লোকসভা ভোটের পরে দেশের সরকার গড়ার চাবিকাঠি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে থাকবে বলে মনে করছে তৃণমূল। নিউটাউনের চিনার পার্কে রবিবার দলীয় জনসভায় তৃণমূল সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী বলেন, লোকসভা ভোটের পর জাতীয় রাজনীতিতে তাঁদের দলের গুরুত্ব আরও বাড়বে। তাঁর বক্তব্য, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী হবেন, এখনই বলছি না। তবে আগামী লোকসভা ভোটের পর সরকার গড়ার চাবিকাঠি তাঁর হাতেই থাকবে।”
চিনার পার্কেই ১৪ জানুয়ারি সভা করেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। তারই পাল্টা কর্মসূচি হিসাবে বুদ্ধবাবুর সভাস্থলের উল্টো দিকে সভা করে তৃণমূল। সেখানে শুভেন্দু সরকার গঠনে মমতার ভূমিকা নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করার পাশাপাশি বুদ্ধবাবু, প্রাক্তন আবাসন মন্ত্রী গৌতম দেবকে কটাক্ষ করেন। দীপা দাশমুন্সি সম্পর্কে কটাক্ষ করতে গিয়ে শালীনতার পরোয়া করেননি বিধায়ক শীলভদ্র দত্ত। ইদানীং মমতা প্রায়ই সংবাদমাধ্যমকে আক্রমণ করছেন। তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়ও এ দিনের সভায় বলেন, “যারা কুৎসা করছে, তাদের সাংবাদিকদের মারধর করতে বলছি না। কিন্তু তাদের বয়কট করুন! ওই সব কাগজ পড়বেন না। ওই সব চ্যানেল দেখবেন না!”
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ মুকুল রায়ের দাবি, মহিলারা এ রাজ্যেই সব চেয়ে বেশি সুরক্ষিত। তাঁর কথায়, “দিল্লিকে তো ধর্ষণের রাজধানী বলতে ইচ্ছে করে! দিল্লিতে বছরে ২৭৬টা, মুম্বইয়ে বছরে ২১৭টা, চেন্নাইয়ে বছরে ১১৭টা ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। সেখানে কলকাতায় ওই সংখ্যা ৫০-এরও কম। তবে ওই সংখ্যাকে শূন্যে নিয়ে যেতে হবে।”
খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, শ্রমমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু, বিধায়ক সব্যসাচী দত্ত, সুজিত বসু এবং দলের শ্রমিক সংগঠনের নেত্রী দোলা সেনও ওই সভায় ছিলেন। মুকুলবাবুর সতর্ক-বার্তার পরে জ্যোতিপ্রিয়বাবু আর নিজের রেকর্ড নিজেই ভাঙার পথে যাননি! তবে তাঁর যে সব মন্তব্য বিতর্ক তৈরি করেছে, তা নিয়ে এ দিনই অশোকনগরে বামফ্রন্টের এক সভায় প্রাক্তন মন্ত্রী আব্দুস সাত্তার বলেন, “কী নাম! নামের আগে জ্যোতি! জ্যোতি বসুকে দেখেছি। ইনি বলছেন, চা খাবেন না, রাস্তায় চলবেন না। অনেকেই ভাবছেন, উল্টে কেউটে-গোখরোকেই নিয়ে এসেছেন!”
রবিবার হলেও চিনার পার্কে তৃণমূলের সভার জেরে এ দিন বেলা আড়াইটে থেকে প্রবল যানজট হয়। শ্রোতাদের অনেকেও ওই রাস্তায় দাঁড়িয়ে পড়েন। |