|
|
|
|
তাড়া করল জঙ্গিরা |
নিজের কেন্দ্রেই পালিয়ে বাঁচলেন বিজেপি বিধায়ক |
প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায় • রাঁচি |
রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন চলছে। প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জয়রাম রমেশ মাওবাদী অধ্যুষিত এলাকা সারাণ্ডায় জাতীয় পতাকাও তুলেছিলেন। কিন্তু তাতে যে তাদের কিছু যায় আসে না ফের তার ইঙ্গিত দিল মাওবাদীরা।
লাতেহার জেলার মনিকা থানা এলাকায় স্থানীয় বিধায়কের উপরে হামলার ছক কষেছিল মাওবাদীরা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত স্থানীয় গ্রামবাসীদের মারফৎ খবর পেয়ে যান বিজেপি বিধায়ক হরিকৃষ্ণ সিংহ। মাওবাদীদের সঙ্গে প্রায় লুকোচুরি খেলার মতোই কোনও ক্রমে তাঁদের এড়িয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে ফিরলেন বিধায়ক। আর মাওবাদীরা বিধায়কের খোঁজে গ্রামের ঘরে ঘরে তল্লাশি চালিয়ে শেষ পর্যন্ত খালি হাতেই ফিরে গেল। রাজ্য পুলিশের ডিজিপি গৌরীশঙ্কর রথ বলেন, “ওই বিধায়ক পুলিশকে কিছু না জানিয়েই ওই জায়গায় চলে যান। তাঁকে সেখানে যেতে নিষেধ করেছিল জেলা পুলিশ। এমন যে ঘটতে পারে, তার আগাম আগাম খবর পুলিশের কাছে ছিল। ফলে তিনি বিপদের মুখে পড়েছেন। আগে থেকে জানালে পুলিশই ওঁর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করত।”
পুলিশ জানায়, সোমবার সকালে লাতেহারের মনিকা বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক হরিকৃষ্ণ সিংহ একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ওই এলাকার পরনোয়া গ্রামে যান। সেই সময় গ্রামবাসীদের মারফৎ ওই বিধায়কের কাছ খবর আসে, মাওবাদীরা ওই বিধায়কের খোঁজে গ্রামে আসছে। এরপরে কোনওক্রমে নিজের দেহরক্ষীদের নিয়ে তিনি সেখান থেকে বেরিয়ে ঘুরপথে মনিকা ব্লকের নিরাপদ আশ্রয়ে পৌঁছে যান। তার খানিক্ষণের মধ্যেই সশস্ত্র মাওবাদীরা গ্রামে হাজির হয়। কিন্তু বিধায়ককে সেখানে দেখতে না পেয়ে উত্তেজিত জঙ্গিরা গ্রামের বিভিন্ন বাড়িতে তল্লাশি চালাতে শুরু করে। বিধায়ক ও তাঁর দেহরক্ষীকে তাদের সামনে হাজির করানোর জন্য গ্রামবাসীদের চাপ দিতে থাকে জঙ্গিরা। শেষ পর্যন্ত বিধায়ক পালিয়েছে বুঝতে পেরে মাওবাদীরা গ্রাম ছেড়ে চলে যায়। ঘটনার পরে অবশ্য প্রশ্ন উঠেছে ঝাড়খণ্ডের পুলিশি প্রশাসন নিয়ে। ডিজিপি নিজেই স্বীকার করেছেন ওই সব জায়গা নিরাপদ নয়। তিনি বলেন, “ওই সব জায়গায় যেতে হলে সব সময় উপযুক্ত পুলিশি নিরাপত্তা নিয়েই যেতে হবে।” মঙ্গলবার ওই বিধায়কের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হয়। তবে তিনি তাঁর মোবাইল ফোন বন্ধ রেখেছেন। এই মুহূর্তে তিনি মনিকাতেই রয়েছেন। তবে টাওয়ার লোকেশনে তাঁর নম্বর চলে এলে ফের বিপদের সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে—এই আশঙ্কা থেকেই হরিকৃষ্ণ সিংহ ফোন ধরছেন না বলেই তাঁর পরিবার সূত্রে জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৮ জানুয়ারি লাতেহার জেলারই আমুয়াটিকার জঙ্গলে মাওবাদীরা কার্যত ফাঁদ পেতে নিজেদের ডেরায় টেনে নিয়ে এসে ১১ জন জওয়ানকে গুলি করে খুন করে। ওই ঘটনাতেই নিহত এক জওয়ানের পেট চিরে পেটের ভিতর বিস্ফোরক ভরে রাঁচির একটি হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয় মাওবাদীরা। এ দিকে, এই ঘটনাকে রাজনৈতিকভাবেই মোকাবিলা করার ইঙ্গিত দিয়েছে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। কংগ্রেসের নাম না করে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দীনেশানন্দ গোস্বামী বলেন, “ছ’মাস আগে সারাণ্ডার মনোহরপুরের বিধায়ক গুরুচরণ রাই-এর উপরে হামলা হয়েছিল। কাল আবার হরিকৃষ্ণ সিংহের উপরে হামলার চেষ্টা হয়েছে। এখানে তো এখন কেন্দ্রের শাসন চলছে। আমরা প্রশাসনের সঙ্গে এটা নিয়ে আলোচনা করব। কেন্দ্র বিষয়টি দেখুক।” |
|
|
|
|
|