তারাবাজি |
|
মিসেস
কোয়েল মল্লিক |
|
এবং মিসেস বিদ্যা বালন। স্বাগত নতুন বৌদের নতুন জগতে! এই পৃথিবীতে
সাত পাকের পরও যাঁদের পদবি অপরিবর্তিত। লিখছেন প্রিয়াঙ্কা দাশগুপ্ত |
বিদ্যা বালন।
সিদ্ধার্থ রায় কপূরকে বিয়ে করেছেন ১৪ ডিসেম্বর।
বিয়ের ঠিক পরেই অনেক জল্পনা-কল্পনা হয়েছিল তিনি পদবি পাল্টাবেন কি না তা নিয়ে। ‘ডার্টি পিকচার’-এর সাফল্যের পর বিদ্যা মজা করে বলেছিলেন, “অ্যায়সা হ্যায়, সারে খানকে নামকে আগে বালন লাগা দেতে হ্যায়।”
তবে বিয়ে তাঁর পদবিতে কোনও প্রভাব ফেলেনি। শুরু করতে চলেছেন ‘শাদি কে সাইড এফেক্ট’ ছবির শুটিং। এ ছবিতে তিনি কোন নাম ব্যবহার করবেন? বিদ্যা বালন-রয় কপূর না কি বিদ্যা কপূর? সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে দিয়ে বলেছেন নতুন সিনেমায় নিজেকে বিদ্যা বালন হিসাবেই মেলে ধরতে চান। বিয়ে মানে হৃদয়ের সম্পর্ক। পদবির সঙ্গে কোনও যোগাযোগ নেই।
ঘরের কাছে কোয়েল মল্লিকও তাই। আর দু’দিনের মধ্যে তাঁর বিয়ে হতে চলেছে নিসপাল সিংহ রানের সঙ্গে। কোয়েল যে বিয়ের পর ছবি করতে খুব ইচ্ছুক এমন নয়। বরং রানে চান, তাঁর স্ত্রী যেন নিয়মিত কাজ চালিয়ে যান। কোয়েল জানেন না শেষ পর্যন্ত ব্যাপারটা কী দাঁড়াবে। কিন্তু এটুকু জানেন, তাঁর পদবি বদলাচ্ছেন না। পাসপোর্ট বা অন্য কোথাও রানে পদবিটা যুক্ত হচ্ছে না। কোয়েল বলছিলেন,“চেঞ্জ করতে গেলে নানান সমস্যা আছে। তাই মল্লিকই থাকল।”
|
কোয়েল মল্লিক |
বিদ্যা বালন |
|
এমনিতে অভিনেত্রীরা বিয়ের পর কোন পদবি ব্যবহার করবেন, সেটা বেশ সমস্যার। বিয়ের আগের পদবিই তো তাঁকে নিজস্ব পরিচিতি দিয়েছে। সেটা পাল্টে ফেলা কি এতই সহজ? ব্যবহারিক সমস্যার কথা ছেড়ে দিলেও, অনেক অভিনেত্রীরই আগের পদবি নিয়ে সংস্কার আছে।
রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় গাঁটছড়া বেঁধেছিলেন ২০০৫-এর নভেম্বর। “আমি কখনও পদবি পাল্টানোর কথা ভাবিনি। ফিল্ম দুনিয়ার লোকেদের এটা একটু অসুবিধাজনক। সবাই আমাকে রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় হিসাবে চেনে। আমার বরের পদবি বসু। রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় বসু লিখলে নামটা বড্ড বড় হয়ে যেত,” রচনা বললেন। |
রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় |
শ্রাবন্তী |
|
সম্প্রতি বেশ কয়েক জন বলিউড অভিনেত্রী কিন্তু তাঁদের পদবির সঙ্গে স্বামীর পদবি যোগ করেছেন। যেমন লারা দত্ত এখন হয়েছেন লারা দত্ত ভূপতি। ঐশ্বর্যা রাই হয়েছেন ঐশ্বর্যা রাই বচ্চন। এমনকী করিনা কপূরও নিজের নামের সঙ্গে সইফের পদবি জুড়ে হয়েছেন করিনা কপূর খান।
ক্লিনিকাল সাইকোলজিস্ট এবং লেখিকা সীমা হিঙ্গোরানির মতে, অনেক সেলিব্রিটির ক্ষেত্রেই পদবি পরিবর্তন নিয়ে নানা মতভেদ হয়। এমনকী সেটা বিবাদের দিকেও গড়ায়। “পুরুষরা মনে করেন তাঁদের স্ত্রীদের পদবি না পাল্টানোটা বেশ খারাপ। অন্য দিকে অভিনেত্রীরাও তাঁদের জনপ্রিয় করে তোলা পরিচিতি হারাতে চান না,” সীমা জানালেন।
টলিউড অভিনেত্রী শ্রাবন্তী বিয়ে করেছেন ২০০৩-এ। অন স্ক্রিন নিজের পদবি ছেঁটে ফেলেছেন তিনি। “ছবির টাইটেল কার্ডে আমি শুধুই শ্রাবন্তী ব্যবহার করি।” কিন্তু তিনি কি জানেন উইকিপিডিয়াতে তাঁর পরিচয় শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায় বিশ্বাস হিসাবে? “নেটে আমার সম্পর্কে অনেক ভুল তথ্য থাকে,” বললেন শ্রাবন্তী।
পাসপোর্টে কী আছে? “ওটা তো আমি চার-পাঁচ বছর আগে করেছি। ওখানে লেখা শ্রাবন্তী বিশ্বাস,” তাঁর পাল্টা জবাব।
তিনি কি ছবির পর্দায় স্বামীর পদবি ব্যবহার না করাটা স্বাধীনতার প্রকাশ বলে মনে করেন? “না না, আমার ও সব মনেই হয়নি একবারও,” বললেন শ্রাবন্তী। রচনা জানালেন, “আমার ক্ষেত্রে সেটা নয়। তবে আমি শুনেছি মেয়েরা বিয়ের আগের পদবি ব্যবহার করে অনেক সময় নিজেদের স্বাধীন মনে করেন।” |
পদবি পাল্টেছেন |
|
করিনা কপূর খান
মাধুরি দীক্ষিত নেনে
ঐশ্বর্যা রাই বচ্চন
লারা দত্ত ভূপতি
মালাইকা অরোরা খান |
|
ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত বিয়ের পর তাঁর পদবি পরিবর্তন করেননি। “এ ব্যাপারে আমার কোনও কুসংস্কার নেই। তবে এটুকু জানি যে, ইন্ডাস্ট্রিতে নিজের জায়গাটা যখন তৈরি করেছিলাম সঞ্জয়ের পদবিটা আমার নামের সঙ্গে যুক্ত ছিল না। এটা ব্যক্তিগত আত্মমর্যাদার ব্যাপার। এখন তো অভিনেত্রীরা স্বামীর পদবি নিজের আগের পদবির সঙ্গে জুড়ে নেন। তাতে নিজের নামের বা অস্তিত্বের গুরুত্ব কিছু কমে না।” সেই ভাবেই ঋতুপর্ণাও ‘অফিসিয়াল’ ক্ষেত্রে নিজের নামের পদবির সঙ্গে স্বামীর পদবি জুড়ে নিয়ে হয়েছেন ঋতুপর্ণা চক্রবর্তী সেনগুপ্ত।
প্রথম বিয়ে করে যে সব অভিনেত্রী স্বামীর পদবি ব্যবহার করেন, তাঁরা যখন ডিভোর্স করে দ্বিতীয় বার বিয়ে করার পরিকল্পনা করেন, তখনই একটা অদ্ভুত অবস্থার সৃষ্টি হয়। “এই সব ক্ষেত্রে তাঁরা প্রথম স্বামীর পদবিটাই ব্যবহার করেন,” বললেন সীমা। আশা ভোঁশলের প্রসঙ্গে টেনে এনে তিনি আরও বললেন, “প্রথম বার বিয়ের পর আশা ওঁর পদবি বদল করেছিলেন। তার পর ডিভোর্স করে দ্বিতীয় বার বিয়েও করেন। কিন্তু কখনও দ্বিতীয় স্বামীর পদবি ব্যবহার করেননি।”
শেকসপিয়র লিখেছিলেন: ‘হোয়াটস ইন এ নেম?’ নামে কী আসে যায়? এখন বোধহয় এটাই বলা যায় পদবিতে কী আসে যায়? |
|