বাবা জ্ঞান দিয়ো না
পা দিয়ে যায় চেনা
স্ট্রেলিয়ান ওপেনের হার্ড কোর্টে টেনিসের গ্ল্যামার কুইন মারিয়া শারাপোভার ফর্সা, ছিপছিপে পা অসংখ্য যুবকের বুকের ধুকপুকুনি বাড়িয়ে দেয়। যৌন আবেদনের নিরিখে মিনি স্কার্টে মুম্বইয়ের অনুষ্কা শর্মা বা বঙ্গললনা বিপাশা বসুর স্লিম অ্যান্ড ট্রিম পদযুগলও কিছু কম যায় না।
আপনি হতেই পারেন সেলিব্রিটি বা কফিশপে গল্পে মশগুল কলেজ ছাত্রী। হট প্যান্ট কিংবা মিনি স্কার্টে যদি বাজি মারতে চান, তা হলে ঊরুর অংশ অবশ্যই মেদহীন আর টানটান রাখতে হবে। তবেই জমবে ফ্যাশনটা।
অনেকেই পরতে চান মিনি স্কার্ট বা হট প্যান্টস। কিন্তু পরা হয় না শেষ অবধি। কারণটা অবশ্যই পায়ের অংশের মেদ। জেনে রাখুন এক্সারসাইজ সায়েন্সের কয়েকটা বিষয়। তা হলেই হতে পারে মুশকিল আসান।
বিদ্যা বালনের মতো শরীরের নীচের অংশটা অনেকেরই বেশ ভারী। এই মেদ কিন্তু অনেক সময়ই জন্মসূত্রে পাওয়া।
বিজ্ঞানের পরিভাষায় ‘গাইনয়েড ফ্যাট’, যা মাত্রাতিরিক্ত আকার নিয়ে ওবেসিটির পর্যায়ে না পৌঁছলে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। ইস্ট্রোজেন হরমোনের ঘাটতি, পায়ের নীচের অংশে আলফা-২ এনজাইমের উপস্থিতির কারণে বেশির ভাগ সময় মেয়েদের পায়ের নীচের অংশের ফ্যাটকে কব্জা করা যায় না।

ঊরুর অংশকে হিপের সঙ্গে মানানসই করতে গেলে তিনটে ফর্মুলা মাথায় রাখতেই হবে আপনাকে। বুদ্ধি লাগিয়ে ওয়ার্ক আউট করুন। সঙ্গে পরিমিত খাবার খান। আর তার পাশাপাশি অনেক ধৈর্যও রাখুন।
পায়ের অংশের ফ্যাট কমাতে ওজন নিয়ে ব্যায়ামের কোনও জুড়ি নেই। প্রয়োজন অনুযায়ী ওয়ার্ক আউট বেছে নেওয়া আর ঠিকঠাক ভাবে করাটাই হল সুঠাম নির্মেদ পা পাওয়ার আসল সিক্রেট। যেমন রাইমা সেনের পছন্দের ওয়ার্ক আউট হল ‘ওভারহেড স্টেপ আপ’।
এই ওয়ার্ক আউটটা করতে গেলে ওজন উঁচুতে ধরে রাখতে হয়। এতে যেমন কোর পেশি কাজ করে ভাল মতো, তেমনই হাঁটুর পেশিতেও একই সঙ্গে জোর পড়ে। রাইমা এই ব্যায়ামটা ঠিকঠাক বোঝেন বলেই করেন। মেদ কম করতে শুধু পায়ের ব্যায়ামই যথেষ্ট নয়। রাইমা জানেন সেটা।
বলিউডের ক্যাটরিনাদের পছন্দের ওয়ার্ক আউট হল এক পায়ে স্কোয়াট বা এক পায়ে ডেড লিফ্ট। এই ওয়ার্ক আউটগুলো করলে অনেকগুলো পেশির কর্মক্ষমতা একসঙ্গে বেড়ে যায়। ফলে ক্যালরিও খরচ হয় অনেক বেশি। পা হয়ে ওঠে পারফেক্টলি স্লিম।
বিপাশা বা করিনারাও ডাম্বেল-বার্বেল নিয়ে ওয়ার্ক আউট করছেন বেশি করে। ট্রেডমিলে বেশি দৌড়লে পায়ের অংশ বেশি স্লিম হবেএই ভুল ধারণা থেকে অনেক আগেই বেরিয়ে এসেছেন এঁরা। রাইমা, বিপাশা, করিনা এঁরা সবাই জানেন, শরীরের ওপরের অংশকে খাটালে শরীরের নীচের অংশের, বিশেষত পায়ের মেদ ঝরে যায়।
মাধুরী দীক্ষিত বলিউডে ‘কামব্যাক’ করার আগে প্রতিদিন ভোর চারটের সময় ছুটতেন জুহু বিচে। পায়ের অংশের গ্ল্যামার বাড়াতে তাঁর পছন্দের ওয়ার্ক আউট ‘ক্রশ ট্রেনিং’। মানে প্রথম ২-৪ মিনিট সাইক্লিং করা। তার পরের ২-৪ মিনিট দৌড়ানো। আপনিও করে দেখতে পারেন। ম্যাজিকের মতো কাজ দেবে। বালিতে দৌড়াতে পারলে তো কথাই নেই। তা না হলে মাঠে কিংবা ফাঁকা রাস্তায়।
আর এক টলিউড সেলেব পাওলির পছন্দ আবার ‘কিক বক্সিং’। এটা করলে একসঙ্গে অনেকগুলো পেশিকে খাটানো যায়। পাওলি তো এই ওয়ার্ক আউটের নেশায় একেবারে বুঁদ।
টিপস
• সপ্তাহে অন্তত তিন দিন ওজন নিয়ে পায়ের ওয়ার্ক আউট করুন। একদিন ব্যবহার করুন ভারী ওজন। আর একদিন করুন মাঝারি ওজন নিয়ে।
• সপ্তাহে ২-৩ দিন শরীরের ওপরের অংশের জন্য ওজন নিয়ে ব্যায়াম করুন। পায়ের বা ওপরের অংশের ওয়ার্ক আউটের জন্য বেছে নিন ৬-৭টা এক্সারসাইজ।
• মাঝে মধ্যে একদিন পুরো শরীরের ওজন নিয়ে ব্যায়াম করুন। করুন ক্লিন অ্যান্ড প্রেস, স্প্লিট জাম্প, ওয়ান হ্যান্ড স্ন্যাচ-এর মতো ওয়ার্ক আউটগুলো।
• শক্তি বাড়ানোর ব্যায়ামের পর বিরতি নিন। আর তার পর করুন শাটল রান, কিক বক্সিং, বার্পি জাম্প, হাই নি’র মতো কার্ডিও এক্সারসাইজ।
• এক ধরনের ওয়ার্ক আউট রোজ করবেন না। এতে একঘেয়েমি বাড়ে। বেছে নিন চ্যালেঞ্জিং কিছু। বসু বল নিয়ে স্কোয়াট অ্যান্ড প্রেস, স্কোয়াট জাম্প অথবা বক্সিং বা কিক বক্সিং হতেই পারে আপনার পছন্দের ওয়ার্ক আউট।
• পায়ের অংশ শারাপোভার মতো করতে গেলে অনেক ধৈর্য ধরতে হবে। তাই ধৈর্য বাড়ানোর জন্য করুন যোগাসন কিংবা প্রাণায়াম।
এটা করার ফলে ওর পায়ের পেশি শুধু সুঠামই হয়নি, পা গুলো হয়ে উঠেছে স্লিম অ্যান ট্রিম। শূন্যে উঠে পাওলির কিকই বলে দেয় কতটা জোর আছে ওর পায়ের পেশিতে।
অনেক গৃহবধূ আছেন যাঁরা সেলেবদের মতোই স্লিম পায়ের অধিকারী হতে চান। কিন্তু কাজের চাপে অনেকেই জিমে যেতে পারেন না। এদের শারীরিক ফিটনেসও খুবই কম থাকে।
এরা শুরু করতে পারেন এক পায়ে স্কোয়াট দিয়ে। এক জায়গায় দাঁড়িয়ে করতে পারেন লাঞ্জের এর মতো ওয়ার্ক আউটও।
কিছুটা অভ্যস্ত হয়ে গেলে করতে পারেন হাঁটু গেড়ে পুশ-আপ বা দু’হাতে ২ লিটারের জলের বোতল নিয়ে রোয়িং, শোল্ডারপ্রেস অথবা উডচপ-এর মতো ওয়ার্ক আউটগুলো।
এদেরও বুঝতে হবে শরীরের ওপরের অংশের ওয়ার্ক আউট করলে যে শুধু ওপরের অংশেরই ফ্যাট ঝরে তা নয়। ঝরে যায় নীচের অংশের ফ্যাটও।
এতে পা দুটোও হয়ে ওঠে আকর্ষণীয় ভাবে স্লিম। ঠিক যেমন তারা চান। তবে সময় লাগতে পারে ৫-৬ সপ্তাহ।
বক্সিং, দৌড় বা বার্পি জাম্পের মতো বিরতিমূলক কার্ডিও করুন। ওয়ার্ক আউটগুলো কখনওই একনাগাড়ে করার চেষ্টা করবেন না। করুন বিরতি নিয়ে। এতে বাড়বে আপনার মেটাবলিজম রেট। আর ফ্যাটও ঝরবে বেশি বেশি।
প্রতিদিন কার্ডিও এক্সারসাইজ করুন ২০-২৫ মিনিটের মতো। আর ওয়ার্ক আউটগুলো করুন বেশ চ্যালেঞ্জিং ভাবে।
শুধু তো ওয়ার্ক আউট করলে চলবে না, খেতেও হবে নিয়ম করে। কারণ একটা হেলদি ডায়েটই আপনার ওয়ার্ক আউটের উদ্দেশ্যটাকে সফল করতে পারে।
পারলে চেষ্টা করুন হেভি ব্রেকফাস্ট করতে। দিনে ৬-৭ বার অল্প অল্প করে খান। এতে মেটাবলিজম রেট থাকবে ঠিকঠাক। রাতের ডিনার নিন অল্প পরিমাণে। আর ডিনার করে নিন তাড়াতাড়ি।
তবে পায়ের সৌন্দর্য যদি ঠিকঠাক ভাবে ধরে রাখতে চান, তা হলে প্রচুর ধৈর্য রাখতে হবে। আর ওয়ার্ক আউট করতে হবে একদম সঠিক পদ্ধতিতে। তবেই না ক্যাটরিনা-করিনাদের মতো আপনার ‘ফাইন লেগস’ ঝড় তুলে দেবে আপনার পছন্দের পুরুষটির মনে?



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.