স্কুল সম্পাদকের বিরুদ্ধে নালিশ
এসএসসি-র সুপারিশ সত্ত্বেও নিয়োগপত্র হাতে পাচ্ছেন না যুবক
স্কুল সার্ভিস কমিশনের সুপারিশ সত্ত্বেও দেড় মাসেরও বেশি সময় ধরে কোন্নগরের কানাইপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণির কর্মী পদে যোগ দিতে পারছেন না এক যুবক। কানাইপুরের বাঁশাই এলাকার বাসিন্দা মনোরঞ্জন বাছার নামে ওই যুবকের অভিযোগ, ওই স্কুলের পরিচালন সমিতির সম্পাদক নিয়োগপত্র না দেওয়ায় তিনি কাজে যোগ দিতে পারছেন না। এ ব্যাপারে জেলা শিক্ষা দফতর, প্রশাসন এবং শেষ পর্যন্ত আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন তফসিলি জাতির ওই যুবক।
ওই স্কুলের সম্পাদক নারায়ণ দাস বন্দ্যোপাধ্যায় নিয়োগপত্র না দেওয়ার কথা মেনে নিয়েছেন। এ ব্যাপারে তাঁর দাবি, “ওই যুবক তফসিলি জাতিভুক্ত নন। স্কুলে তিনি জন্মের শংসাপত্রও জমা দেননি। আমি ওঁকে পরীক্ষা করে দেখেছি, ওঁর কাজের উদ্যম নেই। কয়েকটা ত্রুটির জন্যই দেরি হচ্ছে।” এ ব্যাপারে হুগলি জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সম্পাদকের এ সব বলার কোনও যুক্তি নেই। সব কিছু দেখেই তো এসএসসি ওই যুবককে নিয়োগের সুপারিশ করেছে।” জেলার আরও কয়েকটি স্কুলের প্রধান শিক্ষকরাও কোন্নগরের স্কুলটির সম্পাদকের এ হেন যুক্তি শুনে বিস্মিত।
শিক্ষা দফতর ও স্কুল সূত্রের খবর, মাস কয়েক আগে ওই পদের জন্য স্কুল সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষায় সফল হন (মেমো নম্বর ৬৩৫/সি) মনোরঞ্জন। কানাইপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে যোগদানের জন্য গত ২৩ নভেম্বর এসএসসি-র সুপারিশপত্র হাতে পান তিনি। নিয়ম অনুযায়ী, কাজে যোগ দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের পরিচালন কমিটির সম্পাদকের নিয়োগপত্র দেওয়ার কথা কর্মপ্রার্থীকে। সেই মর্মে স্কুল সার্ভিস কমিশনের তরফে নারায়ণবাবুকে চিঠিও দেওয়া হয়। কিন্তু তাতে কাজ হয়নি। বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা তাঁকে এ নিয়ে অনুরোধ করলেও তা কানে তোলেননি সম্পাদক, অভিযোগ এমনটাই।
এই পরিস্থিতিতেই মহকুমাশাসক এবং জেলাশাসক-সহ প্রশাসনের নানা মহলে চিঠি দেন মনোরঞ্জন। অতিরিক্ত জেলা স্কুল পরিদর্শক (শ্রীরামপুর) ছবি বেরা নারায়ণবাবুকে অবিলম্বে ওই যুবককে নিয়োগপত্র দেওয়ার নির্দেশ দেন। পরে হুগলির জেলাশাসকের নির্দেশ পেয়ে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকও একই মর্মে চিঠি দেন নারায়ণবাবুকে। এর পরেও কাজ না হওয়া দিন দুয়েক আগে আদালতের দ্বারস্থ হন ওই যুবক।
মনোরঞ্জনের কথায়, “আমি খুব গরিব ঘরের ছেলে। চাকরিটা পেয়ে দারিদ্র ঘুচবে ভেবেছিলাম। আমার যাবতীয় নথিপত্র ঠিকঠাক আছে। তা সত্ত্বেও আমাকে নিয়োগপত্র দেওয়া হচ্ছে না। তবে, এ নিয়ে সংবাদমাধ্যমে বেশি কিছু বলতে চাই না।” সম্পাদক অবশ্য বলেছেন, “ওই যুবক তো আদালতে মামলা করেছেন। এখন দেখুক কত দিনে কী হয়!” জেলা পরিদর্শক স্বপনবাবু বলেন, “সম্পাদককে বার বার জানালেও উনি শুনছেন না। বিষয়টি এ বার আমি মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে জানাব।”
ওই যুবক নিয়োগপত্র না পাওয়ায় ‘জল অনেক দূর গড়াবে’ বলে মনে করছেন ওই স্কুলের শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীরাই। সম্পাদকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির নানা অভিযোগ ইতিমধ্যেই প্রশাসন এবং শিক্ষা দফতরের দ্বারস্থ হয়েছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক নিশীথকুমার রাজ পণ্ডিত-সহ অন্য শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীরা। স্কুল সার্ভিস কমিশনের নিয়ম মোতাবেক, ওই যুবক নিয়োগপত্র না পাওয়ায় বেতন আটকে যাওয়ার আশঙ্কাতেও ভুগছেন তাঁরা।
স্কুল পরিচালন কমিটির সম্পাদক অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.