যুগলে ‘আত্মঘাতী’। তদন্তে নেমে পুলিশ কিন্তু গ্রেফতার করল মায়াপুরের একটি হোটেল মালিককে।
দিন কয়েক আগে মায়াপুরের ওই হোটেলের একটি ঘরে পাওয়া গিয়েছিল মাঝ বয়সী এক পুরুষ ও তাঁর সঙ্গীর দেহ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ আত্মহত্যার ঘটনা বলেই জানিয়েছিল। শুরু হয়েছিল নিছকই নিয়মমাফিক তদন্ত। আত্মহত্যার ঘটনা ভেবে পুলিশ যখন হাত গুটিয়ে নিচ্ছে তখনই মৃতার বাবা অভিযোগ করেন আত্মহত্যা নয়, এ ঘটনা খুনের। নড়েচড়ে বসে পুলিশ। মঙ্গলবার তারই জেরে ওই হোটেলের মালিক পিন্টু সরকারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
নবদ্বীপ থানার আইসি তপন মিশ্র বলেন, “মৃতার বাবার অভিযোগ, সুজিত সিকদার এবং স্থানীয় সুজন এবং শঙ্কর বিশ্বাস মিলে তাঁর মেয়েকে খুন করেছে। তাতে ওই হোটেল মালিকের প্রত্যক্ষ মদত ছিল। তিনি ওই দু’জনের পরিচয়পত্র যাচাই না করেই ঘর ভাড়া দিয়েছিলেন। এই অভিযোগেই হোটেল মালিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য দুই অভিযুক্তের খোঁজ চলছে।” মঙ্গলবার পিন্টুবাবুকে নবদ্বীপের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে তোলা হয়। তার জামিনের আবেদন খারিজ করে ১৪ দিন জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
গত ২৪ জানুয়ারি মায়াপুরের হুলোর ঘাট সংলগ্ন হোটেলে নাকাশিপাড়ার বানার মাঠপাড়া গ্রামের সুজিত সিকদার (৩৭) এবং পাপিয়া বর্মনের (২৭) দেহ মেলে। পুলিশ জানায়, ২৩ জানুয়ারি ওই দু’জন স্বামী-স্ত্রীর পরিচয় দিয়ে হোটেলে উঠেছিলেন। পর দিন হোটেলের ঘরের দরজা ভেঙে দু’জনের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানায়, কীটনাশক খেয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন ওই দু’জন। গত সোমবার পাপিয়াদেবীর বাবা নিতাই সাহা নবদ্বীপ থানায় মেয়ের প্রতিবেশী শঙ্কর বিশ্বাস, সুজন বিশ্বাস এবং সুজিত সিকদারের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। নিতাইবাবু বলেন, “ওই তিন জন ২৩ জানুয়ারি মেয়েকে অসৎ উদ্দেশ্যে মায়াপুরে নিয়ে এসেছিল। ওই দিনই নাকাশিপাড়া থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করি। ২৪ জানুয়ারি খবর পাই, মায়াপুরের হোটেল থেকে মেয়ের দেহ পাওয়া গিয়েছে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, মেয়েকে কিছু খাইয়ে খুন করা হয়েছে। আর তাতে প্রত্যক্ষ ভাবে সাহায্য করেছেন ওই হোটেলের মালিক।” তা হলে সুজিতকে খুন করল কে? সে উত্তর অবশ্য পুলিশের কাছে মেলেনি। তবে জানা গিয়েছে সুজিতবাবু এবং পাপিয়াদেবী দু’জনই বিবাহিত। তাঁদের সম্পর্কও খুব অজানা ছিল না বলে পুলিশ তদন্তে জানতে পেরেছে। তবে কী সেই জানাজানির ভয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন দু’জনে? উত্তর মেলেনি তারও।
|