বোর্নিওর জঙ্গলে বিষে মৃত্যু ১০ পিগমি হাতির |
সংবাদসংস্থা • কুয়ালা লামপুর |
ছোট্ট শুঁড়টা দিয়ে মাকে জাগানোর চেষ্টা করেই যাচ্ছিল সে। কিন্তু কিছুতেই মার আর ‘ঘুম’ ভাঙছে না।
এ সময় বোর্নিও পিগমি হাতির তিন মাসের ছানাটিকে চোখে পড়ে বন দফতরের কর্মীদের। তাঁরাই কোনও মতে মায়ের কাছ থেকে সরিয়ে আনে বাচ্চা হাতিটিকে।
বোতল থেকে একটু একটু করে জল খাওয়ানোর চেষ্টা করেন। এক কর্মীর হাত থেকে খানিক জলও খায় সে। কিন্তু মা! তাকে জাগাতে পারেননি কর্মীরা। কারণ তত ক্ষণে বিষক্রিয়ায় মৃত্যু হয়েছে তার।
এই নিয়ে গত তিন সপ্তাহে দশটি বিলুপ্তপ্রায় বোর্নিও পিগমি হাতির দেহ মিলেছে মালয়েশিয়ার গুনুং রারা ফরেস্ট রিজার্ভে। বোর্নিও-র সাবা জেলার বন দফতরের ডিরেক্টর লরেনটিয়াস আম্বু নিজেই জানালেন এ কথা। ময়নাতদন্তে ধরা পড়েছে, শরীরে মারাত্মক রক্তক্ষরণ ঘটে মৃত্যু হয় সবারই। তা ছাড়া, খাদ্যনালীতেও ঘা হয়ে গিয়েছিল।
সাবার পরিবেশমন্ত্রী মাসিদি মাঞ্জুমের বক্তব্য, বিষক্রিয়ায় মৃত্যু হয়েছে জানা গেলেও বিষয়টা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নাকি, সে বিষয়ে নিশ্চিত নন তাঁরা। আর সেখানেই খটকা। কারণ, গত কয়েক বছরের বেশ কিছু হাতিকে খুন করে দাঁত বের করে নেয় চোরাচালানকারীরা। তবে এ বারে তেমন কোনও সূত্র মেলেনি। মৃতদেহে কোনও রকম ক্ষতচিহ্ন কিংবা গুলির দাগও নেই। বন দফতরের পশুচিকিৎসক সেন ন্যাথান জানান, হাতিগুলো সম্ভবত একই পরিবারের। |
সকলেরই বয়স ৪ থেকে ২০-র মধ্যে। তবে উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে চারটে দেহ প্রায় জড়াজড়ি করে পড়েছিল একে অপরের গায়ের উপর। দু’দিন পরে আর চার জনকে এ ভাবেই পড়ে থাকতে দেখা যায় অন্য একটি জায়গায়।
মাসিদি বলেন, “ঘটনাটা খুবই দুঃখের। বোর্নিও-র হাতির সংখ্যা ক্রমশই কমে যাচ্ছে। তার উপরে এমন ঘটনা বড় ক্ষতি।” তিনি আরও বলেন, “এর পিছনে যদি কোনও ষড়যন্ত্র থেকে থাকে, আমি নিজে দোষীদের শাস্তি দেব।”
ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ডলাইফ ফান্ডের সমীক্ষা অনুযায়ী, নিজেদের অস্তিত্ব হারাতে হারাতে এখন দেড় হাজারেরও কম বোর্নিও পিগমি হাতি রয়েছে। প্রধানত বোর্নিও-র সাবায় এদের দেখতে পাওয়া যায়। সাত ফুট মতো উচ্চতা, এশিয়ার হাতিদের তুলনায় ফুট দু’য়েক ছোট। বড় বড় কান, লম্বা লেজ আর বাচ্চা-বাচ্চা মুখটাই এদের আলাদা করে চিনিয়ে দেয়।
সংখ্যা ক্রমেই কমে যাওয়ায় পিগমি হাতির সংরক্ষণ নিয়ে যথেষ্ট কড়াকড়ি করা হয়েছে। ইদানীং মৃত্যুর হারও কমেছিল। কিন্তু এর মধ্যেই এমন ঘটনায় চিন্তিত বোর্নিও-র বনদফতর। |