ক্যাডবেরি বর মিষ্টি কনে
বাঙালির ভুরিভোজে মিষ্টির ভূমিকা অনেকটা বিয়ের পিঁড়িতে বরের মতো। একবারে মুখ্য পাত্র।
নববর্ষ হোক বা বিজয়া দশমী বাঙালির পাতে মিষ্টি বাঁধা। ভোজন রসিক বাঙালিকে ডায়াবেটিসের চোখরাঙানি মিষ্টি থেকে দূরে রাখতে পারবে, এ অপবাদ অতি বড় শত্রুও দিতে পারবে না।
শুধু বাঙালি কেন বাংলার রসগোল্লা আর সন্দেশের গুণগ্রাহী, থুড়ি রসগ্রাহী আসলে ছড়িয়ে আছে বিশ্বের নানা প্রান্তে। কিন্তু বাঙালির রসনা আর মোটেও শুধু রসগোল্লা আর সন্দেশে তৃপ্ত নয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাঙালির পাতে এক দিকে যেমন উঠে এসেছে কাজু বরফির মতো অবাঙালি মিষ্টি, তেমনই অন্যদিকে সাবেকি মিষ্টিতে লেগেছে চকোলেটের মতো নানা স্বাদের ছোঁয়া।
ভোজনরসিক হলেও অনুসন্ধিৎসু জাতি বাঙালি। যে কোনও কিছুই, বিশেষ করে খাবার নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করতে তার জুড়ি মেলা ভার। মিষ্টিও তাই বাদ যায়নি সেই তালিকা থেকে। বাঙালির মিষ্টি নিয়ে এক্সপেরিমেন্টের তালিকায় নবতম সংযোজন ‘ক্যাডবেরি মিষ্টি সেরা সৃষ্টি’। আনন্দবাজার পত্রিকা আর ক্যাডবেরি ইন্ডিয়া লিমিটেডের যৌথ উদ্যোগে এমন এক মজাদার কনসেপ্ট।

মিষ্টির কাকিমা লকেট চট্টোপাধ্যায় মিষ্টিমুখ করাচ্ছেন মিষ্টির বেস্টফ্রেন্ড মিমি চক্রবর্তীকে
সন্দেশ করতে গিয়েই তো বোঝা গিয়েছিল ছানা আর চিনির সহবাস কত মধুর হতে পারে। এ বার তাই আর এক কাঠি ওপরে উঠে মিলিয়ে দেওয়া হল বাঙালির দুই অতি প্রিয় বস্তু মিষ্টি আর ক্যাডবেরিকে। ধুমধাম করে দেওয়া হল তাদের বিয়ে। কয়েক বছর হল শুরু হয়েছে এই মিষ্টি আর ক্যাডবেরিকে মিলিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা। তবে এ বার সেটা আরও মজাদার মোড়কে। শুধু একটা ফিউশন মিষ্টি বানানো নয়। এ হল মিষ্টি আর ক্যাডবেরির বিয়ে।
আর বিয়ে যখন বাঙালি কনের, তার আত্মীয়রাই বা বাদ যায় কেমন করে? তাই হাজির টলিউডের সেলিব্রিটিরা। তাঁদের কেউ হয়েছেন মিষ্টির দাদু তো কেউ হয়েছেন মিষ্টির পিসি।
মিষ্টির দাদু পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। বাঙালির মিষ্টি খাওয়া যে বয়সের বাধা মানে না, পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথাতেই তা স্পষ্ট, “আমার রক্তে এখনও চিনির ঢেউ ওঠেনি। তাই এখনও মিষ্টি খেয়ে যাই সমানে। হ্যাঁ, মিষ্টি খাওয়ায় লাগাম একটু হয়তো পড়েছে। কিন্তু পুরোনো অভ্যাস কি বদলানো যায়? এক কালে কত যে মিষ্টি খেয়েছি বলে শেষ করতে পারব না। এখনও বাড়ি ফেরার পথে মিষ্টি নিয়ে বাড়িতে ঢুকি। ছেলে, বৌ তারিয়ে তারিয়ে খায়। আমিও অবশ্য বাদ যাই না।”
তিনি তো আর শুধু মিষ্টিরসিক নন। মিষ্টির দাদুও বটে। তা কেমন লাগল নাতনির সঙ্গে ক্যাডবেরির বিয়ে? “প্রথমে আমার তো বেশ আপত্তি ছিল। পাত্রের গায়ের যা রং! তবে কী করব? নাতনির পছন্দ। মেনেই নিয়েছিলাম। এখন নব দম্পতির যা জাঁকজমক করা মিল হয়েছে, দেখে মনে হচ্ছে বিয়েতে বাধা দিলে সাঙ্ঘাতিক ভুল হয়ে যেত। যা দেখছি, সবাই যে শুধু এসে তাঁদের আশীর্বাদ করে যাচ্ছে তাই তো নয়। বাড়িতেও নিয়ে যাচ্ছে তাদের। দাদুর পক্ষে এর থেকে আনন্দের আর কী-ই বা হতে পারে,” মজা করে বললেন মিষ্টির দাদু।

মিষ্টির দাদু পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়
সঙ্গে যোগ করলেন তিনি, “আমার আসলে কিন্তু বেশ লাগে এই জোড়াতালি, ফিউশন ব্যাপারটা। মনে আছে একবার নকুড়ের ওখানে এই রকম একটা ফিউশন মিষ্টি খেয়ে খুব ভাল লেগেছিল। কোনও প্রশংসা করিনি কারও কাছে। জানি শুধু মুখের কথা কেউ বিশ্বাস করবে না। সে দিনই তাই ২০০টা মিষ্টি কিনে নিয়ে অন্যদের খাইয়েছিলাম। ব্যাস, এ বার প্রশংসা করতেই পারি। প্রমাণটা যে দিয়ে দিয়েছিলাম হাতে-পেটে।”
কে জানত মিষ্টির পিসি কনীনিকা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও ফেভারিট মিষ্টি? বললেন, “আমার তো মনে হয় দুঃখে হোক কী আনন্দে, যে কোনও সিচুয়েশনেই বাঙালি মিষ্টি খায়। আমিও তাই।”
“মিষ্টি আমারও খুব পছন্দ। বিদেশে গেলেই শুনতে পাই, বাঙালি বলতেই রসগোল্লার কথা এটা আমার বেশ লাগে। আনন্দবাজার আর ক্যাডবেরির এই ক্যাম্পেনটাও আমার বেশ ইন্টারেস্টিং লেগেছে। মিষ্টি আর ক্যাডবেরি দু’টোই তো সবার কাছে প্রিয়। সে বাচ্চা হোক কী বুড়ো, সবার পছন্দ। তাই ওদের ফিউশনটাও যে সাঙ্ঘাতিক হবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আমার তো দারুণ লেগেছে। আর লোকেদের উৎসাহ দেখেও বুঝতে পারছি মিষ্টি আর ক্যাডবেরির বিয়েতে শুধু আমিই একা খুশি নই,” জানালেন মিষ্টির কাকিমা লকেট চট্টোপাধ্যায়।
সত্যিই তাই। ভাল জিনিস, বিশেষ করে ভাল খাবারের কদর বাঙালি ভালই বোঝে। তাই বাঙালি, অবাঙালি, হাফ বাঙালিমিষ্টি নিয়ে বেশ রসে বশে আছে সবাই।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.