দাবি, কমবে অস্ত্র পাচারও
নিরাপত্তা বাড়াতে নতুন ব্যবস্থা রেলে
পূর্ব রেলের আসনসোল ডিভিশনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও সুনিশ্চিত করার জন্য একটি সুসংহত নিরাপত্তা ব্যবস্থা চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রেল কর্তৃপক্ষ। প্রাথমিক ভাবে আসানসোল ও দুর্গাপুর স্টেশনে এই ব্যবস্থা শুরু করার কথা ভাবা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। পরবর্তীতে বাকি স্টেশনগুলিতেও এই ব্যবস্থা চালু করা হবে।
রেলের আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, এই ব্যবস্থা চালু করা গেলে যে কোনও রকম অস্ত্র ও বিস্ফোরক পাচার বন্ধ করা যাবে। রেলপথ বা ডিভিশনের গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনগুলিতে দুষ্কৃতীরা যেন কোনও ভাবেই অস্ত্র ও বিস্ফোরক পাচারের কাজে ব্যবহার করতে না পারে তার জন্যই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে রেল সূত্রে খবর। রেলের আধিকারিকেরা খোঁজ নিয়ে জেনেছেন, সীমান্ত রাজ্য ঝাড়খণ্ড ও বিহার থেকে প্রায়ই বিভিন্ন রকমের অস্ত্র আসানসোল হয়ে গোটা শিল্পাঞ্চল এমনকী রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ছে। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আসানসোলের পুলিশ কমিশনারকে কড়া নির্দেশ দেওয়ার পর পুলিশ অন্ডাল থেকে প্রচুর অস্ত্র উদ্ধার করেছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই অস্ত্রগুলি মুঙ্গের, লক্ষ্মীসারয়, মিহিজাম এলাকা থেকে পাচার করে আনা হয়েছে। আগেও বহুবার জিআরপিএফ এবং আরপিএফ যৌথ অভিযান চালিয়ে স্টেশন চত্বর ও ট্রেন থেকে অস্ত্র উদ্ধার করেছে।
এই সুসংহত নিরাপত্তা ব্যবস্থাটি ঠিক কীরকম তার খোঁজ নিতে গিয়ে রেলসূত্রে জানা গিয়েছে, এই ব্যবস্থায় রেল স্টেশনগুলিকে কেন্দ্র করে এমন একটি নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরী করা হবে যা ভেদ করে পাচারকারীরা বেরোতে পারবে না। আধুনিক প্রযুক্তিগত ‘লাগেজ স্ক্যানার’ ও স্বয়ংক্রিয় ‘মেটাল ডিটেক্টর’ বসানো হবে। এছাড়া স্টেশনের কয়েকটি নির্দিষ্ট অংশে ‘ক্লোজ সাকির্ট ক্যামেরা’ বসানো হবে। স্টেশনের মধ্যেই একটি গোপন ঘরে বসে এসব যন্ত্রাংশ নিয়ন্ত্রন করবেন নিরাপত্তা কর্মীরা। সেখানে বসেই ‘ক্লোজ সার্কিট’ ক্যামেরায় তোলা ছবির সরাসরি সম্প্রচারও দেখবেন তাঁরা। চব্বিশ ঘন্টা ধরেই নজরদারি চলবে। হবে। সন্দেহজনক কিছু দেখলেই সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে আটক করে তাঁর জিনিসপত্র তল্লাশি ও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। আরপিএফের আসানসোল ডিভিশনের সিনিয়র কমানডেন্ট অমরেশকুমার বলেন, “আমরা এই পরিকল্পনাটি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি। খুব দ্রুত চালু হয়ে যাবে।” রেলসূত্রে জানা গিয়েছে, এই ব্যবস্থা চালু করার জন্য কারিগরি সহায়তা চেয়ে অভিজ্ঞ বেসরকারি সংস্থার কাছ থেকে দরপত্র ডাকা হয়েছে।
প্রশাসনের অনুমান, অস্ত্র পাচারের জন্য পাচারকারীদের কাছে রেলপথই উৎকৃষ্ট মাধ্যম। কারণ রেল স্টেশনের বেশিরভাগ অংশই ঘেরা থাকে না। অনেক সময় স্টেশনে নেমে রেল লাইন ধরে খানিকটা সামনে বা পিছন দিক দিয়ে স্টেশনের বাইরে চলে যাওয়া যায়। পাচারকারীরা অস্ত্র পাচারের জন্য অর্থের বিনিময়ে স্টেশনে ভিক্ষাবৃত্তির সঙ্গে যুক্ত লোকজনদের কাজে লাগায় বলেও রেল কর্তৃপক্ষের অনুমান। ফলে পুলিশ বা আরপিএফ চট করে বুঝে উঠতে পারে না। এই অবস্থায় স্টেশনগুলিতে যদি সুসংহত নিরাপত্তা ব্যবস্থা চালু সম্ভব হয় তবেই এই পাচার বন্ধ করা যাবে বলে মনে করেন রেলের নিরাপত্তা আধিকারিকেরা। রেলের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের তরফেও তাঁদের কাছে অস্ত্র পাচার রোখার জন্য রেলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়ানোর আবেদন করা হয়েছে।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, আসানসোল ডিভিশনে মোট ৭২টি স্টেশন আছে। অধিকাংশ স্টেশনেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নত নয়। কয়েকটি স্টেশনে মেটাল ডিটেক্টর লাগানো থাকলেও তার অধিকাংশই খারাপ। আবার বেশ কয়েকটি স্টেশনে এগুলির নজরদারি ঠিকমতো হয় না। এই অবস্থায় সুসংহত নিরাপত্তা ব্যবস্থা চালু হলে ফল ভালোই হবে বলে আশা রেল কর্তৃপক্ষের।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.