প্লেয়ার খেলব না বলবে কেন, প্রশ্ন লিয়েন্ডারের
যে কোনও বিতর্কের থেকে ‘সব সময় হাজার মাইল দূরে থাকা’ তাঁর ‘জীবন দর্শন’ বলেই লিয়েন্ডার পেজ ভারতীয় টেনিসের বিদ্রোহী জোট বনাম এআইটিএ মহাযুদ্ধ নিয়ে এত দিন মিডিয়ায় মুখ খোলেননি। শেষ পর্যন্ত আগুনে বিষয় নিয়ে মেলবোর্ন থেকে ই-মেল সাক্ষাৎকারে লিয়েন্ডার প্রথম আনন্দবাজারের কাছে সবিস্তার জানালেন ভারতীয় টেনিসের বৃহত্তম সঙ্কট নিয়ে তাঁর একাম্ত অনুভূতি। সটান বলে দিলেন, “ফেডারেশনকে হুমকি না দিয়ে ওদের (মহেশদের বিদ্রোহী জোট) উচিত ছিল সমস্যা সমাধানের জন্য গোপনে কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করা। গোপনীয়তা রক্ষার ব্যাপারটা দু’তরফই বজায় রাখলে ভারতীয় টেনিসের সম্মানই বোধহয় রক্ষা পেত।” বিদ্রোহী জোটের মুখপাত্র সোমদেব দেববর্মন কি আপনার সমর্থন চেয়েছিলেন? প্রশ্নে লিয়েন্ডারের লিখিত সংক্ষিপ্ত জবাব, “তেমনটা ঘটলেও আমি সেটা গোপন রাখতাম।”
কোনও রাখঢাক না রেখে বোপান্না থেকে বিষ্ণু এগারো বিদ্রোহীকে একহাত নিয়ে ভারতীয় টেনিসের সবচেয়ে সিনিয়র প্রো আরও বললেন, “প্লেয়াররা শুধু ওদের পেমেন্ট নিয়ে ন্যায্য দাবি জানাতে পারত। তা সত্ত্বেও তো এআইটিএ টাকাপয়সা নিয়ে ওদের দাবি আইনত মেনেই নিয়েছিল। তবে দল নির্বাচন, টিমের নন প্লেয়িং ক্যাপ্টেন, কোচ, ইত্যাদি টেকনিক্যাল লোকগুলোকে বেছে নেওয়াটা তো পুরোপুরি এআইটিএ-র অগ্রাধিকার। এই নির্বাচনগুলোকে ইস্যু করে তুলে প্লেয়ারদের দেশের হয়ে খেলব না বলে হুমকি দেওয়া মোটেও উচিত নয়। আমি নব্বই সাল থেকে ডেভিস কাপে খেলছি। সব সময় এ সব বিতর্কের থেকে দূরে থেকেছি।”
সাড়ে ঊনচল্লিশেও লিয়েন্ডার বলে দিচ্ছেন, “যত দিন ফিট থাকব আর ফর্মে থাকব ডেভিস কাপে খেলব। কোনও দিন দেশের হয়ে খেলতে অস্বীকার করিনি, ভবিষ্যতেও করব না।” দেশের হয়ে খেলাটা তাঁর কাছে ঠিক কী জানাতে গিয়ে তেইশ বছর ভারতীয় টেনিসকে প্রতিনিধিত্ব করা লিয়েন্ডার বলছেন, “শুধু ডেভিস কাপ কেন, অলিম্পিক, এশিয়াড, কমনওয়েলথ গেমস আমার কাছে সব সময় স্পেশ্যাল। কোনও প্লেয়ারের কাছে দেশের হয়ে খেলাটাই হল সর্বোচ্চ শৃঙ্গ। চূড়ান্ত প্রাপ্তি।”
সিনিয়র সতীর্থদের বিরূপতায় মাস কয়েক আগেই অলিম্পিকে অনভিজ্ঞ বিষ্ণু বর্ধনকে নিয়ে ডাবলসে খেলে মহেশ-বোপান্না জুটির চেয়ে ভাল পারফর্যম্যান্স করেছিলেন লিয়েন্ডার। সেই বিষ্ণুও এই মুহূর্তে বিদ্রোহী জোটে। সেই জোটকে ফোরহ্যান্ড ভলিতে উড়িয়ে দিয়ে লিয়েন্ডার বললেন, “অনামী, অনভিজ্ঞ কাউকে নিয়ে ডেভিস কাপে খেলাটা আমার কাছে নতুন নয়। তা ছাড়া, ফেডারেশন যখন একটা দল বেছে দিয়েছে, আমাদের উচিত সেই দলকে সম্মান করা। সমর্থন করা। কোরিয়া ম্যাচের দলে যে তরুণদের নির্বাচিত করা হয়েছে প্রত্যেকেই প্রতিভাবান প্লেয়ার। এক সপ্তাহ পর ডেভিস কাপে ওদের সঙ্গে কাটানোটা মনে হয় আমার কাছে ভালই একটা অভিজ্ঞতা হবে। তা ছাড়া চণ্ডীগড়ে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে আগের ম্যাচে তো ভারতের জুনিয়র দলই খুব ভাল পারফরম্যান্স করেছিল। অনেক দিন পর ভারত ডেভিস কাপে ৫-০ জিতেছিল।”
কোরিয়া ম্যাচ নিয়ে অবশ্য কোনও ভবিষ্যদ্বাণী করতে নারাজ লিয়েন্ডার। “যে প্লেয়ারদের পাওয়া গিয়েছে তাদের নিয়ে দল গড়া হয়েছে। যা হাতে আছে তাই নিয়েই আমাদের সেরা চেষ্টা করতে হবে। নিজেদের সেরাটাই কোর্টে দেব সবাই।” তবে জিশান-লিয়েন্ডারডেভিসে ফের ‘সাউথ ক্লাব জুটি’ নিয়ে লিয়েন্ডার যথেষ্ট আশাবাদী। বললেন, “নব্বইয়ে আমার প্রথম ডেভিস কাপে চণ্ডীগড়ে জাপানের বিরুদ্ধে জিশানের সঙ্গেই ডাবলস খেলেছিলাম। এখনও মনে আছে পঞ্চম সেটে ১৮-১৬ জিতে ম্যাচটা পেয়েছিলাম। জিশান প্রাক্তন জাতীয় চ্যাম্পিয়ন। এটিপি-তে মোটামুটি ভাল করেছে। ডেভিস কাপে কোচিং করার অভিজ্ঞতাও আছে। দুবাইয়ে থাকার সময় তিন বছর আমিরশাহির কোচ ছিল। আমরা একে অন্যকে শ্রদ্ধা করি। ডেভিস কাপে ওর সঙ্গে কাজ করতে তাকিয়ে আছি।” তবু সাম্প্রতিক মহাবিতর্ককে মন থেকে মুছতে পারছেন না লিয়েন্ডার। “আশা করি সবার ভেতর শুভবুদ্ধি জাগবে। ফেডারেশন আর প্লেয়ারদের মধ্যে এমন একটা চুক্তি হবে যাতে ভারতীয় টেনিসের সবচেয়ে মঙ্গল হয়।”




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.