|
|
|
|
ভোটের কৌশল নিয়ে আলোচনা রাজনাথ-মোদীর |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
জাতীয় রাজনীতিতে বড় দায়িত্ব পাওয়ার আগে নতুন সভাপতি রাজনাথ সিংহের সঙ্গে লোকসভা নির্বাচনের রূপরেখা নিয়ে সবিস্তার আলোচনা করলেন নরেন্দ্র মোদী। এ দিন বৈঠকে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনগুলি তো বটেই, ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটের কৌশল নিয়েও কথা হয়। গোটা দেশজুড়ে প্রচারে মোদীই হতে চলেছেন প্রধান মুখ। তিনি রাজনাথকে এ দিন জানিয়েওছেন, দল যে দায়িত্ব দেবে, তা নিতে তিনি তৈরি। পরে সাংবাদিকদেরও তিনি জানান, “দেশের সেবা করতে আমি তৈরি।”
দু’দিন আগেই রাজনাথ ইঙ্গিত দেন, শীঘ্রই জাতীয় রাজনীতিতে বড় ভূমিকা দেওয়া হবে মোদীকে। মোদী-সহ দলের অন্য নেতার সঙ্গেও তিনি কথা বলবেন। এবিপি নিউজ-এসি নিয়েলসেনের জনমত সমীক্ষার ফলে দেখা গিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে রাহুল গাঁধীকে পিছনে ফেলে দিয়েছেন মোদী। তার পরেই ঝটিকা সফরে মোদী আজ দিল্লি আসেন নতুন সভাপতিকে অভিনন্দন জানাতে।
এই বৈঠক নিছক সৌজন্য বিনিময়ে সীমিত ছিল না। দিল্লিতে রাজনাথের বাসভবনে প্রায় দু’ঘণ্টার মধ্যহ্নভোজ বৈঠকে লোকসভা নির্বাচনে দলের রণকৌশল নিয়ে সবিস্তারে আলোচনা হয় দু’জনের। এই দু’জনের নেতৃত্বেই এই ভোট লড়বে বিজেপি।
বৈঠকের পর মোদী ও রাজনাথ দু’জনই জানিয়েছেন, “২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচন নিয়ে সবিস্তার আলোচনা হয়েছে।” আরও এক ধাপ এগিয়ে মোদী জানিয়েছেন, “দেশের কী করে সেবা করা যায়, তা নিয়েও রাজনাথের সঙ্গে কথা হয়েছে।” এখন প্রশ্ন, লোকসভা ভোটের আগে দলের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে মোদীর নাম কি ঘোষণা করবে বিজেপি? কারণ, তেমন কিছু হলে বিজেপির বিপত্তিও কম নয়। |
|
রাজনাথের দরজায়। ছবি: পিটিআই |
এর ফলে নীতীশ কুমারের মতো শরিক দল বেঁকে বসার আশঙ্কা ষোলো আনা। তাই আপাতত মোদীকে প্রচারের মুখ করার চিন্তাভাবনা চলছে। অরুণ জেটলি যাতে তাঁর বন্ধু নীতীশকে বোঝান, সে জন্যও তাঁকে অনুরোধ জানিয়েছেন রাজনাথ। মোদীর সঙ্গে বৈঠকের পরে আগামী সপ্তাহে এনডিএ নেতাদের সঙ্গেও বৈঠকে বসতে চাইছেন রাজনাথ।
এ দিন শুধু মোদীকে প্রচারের প্রধান মুখ করাই নয়, তাঁকে দলের সংসদীয় বোর্ডে সামিল করার প্রস্তাব নিয়েও আলোচনা হয়। এর আগে রাজনাথ যখন সভাপতি ছিলেন, সেই সময় মোদী সংসদীয় বোর্ডের সদস্য ছিলেন। কিন্তু গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী কেন সংসদীয় বোর্ডের সদস্য থাকবেন, এই প্রশ্ন তুলে তখন মোদীকে সেখান থেকে সরিয়ে দিয়েছিলেন সঙ্ঘ-ঘনিষ্ঠ রাজনাথই। এখন সঙ্ঘ নেতৃত্বই বুঝতে পারছেন, মোদী ছাড়া বিজেপির গতি নেই। তাই জাতীয় রাজনীতিতে তাঁর গুরুত্ব বাড়াতে মোদীকে ফের সংসদীয় বোর্ডের সদস্য করা হতে পারে। রাজনাথও গত কয়েক বছরে মোদীর সঙ্গে সম্পর্ক ভাল করেছেন। মোদীও রাজনাথের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেছেন, “তিনি গুজরাত বিধানসভা নির্বাচনে প্রচার করেছেন। এমনকী, গুজরাতে বিবেকানন্দ যুব বিকাশ যাত্রার সূচনাও করেছেন।”
বিজেপির সদ্য প্রাক্তন সভাপতি নিতিন গডকড়ীর আমলে মোদীর সঙ্গে তাঁর টানাপোড়েনে সংগঠনের যে ক্ষতি হয়েছিল, তাতে প্রলেপ দিতেও তৎপরতা শুরু হয়েছে। মোদী-বিরোধী সঞ্জয় জোশীকে তাঁর চাপেই সরাতে বাধ্য হন গডকড়ী। এখন প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে মোদীর পথ পরিষ্কার হয়ে যাওয়ার পরে সঙ্ঘ চাইছে জোশীকে বিজেপিতে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ফিরিয়ে আনতে। তার বড় কারণ, সঞ্জয় জোশীর সাংগঠনিক ক্ষমতা রয়েছে। সভাপতি হওয়ার পরে রাজনাথের শিরে কয়েকটি বড় রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের সংক্রান্তি। দেড় বছর বাদে রয়েছে লোকসভা ভোটও। রাজনাথ মনে করছেন, এই সব নির্বাচনে যদি জয় পেতে হয়, তা হলে এমন কাউকে দায়িত্ব দিতে হবে, যাঁর সাংগঠনিক ক্ষমতা ভাল। সে কারণে এই বিষয়টি নিয়েও রাজনাথ আজ কথা বলেন নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে। |
|
|
|
|
|