|
দাপট। মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। ডিসেম্বর ’১০ |
‘ভুল ধরলে রাজরোষে পড়তে হবে...’ এবং ‘তিনি ‘সাধারণ’...’ (১৬-১) দুটি চিঠির মধ্যে একটিকে মোটা দাগে চিহ্নিত করা হয়েছে। কিন্তু দ্বিতীয় চিঠিটি অধিকতর যুক্তিসম্মত বলেই মনে হয়। সি পি এম তথা বামফ্রন্ট আমলে আমরা যারা সি পি এম বিরোধী ছিলাম তাদের পরিচয় গোপন করে রাখতে হত। আর তাদের সংখ্যা যে, খুব কম করে বললে, গরিষ্ঠ ছিল, সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা প্রমাণ হয়ে গেছে। আর যদি সে ধারণা ঠিক হয়, তবে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনেও সে দৃশ্যের পরিবর্তন হবে না বলেই মনে হয়। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য থেকে অন্য সমস্ত ‘গণতান্ত্রিক’ মুখ্যমন্ত্রী তো সব বিরোধিতাকে ‘গণতন্ত্রের জয়’ বলে আদর করে লালন করেছেন! ‘সরল’ প্রতিবাদী আচরণের প্রতি সকলেই তো সহ্যের পরাকাষ্ঠা রচনা করতেন!
প্রসাদরঞ্জন রায় স্বরাষ্ট্রসচিব হিসাবে সরকারের মুখপাত্র ছিলেন সংবাদমাধ্যমের কাছে। এর অর্থ এই নয় যে, সরকারের প্রত্যেক উচ্চপদস্থ কর্তা সরাসরি প্রেসের সঙ্গে কথা বলবেন। সরকারি কর্মচারীদের একটি আচরণবিধি মেনে চলতে হয়। মিলিটারি এবং পুলিশের ক্ষেত্রে সেটা আরও প্রযোজ্য। এক জন পুলিশ অফিসার যখন লক্ষ করেন, তাঁর অনুসন্ধানের ফল মুখ্যমন্ত্রীর কথার সম্পূর্ণ বিপরীত, দায়িত্বশীল পুলিশ কর্তা হিসাবে তখন তিনি তা মুখ্যমন্ত্রীকে জানাবেন, না প্রেসকে?
আলোক চট্টোপাধ্যায়। সল্টলেক, কলকাতা-৯৭
|
ভুঁইফোঁড় আর্থিক সংস্থাগুলির দাপটে রাজ্যে স্বল্প সঞ্চয় কমছে। অথচ এই নিয়ে রাজ্য সরকারের কোনও হেলদোল নেই অভিযোগ করে প্রাক্তন সেচমন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা মানস ভুঁইয়া জানিয়েছেন, গত বছর স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পে রাজ্য থেকে সাড়ে ছয় হাজার কোটি টাকা জমা হয়েছিল। এ বছর মাত্র ১৪৪ কোটি টাকা জমা হয়েছে (‘ভুঁইফোঁড় অর্থলগ্নি সংস্থা...’, ২৩-১২)। স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পে কম অর্থ সংগৃহীত হওয়ার জন্য ভুঁইফোঁড় সংস্থাগুলি যতটা না দায়ী, তার চেয়ে বেশি দায়ী কেন্দ্রীয় সরকারের নীতি। পোস্ট অফিসে টাকা রাখলে আগে বিভিন্ন ক্যাশ সার্টিফিকেট পাওয়া যেত। এখন জাতীয় সঞ্চয় সার্টিফিকেট (এন এস সি) ছাড়া আর কোনও প্রকল্প নেই। এন এস সি-তে টাকা রাখেন চাকুরিজীবীরাই, কারণ ২০ শতাংশ কর ছাড় পাওয়া যায়। সাধারণ মানুষ কেন এন এস সি কিনতে যাবেন? আবার এই এন এস সি কেনার জন্য কত ঝামেলা! সরাসরি ১০,০০০ টাকা পর্যন্ত এন এস সি কেনা যায়। তার বেশি অঙ্কের জন্য পোস্ট অফিস সরাসরি টাকা নেবে না। দিতে হবে চেকে। গ্রামের মানুষের এখন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থাকলেও অনেকেরই চেক-ব্যবস্থা নেই। ফলে, সাধারণ মানুষের পোস্ট অফিস থেকে ক্যাশ সার্টিফিকেট কেনার ইচ্ছা থাকলেও সেখানে যেতে ভয় পান।
পোস্ট অফিসের বিভিন্ন স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পে টাকা রাখার ব্যাপারে গ্রাহকদের উৎসাহিত করতেন এজেন্টরা। তাঁরা গ্রাহকদের বাড়ি পৌঁছে বুঝিয়ে ক্যাশ সার্টিফিকেট কিনতে বলতেন। এখন এজেন্টরা আর এ ব্যাপারে এগিয়ে আসছেন না। কারণ, আগে এজেন্টরা ১০০ টাকায় ১ টাকা কমিশন পেতেন। এখন পাচ্ছেন মাত্র ৫০ পয়সা। ফলে, তাঁরা এখন আর পোস্ট অফিসে টাকা রাখতে গ্রাহকদের উৎসাহিত করেন না। এই সব কারণে মানুষ পোস্ট অফিসে টাকা রাখার ব্যাপারে আর আগ্রহী হচ্ছেন না। ফলে, বাড়বাড়ন্ত হচ্ছে বিভিন্ন ভুঁইফোঁড় সংস্থাগুলির।
রতন চক্রবর্তী। উত্তর হাবড়া, উত্তর চব্বিশ পরগনা |