আনন্দplus এক্সক্লুসিভ
নওয়াজের
নতুন কহানি
ফেলুদা নয়। ব্যোমকেশ বক্সী নয়। এটা আনোয়ার গোয়েন্দার আশ্চর্য কাহিনি। পরিচালক বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত। আনোয়ারের ভূমিকায় নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকি। আনন্দ প্লাসেই নওয়াজউদ্দিন বলেছিলেন যে, উনি বাংলার এক বিখ্যাত পরিচালকের সঙ্গে দেখা করতে চলেছেন। তখন পরিচালকের নামটা আমরা প্রকাশ করিনি। যদিও নওয়াজউদ্দিন তখনই বলেছিলেন সেই পরিচালকের কাজের খুব ভক্ত তিনি। দেখাসাক্ষাৎ হয় মুম্বইতে। গল্প করতে করতে আনোয়ারের প্রসঙ্গ উঠে আসে। ঠিক হয় নওয়াজউদ্দিন এ বার বাংলাতে ফিরছেন শুটিং করতে। ‘কহানি’র পর আবার বাংলায় শুটিং। পুলিশ অফিসার খান-এর পরে আবার কলকাতায় ফিরছেন। এ বার ডিটেকটিভ আনোয়ার হিসেবে।
প্রথমে বুদ্ধদেব ঠিক করেছিলেন ছবিটা বাংলাতে করবেন। তবে শেষ পর্যন্ত ঠিক হয়েছে ছবিটা বাংলায় হবে না। হিন্দি ছবিটার নাম ‘আনোয়ার কা অজব কিস্সা’। নওয়াজউদ্দিন কলকাতায় আসছেন সামনের মাসের প্রথমে। কিছু দিন ওয়ার্কশপ করবেন বুদ্ধদেবের সঙ্গে। শুটিং করার জন্য শহরে ফিরবেন মার্চ মাসের শেষ দিকে। আনোয়ার বানানোর গল্প শোনালেন ছবির পরিচালক।
ফয়জল খানকে চেনেন?
না। তিনি কে?
এই যে বললেন নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকিকে আপনার ছবিতে নিচ্ছেন?
হ্যাঁ, নিচ্ছি তো। তবে ফয়জল খান আবার কে?
গ্যাংস্ অব ওয়াসিপুর’ ছবিটা করার পর নওয়াজউদ্দিনকে তো অনেকে ফয়জল খান বলেই চেনেন...
ওহ্, তাই নাকি? আমি জানতাম না। আমি ওকে প্রথম দেখি ‘পিপলি লাইভ’ ছবিতে। দেখেই মনে হয়েছিল যে, ও বেশ উঁচু মাপের অভিনেতা। তার পর দেখেছি ‘কহানি’তে। খুব ভাল লেগেছিল। তার পর যখন ‘আনোয়ারের আশ্চর্য কহানি’ ছবিটা হিন্দিতে বানাব বলে ঠিক করলাম, ওর কথা মনে পড়ল। আমার হিন্দি ছবিটা রিলায়্যান্সের সঙ্গে করার কথা হয়েছিল। আমি জানতাম যে ধরনের চেহারাটা আমি নওয়াজউদ্দিনের মধ্যে পেয়েছি, ঠিক সেটাই দরকার আনোয়ারের জন্য। নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে আনোয়ার। আমার আগের প্রযোজককে বোঝাতে পারলাম না আমার এই চরিত্রের জন্য স্টারের সে ভাবে প্রয়োজন নেই।
‘তলাশ’-এর পর নওয়াজউদ্দিন অভিনেতা-তারকা ক্যাটেগরির মধ্যে পড়ছেন আজকাল...
আমি জানি অল্পবয়সি ছেলেমেয়েদের মধ্যে নওয়াজউদ্দিন খুব জনপ্রিয়। আর ওর অভিনয় ক্ষমতা দারুণ। ভাল ছবি করার খিদেটা আজও রয়েছে ওর মধ্যে। আমার মুম্বইয়ের বাড়িতে এসে দেখাও করেছিল। সাধারণ একটা জিনস্ পরে এসেছিল। বাড়িতে ঢোকা, চেয়ারে বসা, কথা বলা... সব কিছু দেখে আমার মনে হল যে, হিন্দিতে ছবিটা করলে, নওয়াজ একেবারে ঠিক চয়েস হবে। এই মুহূর্তে ভারতীয় চলচ্চিত্রে নওয়াজ একজন অসামান্য অভিনেতা।
আমি বুদ্ধদেবদার ছবির বড় ভক্ত। ওঁর ‘তাহাদের কথা’ আর ‘কালপুরুষ’ দেখে খুব ভাল লেগেছে। আনোয়ারের চরিত্রটাও বেশ অন্য ধরনের। সামনেই আমি তাইল্যান্ডে যাব একটা শুটে। ওখান থেকে ফিরে এসে যাব কলকাতায় ছবির ওয়ার্কশপ করতে
তা শুটিং কি এ বার পুরুলিয়াতে?
না না। খানিকটা কলকাতা। তার পর শিমুলতলাতে। মার্চের শেষের দিকে শু্যটিং। আর আমার দেখাদেখি পুরুলিয়াতে শুটিং করার যে হিড়িক পড়েছে তা দেখে বেশ মজাই লাগে। প্রত্যেক সপ্তাহে শুনি পুরুলিয়াতে কেউ না কেউ শুটিং করছে। আমি বাংলা ছবিকে পুরুলিয়া লোকেশন হিসাবে উপহার দিতে পেরে বেশ খুশি। এর পর হয়তো শিমুলতলাতেও ছুটবে টলিউড। এখন পুরুলিয়া যেতে ছয় ঘণ্টা লাগে। শিমুলতলা যেতে লাগে পাঁচ ঘণ্টা।
ঋতুপর্ণ ঘোষ গোয়েন্দা ছবি করছেন। জানেন?
শুনেছি। উনি ব্যোমকেশ করছেন। খুব ইচ্ছে আছে ছবিটা দেখার। ওঁর জন্য শুভেচ্ছা রইল। সম্প্রতি ওঁর কিছু ছবি দেখে কেউ কেউ বলেছেন যে, উনি একই ধরনের কাজ করছেন। আশা করি সব থেকে বুদ্ধিদীপ্ত ও ঝকঝকে ব্যোমকেশ বানিয়ে উনি এই ধারণাকে ভুল প্রমাণ করবেন।
এত ফেলুদা বা ব্যোমকেশ বক্সী নিয়ে ছবি হচ্ছে। আপনার ছবি কী ভাবে এগুলো থেকে আলাদা?
জানি ফেলুদা আর ব্যোমকেশ নিয়ে ছবি হচ্ছে। ছবিতে মেধার ছাপ থাকলে ভাল লাগবে। আমার ‘আনোয়ার কা অজব কিস্সা’ অন্যান্য থ্রিলারের থেকে আলাদা। আনোয়ার একজন প্রাইভেট ডিটেকটিভ। সবার পিছু নেয়। এক দিন ওর মনে হয় কেমন হয় যদি নিজেকেও ও ফলো করতে শুরু করে দেয়?
নওয়াজউদ্দিনের সঙ্গে আর কাকে নিচ্ছেন?
একজন নায়িকা খুঁজছি, যাকে নওয়াজের সঙ্গে মানাবে। আনোয়ারের থেকেও গরিব ঘরের একটা মেয়ে সে।
কলকাতা থেকে কাউকে নেবেন?
এখনও ঠিক করিনি। ছবিতে মিউজিক করবে আমার কন্যা অলকানন্দা। ও মুম্বইয়ে বেশ কিছু ছবির কাজ করছে। মারাঠি ছবি ‘শালা’র জন্য ও পুরষ্কারও পেয়েছে। ‘জানালা’তে স্বস্তিকার সঙ্গে কাজ করে আমার বেশ ভাল লেগেছে। ও অভিনয়টাও ভাল জানে। তবে স্বস্তিকাকে এই চরিত্রে মানাবে না। লুকটা মেক আপ দিয়েও ঠিক করে দেওয়া যায়। ক্লাসটা মেক আপ দিয়েও আনা যায় না। আরেক জন অভিনেত্রীকেও আমার খুব পছন্দ। অনন্যা চট্টোপাধ্যায়। কেন জানি না ওকে বেশি বাংলা ছবিতে দেখি না। ও একজন খুব শক্তিশালী অভিনেত্রী।
আমি চাই সন্দীপ রায়কে পরিচালক হিসেবে শ্রদ্ধা করতে। একজন জিনিয়াসের পুত্র হিসেবে ওঁকে শ্রদ্ধা করতে চাই। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি যে রায় পরিবারের সৃষ্টিশীলতার প্রবাহ দুর্ভাগ্যবশত সত্যজিৎ রায়েই এসে থেমে গিয়েছে। আমি নিজের মতো করে ফেলুদাও বানাতে চাই। বিশেষ করে ‘বাদশাহী আংটি’। কিন্তু জানি সেটা আমাকে বা আমাদের কাউকেই করতে দেওয়া হবে না
অনন্যার মতোই আর কাউকে আন্ডাররেটেড মনে হয়েছে?
শাশ্বত ভাল অভিনেতা। ‘কহানি’র পরে বেশ নামডাক হয়েছে। আমি আজও মনে করি ওর বাবা, শুভেন্দু কোনও দিন নিজের যোগ্যতা অনুযায়ী রোল পাননি। অসাধারণ অভিনেতা ছিলেন। বুদ্ধিমানও। আর অভিনয়ের জন্য সর্বস্ব দিতে রাজি। এক বার শুটিং করতে গিয়েছি আউটডোরে। শুট করার জন্য আকাশে যে রকম মেঘ চাইছিলাম, কিছুতেই পাচ্ছিলাম না। ওঁকে বললাম আর দু’টো দিন থেকে যাবেন? যদি আবহাওয়া পাল্টে যায়। উনি সঙ্গে সঙ্গে অন্য শুটিং বাতিল করে দিয়ে থেকে গেলেন। কত স্মৃতি শুভেন্দুকে নিয়ে... যেমন...
খুব উঁচু মাপের মানুষ ছিলেন। একবার আমার মা পড়ে গিয়ে পিয়ারলেসে ভতি ছিলেন। আমি খুব চিন্তিত। কিন্তু সিনেমা জগতের কাউকে জানাইনি। পিয়ারলেস হসপিটালের গেটে একদিন দেখি শুভেন্দু। বললেন, আমার মাকে দেখতে এসেছেন। আমাকে অবাক হতে দেখে বললেন, “আমার থেকে কত দিন লুকিয়ে রাখবেন? ভুলে যাবেন না আমি একজন ডাক্তার।” তার পর মাকে দেখতে গেলেন। বিছানায় হাত ধরে মায়ের সঙ্গে কত কথা বললেন।
এক বার গিয়েছি চেরাপুঞ্জিতে শুটিং করতে। তখন মাত্র চারটে ঘর ভাড়া পেয়েছিলাম গোটা ইউনিটের জন্য। ওঁর ঘরেই আরও চারটে খাটে চার জন ইউনিটের মেম্বার। আর খাওয়া বলতে মাছ, মাংস কিছু নেই। শুধু একটা হাতির মাথার সাইজের গোল আলু। এতেই কী খুশি। কোনও স্টারসুলভ আচরণ ছিল না। আমার সঙ্গে অনেক গল্প করতেন। উত্তমকুমার নাকি প্রায়ই ওকে বকতেন বাজার করতে যাওয়ার জন্য। উত্তমকুমারের ধারণা ছিল ওগুলো করলে হয়তো স্টারসুলভ আভিজাত্য চলে যায়। জানি না। তবে এটুকু বিশ্বাস করি যে শুভেন্দু কোনও অংশে সৌমিত্র বা উত্তমের থেকে কম ছিলেন না। মনে পড়ে মৃণালদার প্রথম ছবি ‘আকাশ কুসুম’। সৌমিত্রর বন্ধুর রোলে শুভেন্দু। কী অসাধারণ অভিনয়!
কোনও দিন আফশোস হয় যে উত্তমকুমারের সঙ্গে ছবি করা হল না?
হ্যা। খুব আফশোস হয়। প্রথম ছবি বানিয়ে আমি লন্ডন চলচ্চিত্র উৎসবে আমন্ত্রণ পেয়েছিলাম। এয়ারপোর্টে যাচ্ছি লন্ডনে যাব বলে। হঠাৎ খবর এল উত্তমকুমার নেই।
কোনও বিশেষ চরিত্র আছে যেটা আজও মনে হয় উত্তমকুমার করলে হয়তো বেশ ভাল মানাত?
(একটু ভেবে) ‘কালপুরুষ’-এ মিঠুনের চরিত্র। যদিও মিঠুন অসাধারণ অভিনয় করেছিল ওখানে।
তবে আমার মনে হয় মিঠুন নিজেও অনেক সময় বোঝে না কত বড় মাপের অভিনেতা ও। এই সেদিন পড়লাম যে দেব অন্য ধরনের ছবিতে অভিনয় করতে চাইছে। করলে আমি খুব খুশি হব। তবে এর জন্য নিজেকে আর একটু তৈরি করতে হবে। উত্তমকুমার শুনেছি দিনের পর দিন উৎপল দত্তর বাড়িতে যেতেন শুধুমাত্র কী ভাবে ‘সপ্তপদী’ ছবির ‘ওথেলো’-র সেই ইংরেজি সংলাপগুলোতে লিপ দেবেন সেটা শিখতে।
আর সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়? ওঁর সঙ্গেও তো এখনও কাজ করা হয়নি?
আমি যত বার চেয়েছি কাজ করতে, সব কিছু ঠিকমতো হয়ে ওঠেনি। চেয়েছিলাম ‘কালপুরুষ’ সৌমিত্রকে নিয়ে করতে। তখন উনি ব্যস্ত অন্য ছবির কাজে। ইচ্ছে আছে করার। তবে ওঁর উপযুক্ত চরিত্র দরকার। শুধুমাত্র সৌমিত্রর সঙ্গে কাজ করব বলেই তো যে কোনও একটা চরিত্র ওঁকে দিতে পারি না আমি।
ইন্ডিয়ান প্যানোরামার চেয়ারম্যান ছিলেন। অনেক ছবি দেখলেন। বাংলা ছবি দেখে কী মনে হল?
১৪৬টা ছবি দেখেছি। আমাকে খুব কষ্টের সঙ্গে বলতে হচ্ছে যে, আজকালকার বাংলা ছবি দেশের অন্যান্য জায়গায় কোনও দাগ কাটছে না। কেন? ‘ভূতের ভবিষ্যৎ’ তো হিন্দিতে বানানো হচ্ছে....
আমি জানতাম না। তবে ওটা একমাত্র ছবি যেটা একটা জায়গা তৈরি করতে পেরেছে। ছবিতে বাঙালিয়ানাটা ধরা হয়েছে সুন্দর করে। তবে অন্য ছবিগুলো না ব্যবসা করেছে, না তাদের নিয়ে জাতীয় স্তরে কেউ আলোচনা করেছে। তাতেও দেখি কিছু সংখ্যক বাঙালি পরিচালক কী খুশি! একে অপরকে ভাল বলে। ব্যস্। সেটাও শুধুমাত্র কলকাতাতে। খোঁজ নিয়ে দেখুন। প্রত্যেকটা বাইরের ফেস্টিভ্যালে ছবি পাঠায়। কিন্তু সেগুলো সব জায়গাতেই তো প্রায় বাতিল হয়ে যায়। এই তো পরিস্থিতি! তাও এত আনন্দ! সেদিন আমার বোনঝি বলল ভূতের ছবি দেখতে নিয়ে যেতে। গেলাম। সন্দীপ রায়ের ‘যেখানে ভূতের ভয়’ দেখতে। আমি চাই সন্দীপ রায়কে পরিচালক হিসেবে শ্রদ্ধা করতে। একজন জিনিয়াসের পুত্র হিসেবে আমি ওঁকে শ্রদ্ধা করতে চাই। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি যে রায় পরিবারের সৃষ্টিশীলতার প্রবাহ দুর্ভাগ্যবশত সত্যজিৎ রায়েই এসে থেমে গিয়েছে। দ্য ক্রিয়েটিভ জিনস দ্যাট হ্যাজ বিন ফ্লোয়িং থ্রু দ্য রে ফ্যামিলি থ্রু জেনারেশনস, আনফরচুনেটলি স্টপড্ অ্যাট রে। আজও আমি মাঝে মাঝেই সত্যজিৎ রায়ের ছবিতে ফিরে যাই। আমার বোনঝি না থাকলে আমি কি ওই ছবিটা পুরোটা দেখতাম?
ভূতের ছবি বিদেশেও হয়। যেমন, ‘আঙ্কল বুনমি হু ক্যান রিকল হিস পাস্ট লাইফ’। থাইল্যান্ডের পরিচালক অ্যাপিচ্যাটপং ওয়েরাসেথাকুলের বানানো। ওখানে ভূতেরা প্রেমের কথা বলে। সুখ-দুঃখের কথা বলে। চিন্তা করতে শেখায়। আর এখানে?
তবে এটা কি জানেন যে ‘যেখানে ভূতের ভয়’ ছবিটার বেশ বিক্রি আছে? ফেলুদাগুলো তো সব হিট...
টলিউডের ব্যবসার অঙ্ক নিয়ে বেশি কথা না বলাই ভাল। আর একটা কথা এখানে বলতে চাই। আমার মতো অনেক পরিচালক আছেন, যাঁরা সত্যজিৎ রায়ের গল্প নিয়ে ছবি বানাতে চান। যেমন খগম, চিলেকোঠা, ভুতো। এগুলো নিয়ে কাজ করতে চাই। আমি নিজের মতো করে ফেলুদাও বানাতে চাই। বিশেষ করে ‘বাদশাহী আংটি’। কিন্তু জানি সেটা আমাকে বা আমাদের কাউকেই করতে দেওয়া হবে না। সেটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক।
সন্দীপ রায়ের উত্তর
আর সবার মতোই বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের নিজস্ব মতামত রাখার স্বাধীনতা আছে। তাই আমার ছবি নিয়ে ওঁর মন্তব্যের ব্যাপারে আমি কিছু বলতে চাই না। তবে বাবার ছোট গল্প নিয়ে যে উনি ছবি করতে চান সেটা আমি আগে জানতাম না। বাবার কিছু গল্পের হিন্দি স্বত্ব আমি ইতিমধ্যেই দিয়েছি। খুব স্বাভাবিক কারণেই বাংলাটা দিইনি। আমার ধারণা বাবার ছোট গল্প নিয়ে ছবি বানানো খুব একটা সহজ নয়। কারণ, গল্পগুলো মেদহীন। শেষটা বেশ রোমহর্ষক হয়, ফলে টেনে হিঁচড়ে বাড়ানো মুশকিল।
আচ্ছা উল্টো দিক থেকে উনি যদি বলেন যে, আপনার ছবি করতে অনেক দেরি হয়। দেশে মুক্তি পায় না?
একটাই ছবি মুক্তি পায়নি। আর আমার ছবির বিদেশে একটা বাজার রয়েছে। যেটা এখানে কেউ করতে পারেনি।
দর্শক হিসেবে কোনও ছবি কি আপনাকে টানে না?
তা কেন হবে? অমিতাভ ভট্টাচার্য একটা ছবি করেছেন। ‘কসমিক সেক্স’। ও হয়তো জানে যে ওঁর ছবি এ দেশে মুক্তি নাও পেতে পারে। তবুও বানিয়েছে। সেটা প্রশংসনীয়। আর ওই মেয়েটি যে অভিনয় করেছে ওটাতে। কী শক্তিশালী অভিনেত্রী। সিনেমার জন্য এ ভাবে নিজেকে সম্পূর্ণ ভাবে ক্যামেরার সামনে তুলে ধরাটা খুব কঠিন। আপনি কি ঋ-এর কথা বলছেন?
হ্যা। কেন যে ওকে আরও বেশি ছবিতে দেখি না আমি! অবশ্য ওর স্বামী (লিভ-ইন পার্টনার হবে) কিউ-এর ছবিতে ও কাজ করেছিল বোধহয়। আর একটা ছবিতে বেশ ভাল লেগেছে। সেটা কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘শব্দ’। বেশ একটা অন্য ধরনের ছবি। ভাল লেগেছে দেখে। তবে ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে অনেক ভাল ভাল কাজ হচ্ছে। অস্কার বিজয়ী শব্দযন্ত্রী (সাউন্ড ডিজাইনার) রসুল পুকুট্টি আমাকে একটা ছবি দেখতে বলেছিলেন। ও ওটার প্রযোজক। মাত্র পনেরো লক্ষ টাকা দিয়ে বানিয়েছে।
কী অসাধারণ ছবি! নতুন চিন্তা রয়েছে ছবিটার মধ্যে। দেখুন, আমি ভাল আর সবাই খারাপ, এটা বলাটা তো ঠিক নয়। যেটা দেখে আমার কষ্ট হয় সেটা হল যে এত আত্মতুষ্টিতে কেন আমরা ভুগব, যখন বাস্তব অন্য কথা বলছে!
আশার আলো দেখতে পান?
হ্যা। তা আছে। প্রচুর ছেলে-মেয়ে আছে যারা ভাল কাজ করছে। এই তো সেদিন বি ই কলেজে একটা ফেস্টে কয়েকটা ছবি দেখলাম। তার মধ্যে একটা ছবির নাম ‘সেক্স ইজ এভরিহোয়্যার’। কী অসাধারণ কাজ। হাসতে হাসতে প্রায় পেট ফেটে গেল। এই রকম আরও অনেকেই কাজ করছেন। আমাদের যখন অল্প বয়স ছিল আমরা তখন কবিতা লিখতাম। এখনকার অল্পবয়সি ছেলে-মেয়েরা সিনেমা বানাতে চায়। অনেকেই ভাল করছেন। হয়ত প্রচার পায় না সে ভাবে। তবে এই শহরে আবার সিনেমা বেঁচে উঠবে, এটা আমার বিশ্বাস।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.