|
|
|
|
বাজির গেরোয় অকালেই ফিরলেন দুর্গা |
অর্ঘ্য ঘোষ • ময়ূরেশ্বর |
রাবণ বধের জন্য অকাল বোধন করেছিলেন রামচন্দ্র। রামায়ণের সেই স্মৃতিকেই কতকটা উস্কে দিয়ে অশুভ শক্তির বিনাশে ভরা মাঘেই দেবী আরাধনায় মাতল উঠল বীরভূমের ময়ূরেশ্বর থানার সনকপুর গ্রাম। শুধু ওই গ্রামই নয়, অকালের এই দুর্গোৎসব ঘিরে মাতোয়ারা হয়েছেন আশপাশের গ্রামের মানুষজনও।
এই সনকপুরে প্রায় দেড়শোটি পরিবারের বাস। যাঁদের অধিকাংশই কৃষিজীবী। বিভিন্ন জায়গার মতো এ বারও নির্দিষ্ট সময়ে ওই গ্রামের লোক দুর্গা পুজোয় মেতেছিল। কিন্তু বাধ সাধে বিসর্জনের দিন। মণ্ডপ থেকে বিসর্জনে নিয়ে যাওয়ার পথে বাজির আগুনে ভস্মীভূত হয়ে যায় প্রতিমা। শাস্ত্রকারেরা মত দেন, অশুভ শক্তির কারণেই প্রতিমা পুড়েছে। তাই ফের দুর্গাপুজো করার নিদান দেন তাঁরা। বৈঠকে বসে গ্রামের বারোয়ারি পুজো কমিটির উদ্যোক্তারা। আলোচনায় ঠিক হয়, মাঠ থেকে ধান উঠলে হাতে কিছু টাকা আসবে। সেই দিয়েই তখন আবার দুর্গা পুজোর আয়োজন করা হবে বলে ঠিক করেন পুজোর উদ্যোক্তা বৈদ্যনাথ পাণ্ডে, হেমন্ত গড়াইরা। গত শুক্রবার থেকে দ্বিতীয় বারের জন্য মা দুর্গাকে আপন করে নিয়েছে সনকপুরের মানুষ। সমান উৎসাহে দুর্গাপুজোয় মেতেছে গোটা গ্রাম! |
|
সনকপুর গ্রামের দুর্গা প্রতিমা। —নিজস্ব চিত্র। |
রবিবার নবমীর দিন বসেছে কীর্তনের আসর। আশপাশের কয়েক গ্রাম মানুষ ভিড় জমিয়েছেন মণ্ডপে। বাচ্চাকাচ্চারা পেয়েছে নতুন জামাকাপড়ও। তৈরি হয়েছে নাড়ু। দূরদূরান্ত থেকে পৌঁছে গিয়েছেন আত্মীয়স্বজনেরাও। গ্রামের বধূ শান্তি গড়াই, মিঠু মণ্ডল-রা বলেন, “আশ্বিন মাসের পুজোর মতোই, অকালের এই দুর্গাপুজো উপলক্ষে আত্মীয়স্বজনে বাড়ি সরগরম। খুশি কচিকাঁচারাও। আর কি চাই!” অকালে দেবী আরাধনার সুযোগ মিলে যাওয়ায় খুশি গ্রামের পুরোহিত অশোক সরকারও। আর তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র প্রিয়তোষ গড়াই, দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী সঙ্গীতা দে-র উচ্ছ্বাস, “একই বছরে ডাবল পুজো! ডাবল আনন্দ!”
তবে এ বারে বাজি-পটকার বিষয়ে বিশেষ সতর্ক থাকছে ময়ূরেশ্বরের সনকপুর! |
|
|
|
|
|