পার্ক স্ট্রিট ধর্ষণ মামলা সুপ্রিম কোর্টে
জঘন্য অপরাধ, মানলেন রাজ্যের কৌঁসুলি
পার্ক স্ট্রিটে গণধর্ষণের ঘটনা ‘সাজানো’ বলে মন্তব্য করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সুরে সুর মিলিয়েছিলেন সাংসদ কাকলি ঘোষদস্তিদার-সহ তৃণমূলের অনেক মন্ত্রী-নেতাই। রাজ্য সরকারের আইনজীবী কিন্তু মঙ্গলবার দিল্লিতে সর্বোচ্চ আদালতে দাঁড়িয়ে জানিয়ে দিলেন, ‘জঘন্য অপরাধ যে ঘটেছে, তা কেউই অস্বীকার করছে না।’
সুপ্রিম কোর্টে এ দিন পার্ক স্ট্রিট কাণ্ডের অন্যতম দুই অভিযুক্ত সুমিত বজাজ এবং নাসির খানের জামিনের আর্জি নাকচ হয়ে যায়। সুমিতের জামিনের আবেদন করে তাঁর আইনজীবী উদয় ললিত জানান, লাঞ্ছিতা মহিলা কখনওই পুলিশের কাছে তাঁর মক্কেলের নাম জানাননি। এমনকী সুমিতকে তিনি শনাক্তও করেননি। নাসিরের আইনজীবী যশপাল সিংহ আদালতে জানান, সাক্ষীরা যাঁদের বিরুদ্ধে বয়ান দিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে তাঁর মক্কেলের নাম নেই। সর্বোচ্চ আদালত জানিয়েছে, ওই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত (কাদের খান) এবং অন্য এক অভিযুক্ত (মহম্মদ আলি) যে-হেতু এখনও পলাতক, তাই সুমিত ও নাসিরকে জামিন দেওয়া যাচ্ছে না।
পার্ক স্ট্রিটের ঘটনায় প্রথম থেকেই সমালোচনার মুখে পড়েছে রাজ্য সরকার। ঘটনার পরে পার্ক স্ট্রিট থানায় অভিযোগ জানানো হলেও প্রাথমিক ভাবে পুলিশ বিষয়টিকে আমল দেয়নি। পরবর্তী কালে গণধর্ষণের কথা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ায় নড়েচড়ে বসে লালবাজার। তদন্তভার হাতে নেয় গোয়েন্দা বিভাগ। তদন্ত চলাকালীনই মুখ্যমন্ত্রী মন্তব্য করেন, এটা ‘সাজানো ঘটনা’। লালবাজারে সাংবাদিক বৈঠকে একই সুর শোনা যায় পুলিশ কমিশনার রঞ্জিতকুমার পচনন্দার বক্তব্যে। ধর্ষিতার চরিত্র ও পেশা নিয়ে রাজ্যের মন্ত্রী-সাংসদদের মন্তব্যও সরকারকে বিড়ম্বনায় ফেলে দিয়েছিল। গত ২৪ জানুয়ারি এই মামলার ‘ত্রুটিপূর্ণ’ নথি দাখিল করার জন্য সুপ্রিম কোর্টে ভর্ৎসনার মুখে পড়ে রাজ্য। ‘ওই নথি ৫০ ফুট দূরে ছুড়ে ফেলার যোগ্য’ বলে মন্তব্য করেন ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতিরা।
এই পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে বিচারপতি জি এস সিঙ্ঘভি এবং বিচারপতি এইচ এল গোখেলের সামনে রাজ্য সরকারের আইনজীবী মুকুল রোহাতগি এ দিন জানান, পার্ক স্ট্রিটে গণধর্ষণের যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ সরকারের হাতে রয়েছে। পার্ক স্ট্রিটের পাঁচতারা হোটেলে ২০১২ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে অমর শর্মা নামে যে-ব্যক্তি অনুষ্ঠানের (পার্টি) আয়োজন করেছিলেন, তিনি অভিযুক্তদের শনাক্ত করেছেন। সেই সঙ্গে নিজের জবানবন্দিতে তিনি বলেছেন, অভিযুক্তেরা ওই মহিলাকে নিয়ে গাড়িতে উঠেছিল। সরকার পক্ষের আইনজীবী এ দিন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের সামনে শর্মার লিখিত জবানবন্দি পড়ে শোনান। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ আছে বলে দাবি করে সরকার পক্ষের আইনজীবী আদালতে জানান, ঘটনার বিবরণ দিয়েছেন পার্ক স্ট্রিটের সেই হোটেলের ১৫-১৬ জন কর্মী। তাঁদের সাক্ষ্যও নেওয়া হয়েছে। মহিলাকে যে-গাড়িতে ধর্ষণ করা হয়েছিল, অভিযুক্তেরা সেটি লুকিয়ে রেখেছিল। তারও প্রমাণ সরকারের হাতে আছে বলে দাবি করেন কৌঁসুলি। তিনি জানান, সরকার ওই হোটেল থেকে সংগ্রহ করা সে-রাতের ভিডিও ফুটেজ আদালতে পেশ করেছে।
এ দিনই কলকাতায় বিচার ভবনে পার্ক স্ট্রিট কাণ্ডের ভিডিও ফুটেজের কপি অভিযুক্তদের আইনজীবীদের হাতে তুলে দেওয়ার কথা ছিল সরকার পক্ষের কৌঁসুলিদের। এক আইনজীবী জানান, যান্ত্রিক কারণে ওই ফুটেজের কপি করা যায়নি। বিচারক মধুচ্ছন্দা বসু সরকার পক্ষকে অনুরোধ করেন, ৩১ জানুয়ারি যেন ভিডিও ফুটেজের কপি অভিযুক্তদের আইনজীবীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.