ডিভিসি ক্যানালের পাশ থেকে উদ্ধার হল এক যুবকের দেহ। মঙ্গলবার রাতে বর্ধমানের কুড়মুনের কাছে দেহটি মেলে। পুলিশ জানায়, মৃতের নাম শেখ সফিক (৩২)। বাড়ি মঙ্গলকোটের পূর্ব ন’পাড়া গ্রামে। মৃতের আত্মীয়দের অভিযোগ, তৃণমূল কর্মী সফিককে দলেরই একটি গোষ্ঠীর লোকজন খুন করেছে। তৃণমূল নেতৃত্বের যদিও দাবি, এই ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই। পুলিশ জানায়, ঘটনার তদন্ত চলছে।
মৃতের স্ত্রী হামিদা বিবি জানান, ভাঙাচোরা জিনিস কিনে তা বিক্রির কাজ করতেন সফিক। ২১ জানুয়ারি তিনি ব্যবসার প্রয়োজনে বর্ধমানে যান। আর বাড়ি ফেরেননি। হামিদা বিবির অভিযোগ, “ফেরার সময়ে বর্ধমানের হাটুদেওয়ান পীরতলার কাছ থেকে আমার স্বামীকে অপহরণ করা হয়। সে দিন তাঁর মোবাইলে ফোন করতে গ্রামের জিয়ার মল্লিক ফোন ধরে স্বামীকে খুন করার হুমকি দেন। পরে ফের ফোন করলে বলা হয়, স্বামী ভাতারের নরজায় রয়েছেন। তাঁকে খুন করা হবে বলে আবারও হুমকি দেওয়া হয়।” |
হামিদা বিবি আরও অভিযোগ করেন, কয়েক দিন আগেই গ্রামে তৃণমূলের দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়। তাঁর স্বামী গ্রামের তৃণমূল নেতা কাশেম কাজীর অনুগামী। তিনিও গোলমালে জড়িয়ে পড়েন। তাই জিয়ার মল্লিক-সহ অন্য গোষ্ঠীর লোকজন তাঁর স্বামীকে খুন করেছে। মৃতের আত্মীয় শেখ মমিজুল, হাফিজা বেগমদেরও দাবি, “গ্রামে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই খুন হতে হয়েছে সফিককে।”
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পূর্ব ন’পাড়ায় তৃণমূলের গ্রাম কমিটির সভাপতি কাশেম কাজী ও দলের এক সময়ের বিধানসভা ভোটের প্রার্থী সৈয়দ আবুল বাসেদ শেখ ওরফে বাসু মাস্টারের অনুগামীদের মধ্যে বিবাদ রয়েছে। দু’পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে খড়ের পালুইয়ে আগুন লাগানোর অভিযোগ তোলে। দিন কয়েক আগে কাশেম কাজীর বাড়িতে বোমাবাজিও হয় বলে অভিযোগ। গত শনিবার কাশেম কাজীর লোকজনের বিরুদ্ধে আবুল বাসেদের অনুগামী মোজাহার শেখকে মারধরের অভিযোগে মঙ্গলকোটের বটতলায় পথ অবরোধ করা হয়। ভাঙচুর হয় পুলিশের গাড়িও। কাশেম কাজীর অভিযোগ, “ওই ঘটনার জেরেই পূর্ব পরিকল্পনা মাফিক সফিককে বাস থেকে নামিয়ে খুন করা হয়েছে।”
আবুল বাসেদের অবশ্য পাল্টা দাবি, “নিহত ব্যক্তি পূর্ব ন’পাড়ায় নয়, ভাতার থানার সিমনগর গ্রামে শ্বশুরবাড়িতে থাকতেন। এই ঘটনার সঙ্গে আমরা জড়িত নয়।” তৃণমূলের মঙ্গলকোট ব্লক সভাপতি অপূর্ব চৌধুরীরও বক্তব্য, “এই ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলের কোনও যোগ নেই।” জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা জানান, খুনের অভিযোগে জিয়ার মল্লিক-সহ কয়েক জনের খোঁজ চলছে। |