নির্বিকার প্রশাসন
তৃণমূলে কাজিয়া, স্কুল বন্ধ পটাশপুরে
গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে গত শনিবার স্কুলে তালা ঝুলিয়েছিলেন তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান। পাঁচ দিন কেটে গেলেও সেই তালা খুলতে উদ্যোগী হল না কেউ। থানা, প্রশাসন, বিরোধী সিপিএমহাত গুটিয়ে বসে সকলে। বুধবার সকালে তাই পটাশপুরের অমরপুর হীরালাল বিদ্যা নিকেতনের বাইরেই নেতাজির ছবিতে মালা দিলেন শিক্ষকেরা। কবে আবার ক্লাস করতে পারবে জানা নেই ছ’শোরও বেশি ছাত্র-ছাত্রীর। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পটাশপুর ১ ব্লকের গোকুলপুর পঞ্চায়েতের অমরপুর হীরালাল বিদ্যা নিকেতনে মূল সমস্যাটা পরিচালন সমিতির ক্ষমতা দখল নিয়ে। স্কুলের পরিচালন সমিতির সম্পাদক পদে কে বসবেন, তা নিয়ে তৃণমূলেরই দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে গণ্ডগোল চলছে কয়েকদিন ধরে।
তালাবন্ধ স্কুল। —নিজস্ব চিত্র
গত শনিবার ঠিক মতো ক্লাস না হওয়া, দুর্নীতি-সহ বিবিধ অভিযোগ তুলে স্কুলে চড়াও হন পঞ্চায়েত প্রধান রতিকান্ত বেরা। সঙ্গে পরিচালন সমিতিরই এক সদস্য-সহ জনা তিরিশেক অনুগামী। ক্লাসে-ক্লাসে গিয়ে ছুটি ঘোষণা করে দেন তৃণমূলের লোকেরা। ভাঙচুর চালিয়ে শিক্ষকদের তালাবন্দি করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ এসে শিক্ষকদের উদ্ধার করলেও পরে ফের স্কুলের অফিসঘরে তালা ঝুলিয়ে দেন প্রধান। রবিবার ছুটি ছিল। সোমবার স্কুলে এসে শিক্ষকেরা দেখেন তখনও তালা ঝুলছে। প্রধানের অনুগামী কয়েকজন মাঠে বসে। অনুরোধ করার পরেও তালা খুলতে রাজি হননি তাঁরা। থানায় গিয়ে এ বার লিখিত অভিযোগ জানান শিক্ষকেরা। স্কুল বিদ্যালয় পরিদর্শক থেকে শুরু করে বিডিও, মহকুমাশাসকপ্রশাসনের সমস্ত স্তরেই দরবার করেন তাঁরা। কিন্তু মঙ্গলবারও তালা খুলতে উদ্যোগী হয়নি কেউ। বুধবারও বন্ধ।
পুলিশ-প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না কেন?
শনিবার থেকে ঘটনাক্রম জানার পরেও পটাশপুর থানার ওসি সুধাংশু লায়েকের জবাব, “আমাদের কেউ তালা খুলতে বলেনি।” আর পূর্ব মেদিনীপুর জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক সুবোধ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এটা মূলত রাজনৈতিক সমস্যা। তাই রাজনৈতিক দিক থেকেই ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।” নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার এক তৃণমূল নেতা জানালেন, জোর করে তালা ভাঙতে গেলে গ্রামে সংঘর্ষ লেগে যেতে পারে। তাই প্রধানের বিরোধী গোষ্ঠী চুপ করে আছে। সুযোগ বুঝে মজা দেখছে সিপিএম। দিনের পর দিন স্কুল বন্ধ থাকায় ক্ষোভ ছড়িয়েছে পড়ুয়া ও অভিভাবকদের মধ্যে। তাতে অবশ্য যায় আসে না তৃণমূল প্রধানের। প্রধান রতিকান্তবাবুর কথায়, “দীর্ঘ দিন ধরে অনিয়ম ও অব্যবস্থায় স্কুলের অনেক ক্ষতি হয়েছে। বড় ক্ষতি আটকাতে কম ক্ষতি (স্কুল বন্ধ থাকা) মেনে নেওয়াই যায়।” কী কী অনিয়ম হয়েছে সুনির্দিষ্ট ভাবে জানতে চাইলে অবশ্য চুপ করে যান প্রধান। সব শুনে স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক জ্যোতির্ময় কর বৃহস্পতিবারই স্কুল খোলা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বিমান পয়ড়্যা বলেন, “বৃহস্পতি, শুক্র, শনিবার পূর্ব-নির্ধারিত ছুটি ছিল। কিন্তু প্রশাসন তালা খোলার ব্যবস্থা করলে আমরা ছুটি বাতিল করে দেব।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.