সাপ-লুডোর মরসুমে ফের মই ধরেছে ঠান্ডা
নীল আকাশে ঝকঝকে রোদ। সঙ্গে উত্তুরে হাওয়ার কনকনানি। শেষ লগ্নে এসে আবার ঝড় শীতের ব্যাটে!
উত্তর ও মধ্য ভারত জুড়ে শৈত্যপ্রবাহ চলছে। খাস লখনউয়ে পারদ নেমে গিয়েছে ১.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে! তার আঁচে কাঁপছে বাংলাও। রবিবারই দক্ষিণবঙ্গের তিন জেলায় শৈত্যপ্রবাহের সতর্কতা জারি করেছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর।
কলকাতা মহানগরে আপাতত শৈত্যপ্রবাহের তেমন সম্ভাবনা না-থাকলেও আপাতত ঠান্ডার দাপট বজায় থাকবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছেন আবহবিদেরা।
আবহবিদরা এ-ও বলছেন, এ বার গোটা মরসুম জুড়ে শীত সাপলুডোর মতো উঠেছে-পড়েছে।
কখনও হাড়-কাঁপানো ঠান্ডায় জুবুথুবু দশা, কখনও উচ্চচাপের ধাক্কায় মাঝ-জানুয়ারিতেও প্রায় বসন্তের আমেজ! শীত পড়েওছে কিছুটা আগে। বস্তুত বহু বছর পরে এ বার কালীপুজোর রাতে হিমের পরশ পেয়েছেন বঙ্গবাসী। ডিসেম্বরের গোড়ায় তো দক্ষিণবঙ্গে জাঁকিয়ে ঠান্ডা।
আলিপুরের তথ্য বলছে, চলতি মরসুমে এ পর্যন্ত দু’বার শৈত্যপ্রবাহের কবলে পড়েছে দক্ষিণবঙ্গ। প্রথম বার ডিসেম্বরের শেষে। তখন অবশ্য কলকাতায় কোনও প্রভাব পড়েনি। কিন্তু ৮ জানুয়ারির শৈত্যপ্রবাহে মহানগর ঘায়েল হয়ে পড়ে। কলকাতায় সে দিনের পারদ-পতন লন্ডনকেও হার মানিয়েছিল! অথচ তার পরপরই তাপমাত্রার ঊর্ধ্বগতিতে শীতের চেনা ছবিটা প্রায় উধাও! কেন এমন ওঠা-পড়া?
আবহবিদদের ব্যাখ্যা: ভারতের শীত-ভাগ্য নির্ভর করে সাইবেরিয়া থেকে বয়ে আসা শীতল বাতাসের উপরে, যা কি না পশ্চিমী ঝঞ্ঝার চেহারা নিয়ে কাশ্মীরে তুষারপাত ঘটায়। ওই ঝঞ্ঝা সমতলে নেমে এলে উত্তর, মধ্য ও পূর্ব ভারতে শীতের দাপট বাড়ে। এ বার সাইবেরিয়াতেই বায়ুপ্রবাহে পরিবর্তন ঘটেছে। ফলে কাশ্মীরে হাজির হয়েছে একের পর এক পশ্চিমী ঝঞ্ঝা। আর তা সমতলে নেমে এসে দফায় দফায় ঠান্ডা বাড়িয়েছে। উল্টো দিকে সেই শীতল বায়ুর জেরেই উচ্চচাপ বলয় তৈরি হয়ে কখনও পাঁচিল তুলে দিয়েছে উত্তুরে হাওয়ার সামনে। তাতে শীতের ব্যাটে রান ওঠার গতি শ্লথ হয়ে পড়েছে।
এ দিনের কী পরিস্থিতি?
শীত কাহন
কোথায় কত*
বাঁকুড়া ৭.৬ (-৫)
শ্রীনিকেতন ৬.৫ (-৬)
পানাগড় ৬.৬ (-৫)
কলকাতা ১১.৫ (-৩)
মেদিনীপুর ১০.১ (-৪)
মালদহ ৯.৮ (-৩)
কোচবিহার ৫.১ (-৫)
জলপাইগুড়ি ৭.০ (-৪)
* রবিবারের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা, ডিগ্রি সেলসিয়াসে
(বন্ধনীতে, স্বাভাবিকের তুলনায় কত কম)
মৌসম ভবনের তথ্য: মধ্যপ্রদেশ-ছত্তীসগঢ়-উত্তরপ্রদেশ-বিহার-পশ্চিমবঙ্গে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা স্বাভাবিকের ৪-৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস নীচে। এ দিন দেশের সমতলে সর্বাধিক কম তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে উত্তরপ্রদেশের বালিয়ায় ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পূর্ব ভারতে পারদ সবচেয়ে নীচে ছিল বিহারের গয়ায় ৫ ডিগ্রি। আলিপুর জানিয়েছে, রবিবার কলকাতা ও আশপাশে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১.৫ ডিগ্রি, স্বাভাবিকের চার ডিগ্রি কম। বাঁকুড়া-বীরভূমে যথাক্রমে ৭.৬ ও ৬.৫ ডিগ্রি। “কলকাতায় শীত রয়েছে বটে, তবে মাঘের বাঘা শীত যাকে বলে, তা মালুম হচ্ছে পশ্চিমের জেলাগুলোয়। আজ, সোমবার বীরভূম-বাঁকুড়া-পুরুলিয়ায় শৈত্যপ্রবাহ বইতে পারে।” বলছেন এক আবহবিদ। উত্তরবঙ্গে স্বভাবতই শীতের কামড় ভাল মতো টের পাওয়া যাচ্ছে। আগামী ক’দিন উত্তরবঙ্গে কুয়াশার দাপটও চলবে বলে আলিপুরের পূর্বাভাস।
ঠান্ডার মেয়াদ আর কত দিন?
আবহবিদদের বক্তব্য: শীতের দৌড় প্রায় শেষ পর্যায়ে পৌঁছেছে। আগামী দিন কয়েক কলকাতা ও আশপাশে তাপমাত্রার খুব বেশি হেরফের হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তবে রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলে উত্তুরে হাওয়ার দাপট থাকবে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.