মামলার পাহাড় নিয়ে উদ্বেগ
সুবিচারে বিলম্ব মানেই বিচার না-পাওয়া: প্রণব
লকাতা হাইকোর্টে বিচারপতির বহু পদ শূন্য পড়ে থাকায় এবং বিভিন্ন আদালতে মামলার পাহাড় জমে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। এর ফলে দ্রুত মামলার নিষ্পত্তি হচ্ছে না, মামলার খরচ ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যাচ্ছে এবং বিচারপ্রার্থী সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করা যাচ্ছে না বলে মনে করেন তিনি। রাষ্ট্রপতির কথায়, “দ্রুত মামলার নিষ্পত্তি হওয়া জরুরি। কারণ, সুবিচার পেতে বিলম্ব হওয়ার অর্থই হল সুবিচার না-পাওয়া।”
রবিবার দুপুরে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে কলকাতা হাইকোর্টের সার্ধশতবর্ষ পূর্তির সমাপ্তি অনুষ্ঠানে যোগ দেন রাষ্ট্রপতি। সেখানেই জানান, বিচারক ও বিচারপতির পদ খালি পড়ে থাকা এবং মামলার পর মামলা
জমে যাওয়াটা শুধু কলকাতা বা পশ্চিমবঙ্গের সমস্যা নয়। সামগ্রিক ভাবে ভারতীয় বিচার ব্যবস্থাতেই এই সমস্যা আছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। প্রণববাবুর মতে, “ভারতের বিচার ব্যবস্থা এই একটি ক্ষেত্রে পিছিয়ে। সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা পুরোপুরি পূরণ করা যাচ্ছে না। সুবিচার পেতে যাঁরা আদালতের দ্বারস্থ হচ্ছেন, মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি না-হওয়ায় সুবিচার পাওয়াটা তাঁদের ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যাচ্ছে।”
বিচারকর্তার অভাবে কী ভাবে মামলা বিলম্বিত হচ্ছে, তা জানাতে গিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের কথাই টেনে আনেন রাষ্ট্রপতি। পরিসংখ্যান দিয়ে তিনি জানান, হাইকোর্টে ৫৮টি বিচারপতি-পদ রয়েছে। কিন্তু আছেন ৪১ জন বিচারপতি। ২০১১-র ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত হাইকোর্টে তিন লক্ষ ৪৭ হাজার মামলার নিষ্পত্তি হয়নি। এর মধ্যে দেওয়ানি মামলা তিন লক্ষেরও বেশি। কলকাতা হাইকোর্টের অধীন আদালতগুলিতে প্রায় ২৬ লক্ষ মামলা ঝুলে রয়েছে, যার মধ্যে ২১ লক্ষেরও বেশি ফৌজদারি মামলা।
স্বাগত: আমতলার বিদ্যানগর কলেজে টিচার-ইন-চার্জ থাকার সময় তাঁর দোকান থেকেই
চা খেতেন প্রণব মুখোপাধ্যায়। রাষ্ট্রপতির কনভয় দেখে অভিবাদন সেই বিমল জানার। রবিবার। —নিজস্ব চিত্র
এর প্রতিকারে আদালতগুলিকে শক্তিশালী করার কথা বলেন রাষ্ট্রপতি। তার জন্য আদালতগুলির যে অতিরিক্ত সাহায্যের প্রয়োজন, সেই প্রসঙ্গও তোলেন। আদালতের খালি পদ দ্রুত পূরণ করা দরকার বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “বিচারপতি মনোনয়ন এবং তাঁদের নিয়োগের গোটা প্রক্রিয়াটি যাতে সর্বোচ্চ মান বজায় রেখে এবং সুপ্রতিষ্ঠিত ও স্বচ্ছ নীতির ভিত্তিতে করা হয়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে।”
মামলার বোঝা কমাতে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার দু’পক্ষই কলকাতা হাইকোর্টকে সাহায্য করবে বলে আশা প্রকাশ করেন রাষ্ট্রপতি। তিনি বলেন, “আমি জানি, এই কাজে প্রয়োজনীয় অর্থ পেতে যাতে সমস্যা না-হয়, কেন্দ্র ও রাজ্য উভয়েই সেটা নিশ্চিত করবে। বিশেষ করে এটা যে-হেতু নাগরিকদের সুবিচার দেওয়ার বিষয়, তাই কেন্দ্র ও রাজ্য দু’পক্ষই সাহায্য করবে বলে আমার বিশ্বাস।”
এ দিনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল হাইকোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশন, বার লাইব্রেরি ক্লাব এবং ইনকর্পোরেটেড ল সোসাইটি। মঞ্চে ছিলেন রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি আলতামাস কবীর, হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি অরুণ মিশ্র, অ্যাডভোকেট জেনারেল অনিন্দ্য মিত্র, রাজ্যের আইন ও বিচার প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য প্রমুখ।
নেতাজি ইন্ডোরের পরে ন্যাশনাল টেস্ট হাউসের শতবর্ষ পূর্তির অনুষ্ঠানে টাউন হলে যান রাষ্ট্রপতি। সেখানে তিনি বলেন, “আমাদের দেশে উৎপাদিত সামগ্রীর মান উন্নত করা দরকার, যাতে সেগুলি আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতায় পাল্লা দিতে পারে।” দুপুরের কর্মসূচির আগে প্রণববাবু গিয়েছিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার আমতলায় বিদ্যানগর কলেজে। সেখানে তিনি এক সময় শিক্ষকতা করেছেন। এক সময়ের কর্মক্ষেত্রে গিয়ে শিক্ষক-জীবনের স্মৃতিচারণায় ডুবে যান রাষ্ট্রপতি।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.