শহরের রাস্তায় মহিলাদের উপরে শ্লীলতাহানির ঘটনা যে অব্যাহত, ফের তার প্রমাণ মিলল। সোমবার সন্ধ্যায় সদাব্যস্ত শ্যামবাজার পাঁচমাথার মোড়ে বিএসএফের এক জওয়ানের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ এনেছিলেন এক তরুণী। এলাকার মানুষই ওই জওয়ানকে পুলিশের হাতে তুলে দেন। তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ওই রাতেই রিজেন্ট পার্ক, বাগবাজার ও কসবা এলাকায় আরও তিন মহিলার শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠল। তিনটি ঘটনায় চার যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার রাতে রিজেন্ট পার্ক থানার বাঁশদ্রোণী সোনালি পার্কের কাছে দ্বিতীয় বর্ষের এক কলেজ-ছাত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ আসে লালবাজারে। রাত দশটা নাগাদ লালবাজার কন্ট্রোল রুমে ১০০ নম্বরে ফোন করে ওই ছাত্রী অভিযোগ জানান। লালবাজার থেকে খবর যায় রির্জেন্ট পার্ক থানায়। রিজেন্ট পার্ক থানার পুলিশ গিয়ে দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। |
পুলিশ জানায়, অভিযুক্ত দু’জনের এক জন অটোচালক। তার নাম দেবরাজ ভট্টচার্য ওরফে পাপ্পু। অন্য জন তার সঙ্গী। নাম রবিন দাস। ছাত্রীটির অভিযোগ, রাত ন’টা নাগাদ তিনি মাস্টারদা সূর্য সেন স্টেশনে মেট্রো থেকে নেমে বাড়ি ফেরার জন্য ওই অটোয় উঠেছিলেন। পিছনে জায়গা না থাকায় বসেছিলেন চালকের পাশের আসনে। তার পাশেই এসে বসে রবিন। অটোতেই রবিন ও পাপ্পু তাঁর শ্লীলতাহানি করে বলে ওই ছাত্রীর অভিযোগ। পিছনে এক মহিলা যাত্রী তাঁর বাচ্চাদের নিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি এর প্রতিবাদও করেন। এর মধ্যে গন্তব্য এসে যাওয়ায় ওই মহিলা নেমে যান। পরিস্থিতি দেখে আতঙ্কে সেখানেই নেমে পড়েন ওই ছাত্রীটি। কিন্তু অটোচালক ও তার সঙ্গী সেখানেও তাকে উত্যক্ত করতে থাকে। ভয়ে ছাত্রীটি চিৎকার করে ওঠেন। মোবাইল থেকে ১০০ নম্বরেও ডায়াল করেও সাহায্য চান। এর মধ্যে এলাকার মানুষ রবিনকে ধরে ফেলেন। কিন্তু পালিয়ে যায় পাপ্পু। রাতেই তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
শ্লীলতাহানির দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটে বাগবাজারে। বিধাননগরের বাসিন্দা এক তরুণীর শ্লীলতাহানির অভিযোগে উত্তর বন্দর থানার পুলিশ সোমবার রাত ১১টা নাগাদ গ্রেফতার করে এক যুবককে। ধৃতের বাড়ি শ্যামপুকুরে। পুলিশকে ওই তরুণী জানান, রাত ১০টা নাগাদ তিনি তাঁর এক বন্ধুর সঙ্গে বাগবাজার ঘাটে বসেছিলেন। তখন অভিযুক্ত যুবক তাঁদের কটূক্তি করে। তরুণীর অভিযোগ, কটূক্তি শুনে তাঁর বন্ধু প্রতিবাদ করেছিলেন। এর পরেই দু’জনের মধ্যে বচসা শুরু হয়। সে সময়ে যুবকটি তাঁর শ্লীলতাহানি করে বলে অভিযোগ তরুণীর। তিনি চিৎকার শুরু করলে স্থানীয় বাসিন্দারা ওই যুবককে ধরে ফেলেন। তরুণীর অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
সোমবার রাতেই শ্লীলতাহানির আর একটি ঘটনা ঘটে কসবা থানা এলাকায়। ওই ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছে বছর পঁচিশের এক যুবক। পুলিশ জানায়, তিলজলার সিএন রায় রোডে বাড়ি অভিযুক্ত যুবক এবং অভিযোগকারিণীর। তাঁদের মধ্যে পূর্বপরিচয় ছিল। পুলিশ জানিয়েছে, তরুণী কসবার জিএস বসু রোডের একটি বাড়িতে গৃহশিক্ষকতা করেন। ওই রাতে সেখান থেকে বাড়ি ফেরার সময়ে তাঁর হাত ধরে টানাটানি করে অভিযুক্ত যুবক। রাতেই কসবা থানায় ওই যুবকের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ করেন তরুণী। ধরা পড়ে অভিযুক্ত। |