আত্মরক্ষার জন্য জুডো-ক্যারাটের প্রশিক্ষণ নিতে কলকাতার মেয়েদের কাছে আগেই আবেদন জানিয়েছিলেন রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী মদন মিত্র। প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার জন্য শহরের ক্লাবগুলির কাছে আর্জিও জানিয়েছিলেন তিনি। এ বার শহরের বিভিন্ন স্কুলের ছাত্রীদের আত্মরক্ষার তালিম দিতে উদ্যোগী হল কলকাতা পুলিশ।
স্থির হয়েছে, প্রথম পর্যায়ে আটটি বিভাগে মোট ১৬টি স্কুলের মেয়েদের এক মাস প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। যা শুরু হবে ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে। পুলিশের এক কর্তা জানান, এটা ‘পাইলট প্রকল্প’। প্রথম পর্যায়ে ভাল সাড়া পেলে দ্বিতীয় পর্বে ১৫০টি স্কুলকে বেছে নেওয়া হবে। খরচ হবে ৩৬ লক্ষ টাকা। প্রশিক্ষণ দেবেন কলকাতা পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত মহিলা অফিসার ও কিছু বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা।
কেন এই প্রশিক্ষণ? এক পুলিশকর্তা জানান, কলকাতা-সহ বহু জায়গায় মহিলাদের উপরে নির্যাতন হচ্ছে। নানা ভাবে নাজেহাল করা হচ্ছে মহিলদের। রেহাই পাচ্ছে না স্কুলের ছাত্রীরাও। ওই কর্তার দাবি, নারী নির্যাতন রুখতে পুলিশ সতর্ক থাকলেও ছাত্রীরা আত্মরক্ষার প্রশিক্ষণ নিলে তা ভালই হবে। |
কিন্তু যাঁদের উপরে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার এবং মহিলাদের নিরাপত্তার দায়িত্ব, সেই কলকাতা পুলিশের কর্মীরা এ বিষয়ে কতটা সচেতন, সে নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে। থানায় মহিলাদের অভিযোগ নেওয়া এবং তা তদন্ত করার ক্ষেত্রে পুলিশের ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন উঠছে বেশি।
রাজ্যের নারী ও সমাজকল্যাণমন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র স্কুলের ছাত্রীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার জন্য কলকাতা পুলিশকে চিঠি দিয়েছিলেন। তার পরেই এই উদ্যোগ বলে পুলিশ সূত্রে খবর। প্রশিক্ষণের বিস্তারিত জানিয়ে কলকাতা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার দেবাশিস রায় চিঠি দিয়েছেন সাবিত্রীদেবীকে। তিনি এই বিষয়ে আর্থিক সাহায্যের আবেদনও জানান। সেই মতোই তাঁর সচিবকে আর্থিক সাহায্যের বিষয়টি দেখতে বলেন মন্ত্রী।
দেবাশিসবাবু বলেন, “আমরা শহরের বিভিন্ন স্কুলের প্রধান শিক্ষিকাদের চিঠি দিয়েছিলাম। তাঁরা ভাল সাড়া দিয়েছেন। ঠিক হয়েছে, স্কুলগুলিতে প্রশিক্ষকেরা যাবেন। ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে প্রশিক্ষণ শুরু হবে। রাজ্যের
দুই মন্ত্রী এ বিষয়ে সাহায্য করছেন। এ ছাড়াও রেস্টলিং, তাইকুণ্ডু, কিক-বক্সিং, জুডোর প্রশিক্ষণ দেওয়ার সংস্থাগুলিকেও তাঁরা আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন।” ক্রীড়ামন্ত্রী আগেই জানিয়েছিলেন, মেয়েদের জুডো, ক্যারাটে ও বক্সিংয়ের প্রশিক্ষণ দিতে প্রয়োজনে ক্লাবগুলিকে আর্থিক সাহায্য করবে সরকার। পুলিশের এক কর্তা জানান, নারী-নির্যাতনের তথ্য জানানোর জন্য কলকাতা পুলিশের কন্ট্রোল রুম ২৪ ঘণ্টাই খোলা থাকছে। এ ছাড়াও এসএমএস করে পুলিশকে সব কথা জানাতে পারবেন মহিলারা। |