|
|
|
|
কপাল সংশোধনে সায় কাল |
সিবিআই-প্রধান নিয়োগ কেন্দ্রের হাতেই |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
লোকসভা ভোটের আর চোদ্দো মাস বাকি। তার আগে দুর্নীতি দমন ও প্রশাসনিক স্বচ্ছতার বার্তা দিতে কংগ্রেস লোকপাল বিল পাশ করাতে সক্রিয় হলেও, এ নিয়ে সংসদে অশান্তির আশঙ্কা থেকেই গেল। কারণ, বিরোধীদের অন্য কয়েকটি দাবি মেনে নিলেও সিবিআইয়ের ডিরেক্টর নিয়োগের এক্তিয়ার এখনও ছাড়তে রাজি নয় কেন্দ্র। রাজনীতির কারবারিদের মতে, স্রেফ এটিকে কেন্দ্র করেই লোকপাল বিল পাশে আপত্তি জানাতে পারে বাম-বিজেপি।
পরশু লোকপাল বিলের সংশোধন প্রস্তাবে অনুমোদন দিতে পারে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। সেই সংক্রান্ত ক্যাবিনেট নোটে বলা হয়েছে, সিবিআইকে আরও শক্তিশালী করতে সংসদীয় সিলেক্ট কমিটির বেশ কিছু সুপারিশ মেনে নেওয়ার পক্ষে সরকার। সিবিআই ডিরেক্টরের আওতায় পৃথক ডিরেক্টর অফ প্রসিকিউশন গঠন তার অন্যতম। সিবিআইয়ের এই শাখা লোকপালের কথাও শুনবে। এর ডিরেক্টর নিয়োগ করবে কেন্দ্রীয় ভিজিলেন্স কমিশন। লোকপালের কাছ থেকে কোনও তদন্তের দায়িত্ব পেলে সেই মামলার জন্য সরকারি আইনজীবীর বদলে পৃথক আইনজীবী নিয়োগের অধিকারও সিবিআইকে দেওয়ারও পক্ষে সরকার। কিন্তু বিরোধীদের প্রধান দাবিটি, অর্থাৎ সিবিআই ডিরেক্টর নিয়োগের জন্য কলেজিয়াম গঠন তা নিয়ে কিছুই বলা হয়নি ক্যাবিনেট নোটে। সিলেক্ট কমিটির সুপারিশ ছিল, প্রধানমন্ত্রী, প্রধান বিচারপতি ও লোকসভার বিরোধী দলনেতাকে নিয়ে কলেজিয়াম গড়া হোক, যা সিবিআই ডিরেক্টরকে নিয়োগ করবে। এবং এই যুক্তিতে সিবিআই ডিরেক্টর পদে রঞ্জিৎ সিনহার নিয়োগেও আপত্তি করেছিল বিজেপি।
কংগ্রেস সূত্রে বলা হচ্ছে, সিবিআই ডিরেক্টর নিয়োগ নিয়ে বিজেপি বা বামেদের দাবি মানায় রাজনৈতিক অসুবিধা রয়েছে। কারণ, মায়া-মুলায়ম ও অন্য আঞ্চলিক দলগুলি এর বিরোধী। ফলে বিজেপি এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে সংসদে গোল পাকালেও, মায়া-মুলায়মের সমর্থন নিয়ে লোকপাল বিল পাশ করিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে সরকার আশাবাদী।
সরকার যে লোকপাল বিল পাশে ফের সক্রিয় হবে তার ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল কংগ্রেসের সাম্প্রতিক চিন্তন শিবিরেই। দল ও সরকারকে বার্তা দিয়ে সনিয়া গাঁধী জানিয়েছিলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে মানুষের অসন্তোষ যথার্থ। এখনই তা প্রশমণের পথ খুঁজতে হবে। কেন্দ্রের শীর্ষ সারির এক মন্ত্রীর কথায়, “সেই বিষয়টি মাথায় রেখেই সরকার লোকপাল বিল আরও মজবুত করতে চাইছে। এ জন্য সিলেক্ট কমিটির বেশ কিছু সুপারিশও সরকার মেনে নিয়েছে।” এই পরিবর্তনগুলির মধ্যে রয়েছে:
• বিলে লোকপাল থেকে লোকায়ুক্তের প্রসঙ্গটি আলাদা করা। সে ক্ষেত্রে বলা হবে, সংসদে লোকপাল বিল পাশের এক বছরের মধ্যে সব রাজ্য নিজ-নিজ লোকায়ুক্ত বিল পাশ করাবে।
• রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত কাউকে লোকপালের সদস্য না করা।
• লোকপাল সরকারি কর্মীর বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দিতে পারবে। তবে অভিযুক্ত ব্যক্তির মত শুনতে হবে তার আগে।
• লোকপাল তার প্রসিকিউশন শাখা বা তদন্তসংস্থার প্রসিকিউশন শাখাকে আদালতে মামলা করার নির্দেশ দিতে পারবে।
কংগ্রেসের আশা, লোকায়ুক্তের বিষয়টি রাজ্যের হাতে ছেড়ে দেওয়ায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা নীতীশ কুমারের মতো আঞ্চলিক নেতারা আর আপত্তি করবেন না সংশোধিত বিলে। এ নিয়ে তাঁদের সঙ্গে কথাও বলবে কেন্দ্র। কথা বলা হবে মায়া-মুলায়মের সঙ্গেও। কেননা বিলটি এ বার পাশ করাতে পারলে লোকসভা ভোটের আগে তা হবে কংগ্রেসের বড় সাফল্য। |
|
|
|
|
|