কেন্দ্র তেলেঙ্গানাকে আলাদা রাজ্যের স্বীকৃতি দিলে গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে দার্জিলিং পাহাড়েও আন্দোলনের তীব্রতা বাড়াবে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। বিধায়ক সহ সব জনপ্রতিনিধিরা ইস্তফা দেবেন বলেও হুমকি দিলেন তাঁরা। রবিবার দুপুরে দার্জিলিঙের চকবাজারে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার ডাকা জনসভায় কালিম্পঙের বিধায়ক হরকাবাহাদুর ছেত্রী বলেন, “যা শুনতে পাচ্ছি, তাতে কেন্দ্র পৃথক তেলেঙ্গানা রাজ্য গড়ার দিকে এগোচ্ছে। তা হলে গোর্খাল্যান্ডের দাবি মানা হবে না কেন?”
তাঁর কথায়, “এখন আমরা গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে মিটিং-মিছিল করছি। আগামী দিনে আন্দোলনে গতি আনতে বিধায়ক পদ থেকেও ইস্তফা দেব। আমাদের সভাপতি বিমল গুরুঙ্গের নির্দেশ পেলেই সকলে নির্বাচিত পদ থেকে সরে দাঁড়াব।” এমনকী, দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রের মোর্চা সমর্থিত বিজেপি সাংসদ যশোবন্ত সিংহকেও সে ক্ষেত্রে ইস্তফা দেওয়ার অনুরোধ জানানো হবে বলে হরকাবাহাদুর দাবি করেন। তবে আগাগোড়া সভায় রাজ্য সরকার বা মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কোনও মন্তব্যই করা হয়নি। বরং, মোর্চা নেতাদের বক্তব্যে গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জিটিএ) গঠনের ব্যাপারে রাজ্যের আন্তরিকতার প্রশংসাই করা হয়েছে। |
এ দিনের সভায় বিমল গুরুঙ্গ ছিলেন না। দলীয় সূত্রের খবর, তিনি পাহাড়ের জামুনিতে কৃষিমেলার অনুষ্ঠানে ছিলেন। তবে দলের সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি, গুরুঙ্গের স্ত্রী আশাদেবী, বিনয় তামাং সহ কেন্দ্রীয় কমিটির অনেক সদস্য সেখানে ছিলেন। পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে আন্দোলনের জন্য পাহাড়বাসীকে প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দেন সকলেই।
মোর্চা সূত্রের খবর, আগামী ২৯ জানুয়ারি কেন্দ্র তেলেঙ্গানা নিয়ে অবস্থান ঘোষণা করতে পারে। তেলেঙ্গনার দাবি সেক্ষেত্রে মানা হলে মোর্চা বিরোধী দলগুলি আন্দোলনে নামতে পারে। ইতিমধ্যেই পাহাড়ের নানা এলাকায় গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে নতুন করে পোস্টার পড়েছে। গোর্খা রাষ্ট্রীয় কংগ্রেসের (জিআরসি) সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন একাধিক মোর্চা বিরোধী সংগঠনের সদস্যরা। জিআরসি-র নামেই অধিকাংশ পোস্টার সাঁটানো হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে ঘরে-বাইরে প্রশ্নের মুখে পড়তে হতে পারে, এমন আশঙ্কায় মোর্চা নেতারা সম্প্রতি ফের গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে আন্দোলনের হুমকি দেন। গত বুধবারই মোর্চা নেতারা পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে ফের আন্দোলনের হুমকি দিয়েছিলেন। তাঁরা জানিয়ে দেন, জিটিএ থাকলেও তাঁরা তেলেঙ্গানার কথা মাথায় রেখেই ফের আন্দোলনের কর্মসূচি নিয়েছেন। হরকাবাহাদুর বলেন, “জিটিএ চুক্তিতে বিমল গুরুঙ্গ কিন্তু সই করেননি। সই করেছিলেন রোশন। গুরুঙ্গ কোনওদিনই গোর্খাল্যান্ডের দাবি থেকে সরে আসেননি।”
আগামী ২৯ ফেব্রুয়ারি কালিম্পংয়ে জনসভার ডাক দিয়েছে মোর্চা। ঘটনাচক্রে, তার আগের দিন ২৮ ফেব্রুয়ারি উত্তরবঙ্গ উৎসবে যোগ দিতে শিলিগুড়ি আসার কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সব কিছু ঠিক থাকলে তিনি দার্জিলিঙেও যেতে পারেন বলে দলীয় সূত্রে খবর। |