নেপালের এক ব্যবসায়ীকে অপহরণ করার অভিযোগে বোলপুর স্টেশন থেকে শিলিগুড়ির দুই বাসিন্দাকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃত সুরেন্দ্রকুমার মিশ্র ও অভিজিৎ বসুকে রবিবার বোলপুর আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক তাঁদের এক দিন ট্রানজিট রিমান্ডের নির্দেশ দিয়েছেন। সরকারী আইনজীবী ফিরোজকুমার পাল বলেন, “বোলপুরের ভারপ্রাপ্ত এসিজেএম সুতপা মল্লিক ধৃতদের জামিনের আবেদন নাকচ করে দিয়েছেন। তাঁদের কাছ থেকে ৫০ লক্ষ ১০ হাজার টাকা উদ্ধার হয়েছে।” পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে অপহৃত ব্যবসায়ীর নাম বিষাণ রাঠি। গত ১০ জানুয়ারি থেকে তাঁর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।
বীরভূমের পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত সুরেন্দ্র উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা। তিনি থাকতেন শিলিগুড়িতে। অভিজিৎ শিলিগুড়ির প্রধাননগর থানার নিবেদিতা রোডেরই বাসিন্দা। অপহৃত ব্যবসায়ীকে অবশ্য পুলিশ উদ্ধার করতে পারেনি। শিলিগুড়ি কমিশনারেটের এক পুলিশ কর্তা বলেন, “অপহৃত ব্যবসায়ীর খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।” শিলিগুড়ি পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বিষাণবাবুকে অপহরণ করা হয়েছে বলে ১০ জানুয়ারি হরিবংশ রাঠি নামে এক ব্যক্তি অভিযোগ করেছিলেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নামে পুলিশ। পুলিশ জানতে পারে, অপহরণকারীরা ওই ব্যবসায়ীর বাড়িতে ফোন করে তিন দিনের মধ্যে সাড়ে ৩ কোটি টাকা মুক্তিপণ দিতে হবে বলে দাবি করে। তার পরে কয়েক দফায় দুষ্কৃতীদের সঙ্গে ফোনে কথা হয় ওই ব্যবসায়ীর পরিবারের। অবশেষে, ২৫ জানুয়ারি দুপুরে ফোন করে দুষ্কৃতীরা তিন ঘন্টার মধ্যে ৫০ লক্ষ টাকা নিয়ে মাটিগাড়ায় উত্তরায়ণের একটি রেস্তোরাঁর পিছনে ওই ব্যবসায়ীর পরিবারের লোকদের হাজির হতে বলে। পরিকল্পনা মতো সেখানেই ব্যবসায়ীর আত্মীয়ের কাছ থেকে টাকা নিয়ে এনজেপিতে যায় তারা। সেখান থেকে দার্জিলিং মেলে চেপে কলকাতার দিকে রওনা হয়। ঘটনাটি জানতে পেরে শিলিগুড়ি কমিশনারেট থেকে বীরভূম জেলা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। বীরভূমের পুলিশ সুপার মুরলীধর শর্মার নির্দেশে ২৬ জানুয়ারি ভোরে পুলিশ দার্জিলিং মেলে হানা দিয়ে সুরেন্দ্র ও অভিজিৎকে গ্রেফতার করে। তাদের কাছ থেকে নগদ টাকা, ৫টি মোবাইল, জলপাইগুড়ি থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত দু’টি টিকিট উদ্ধার হয়েছে। ওই দু’টি টিকিট সুরেন্দ্র-র নামে কাটা। ২৬ জানুয়ারি রাতেই শিলিগুড়ি থেকে এসআই শান্তনু সরকারের নেতৃত্বে একটি দল বোলপুরে আসে। |