অবশেষে রাজ্যগুলিকে কেন্দ্রীয় বিক্রয় কর (সিএসটি) খাতে ক্ষতির বকেয়া টাকা মেটাতে রাজি দিল্লি। ওই বকেয়া বাবদ মোট ৩৪ হাজার কোটি টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তারা। এর মধ্যে ২০১০-’১১ আর্থিক বছরের জন্য পশ্চিমবঙ্গ পাবে ৬৩৮ কোটি।
প্রাপ্য বকেয়ার এই অঙ্ক নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যগুলির দড়ি টানাটানি চলছিল দীর্ঘদিন ধরে। দেশ জুড়ে পণ্য-পরিষেবা কর (জিএসটি) চালুর পথেও তা হয়ে উঠেছিল অন্যতম বাধা। তাই এ বার এ নিয়ে সমঝোতার দরুন পণ্য-পরিষেবা কর চালুর পথ কিছুটা প্রশস্ত হল বলে মনে
করছেন অনেকে। তাঁদের মতে, ২০১৪-’১৫ অর্থবর্ষে এই কর চালুর সম্ভাবনা প্রবল।
তবে লগ্নির খোঁজে বিদেশ সফররত অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম জানিয়েছেন, বাজেট অধিবেশনে এ নিয়ে আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা কম। বরং বাদল অধিবেশনে বিষয়টি সামনে আসতে পারে।
সম্প্রতি ভুবনেশ্বরে একটি রিপোর্ট পেশ করে বিভিন্ন রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদের নিয়ে তৈরি ক্ষমতাপ্রাপ্ত (এমপাওয়ার্ড) কমিটি। সেখানেই জানানো হয়েছে, বিক্রয় কর খাতে আগে কেটে নেওয়া প্রাপ্য বকেয়া এ বার ফেরানো শুরু করবে কেন্দ্র।
সারা দেশে অভিন্ন পণ্য-পরিষেবা কর চালুর লক্ষ্যে ধাপে ধাপে কেন্দ্রীয় বিক্রয় কর তুলে দিতে চেয়েছিল দিল্লি। যার প্রথম ধাপ হিসেবে তার হার ৪ থেকে কমিয়ে করা হয় ২ শতাংশ। কথা ছিল, এর ফলে প্রাপ্য অংশ না পাওয়ায় রাজ্যগুলির যা ক্ষতি হবে, তা মিটিয়ে দেবে কেন্দ্র। কিন্তু পরে যুক্তমূল্য করের (ভ্যাট) হার বাড়ানোর দাওয়াই বাতলে এই ক্ষতিপূরণ আর দিতে চায়নি দিল্লি।
ভুবনেশ্বরে বৈঠকের পর কমিটির চেয়ারম্যান ও বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী সুশীল মোদি টেলিফোনে জানান, ২০১০-’১১ সালের পর ওই বকেয়া আর দেওয়া হয়নি। কিন্তু অধিকাংশ রাজ্যই ভ্যাটের হার বাড়ায়নি। তাই ক্ষতি পুষিয়ে দিতে ওই আর্থিক বছরের ১০০ শতাংশ বকেয়াই মিটিয়ে দেবে কেন্দ্র। পরের দুই অর্থবর্ষের জন্য মেটাবে যথাক্রমে ৭৫% ও ৫০%।
বৈঠকে উপস্থিত পশ্চিমবঙ্গের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রের দাবি, ওই তিন আর্থিক বছরে বিক্রয় কর খাতে রাজ্য মোট রাজস্ব খুইয়েছে ৩,৩৩৮.১৮ কোটি টাকা। যার মধ্যে ২০১০-’১১ সালের পুরো বকেয়া কেন্দ্র মিটিয়ে দিলেও, বাকি দু’বছরের জন্য কেন তা করা হবে না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। |