোডে ব্লক অফিস মোড়ে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। ব্লক অফিস প্রায় ২ ঘন্টা ঘেরাও করে রাখা হয়। অবশেষে পঞ্চায়েত সমিতি ও ব্লক প্রশাসনের আশ্বাসে অরবোধ ওঠে।
স্কুল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নামখানা-বকখালি রোডের গিরিবাঁধ মোড় থেকে দেবনগরমোক্ষ দিন্দা উচ্চ বিদ্যালয় পর্যন্ত প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার রাস্তা জেলা পরিষদের অধীন। বছর দশেক আগে দু’কিলোমিটার রাস্তা সারানো হলেও বাকি দেড় কিলোমিটার রাস্তার অবস্থা প্রথম থেকেই শোচনীয়। ইটপাতা ওই রাস্তা চলাচলের সম্পূর্ণভাবেই অযোগ্য। বর্তমানে পিচরাস্তা ও ইটপাতা রাস্তা দু’টিই দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় ভরে গিয়েছে খানাখন্দে। বর্ষাকালে যা হয়ে ওঠে আরও বিপজ্জনক। ঘটে ছোটখাটো দুর্ঘটনা। |
পথ অবরোধে পড়ুয়া-অভিভাবকেরা। |
রাস্তাটির এই দুরবস্থার জন্যে এলাকার বাসিন্দারা ছাড়াও ভুক্তভোগী স্থানীয় ওই স্কুল ও পাশের স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা। বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা প্রায় দু’হাজার। এদের মধ্যে প্রায় ১২০০ জন ছাত্রছাত্রী থাকে স্কুলের হস্টেলে। এ ছাড়াও পাশে রয়েছে একটি গার্লস হাইস্কুল যার ছাত্রীর সংখ্যা প্রায় ৮০০ জন। এদের মধ্যে ২০০ জনই থাকে স্কুলের হস্টেলে। রয়েছে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ও। হস্টেলে থাকা ছাত্রছাত্রীরা বেশিরভাগই বারুইপুর, ক্যানিং, গোসাবা, সোনারপুর-সহ দূরদূরান্ত এলাকার বাসিন্দা। ওই রাস্তা পেরিয়ে তাদের সঙ্গে দেখা করতে আসেন তাদের অভিভাবকেরা। স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারাও প্রত্যেকদিন বহুদূর থেকে যাতায়াত করেন। ওই রাস্তা দিয়ে স্কুলে আসেন স্থানীয় ছাত্রছাত্রীরাও। রাস্তার এই অবস্থার জন্য নিত্য ভোগান্তি পোয়াতে হয় তাদের প্রত্যেককে।
দেবনগরমোক্ষ দিন্দা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উৎপল দাস জানান, ২০০৬ সাল থেকেই ওই রাস্তাটি তৈরির জন্য পঞ্চায়েত প্রশাসনকে জানানো হলেও কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না প্রশাসন। বাধ্য হয়ে আজ ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে আন্দোলনে সামিল হয়েছেন তাঁরা। প্রধান শিক্ষকের আরও দাবি, এত ছাত্রছাত্রী থাকা সত্ত্বেও একটি মাত্র পানীয় জলের নলকূপ থাকায় তৈরি হয়েছে সমস্যা। |
বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা সর্বাণী বসু পাড়ুই জানান, তিনি কলকাতার বিধাননগর থেকে এখানে নিত্য যাতায়াত করেন। তাঁর মতো যাতায়াত করেন আরও অনেকে। ওই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে গিয়ে দুর্ঘটনার কবলেও পড়েছেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে যথেষ্টই উদ্বিগ্ন এবং হতাশ বিদ্যালয়ের পরিচালন সমিতির সম্পাদক তৃণমূলের সুনীল মণ্ডল। তার বক্তব্য, তারা পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদে ক্ষমতায় থাকলেও ওই নামী স্কুলের রাস্তা সংস্কারের সংস্কারের কাজে উদ্যোগী হচ্ছে না কেউ। অথচ অন্য রাস্তা সংস্কারের কাজ চলছে। এ বিষয়ে নামখানা পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি কুমারেশ পণ্ডা বলেন, “ওই রাস্তা তৈরির মত প্রয়োজনীয় অর্থ আমাদের তহবিলে নেই।
জলা পরিষদকে একাধিকবার বলা হলেও তারা এ বিষয়ে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।” তবে বিদ্যালয়ের সামনে একটি নলকূপ বসানোর আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে, বিডিও তাপস মণ্ডল বলেন, “আমার ওই রাস্তার বিষয়ে জানা ছিল না। দ্রুত ওই রাস্তা তৈরির বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।” |