|
|
|
|
|
ম্যাচ জিতলেও সব রোগের
ওষুধ এখনও মেলেনি
দীপ দাশগুপ্ত |
|
মহেন্দ্র সিংহ ধোনির ঘরের মাঠে ভারতীয় দলের জয় দেখে যাঁরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন, যাঁরা ভাবছেন টিমটা শেষ পর্যন্ত ধারাবাহিক জয়ের রাস্তায় ফিরছে, তাঁদের আগেভাগেই সাবধান করতে চাই। চরম খারাপ সময়ের মধ্যে ধোনির ভারত পরপর দু’টো ম্যাচ জিতল, সিরিজটাও হয়তো জিতবে, সব ঠিক আছে। কিন্তু বিশ্বকাপের কথা মাথায় রেখে যদি টিম তৈরির কাজে মন দিতে হয়, তা হলে কাজটা কিন্তু এই সিরিজ থেকেই চালু করা দরকার। ম্যাচ হারলে তীব্র সমালোচনা করে লাভ নেই। তাতে সমস্যা বাড়বে। কিন্তু টিমটা জিতলে, পারফরম্যান্সকে মাইক্রোস্কোপের তলায় ফেলতে হবে। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে দুর্ধর্ষ জয়ের পরেও বলছি, রাঁচি ম্যাচেও কিন্তু দলে বেশ কয়েকটা ‘রোগ’ ধরা পড়ল।
কী রকম? দেখুন, ধোনির এই ভারতীয় টিমের একটা বিভাগ তৈরি। পেস বোলিং। ভুবি (ভুবনেশ্বর), সামি, দিন্দা, ইশান্তের মতো পেসার (সঙ্গে উমেশ যাদব ঢুকবে) আছে যারা এক এক জন এক এক ঘরানার। সামি-দিন্দা বল পিচে ‘হিট’ করে ব্যাটসম্যানকে বেকায়দায় ফেলতে ভালবাসে, ভুবি আবার সুইংয়ে মন দেয়। পাকিস্তান সিরিজ থেকেই কিন্তু পেসাররা দুর্দান্ত বল করে চলেছে। এই সিরিজে পেসাররা মনের মতো পিচ না পেলেও উইকেট পাচ্ছে। বিশেষ করে বলব, সামি-র কথা। অসাধারণ বল করছে। ভুবি-র সঙ্গে ওর জুটি তো দেখছি রীতিমতো কাঁপিয়ে দিচ্ছে বিপক্ষকে। শনিবারও শুরুর দিকে পেসাররা পরপর উইকেট তুলে নেওয়ায় ইংল্যান্ড সেই যে ম্যাচ থেকে হারিয়ে গেল, আর ফিরল না। কিন্তু শুধু পেস বোলিং দিয়ে ম্যাচের পর ম্যাচ জেতা আজ পর্যন্ত যায়নি, যাবেও না। |
|
২-১ এগিয়ে যাওয়ার স্মারক তুলছেন ধোনি। ছবি: পিটিআই |
বাকি বিভাগকেও মেরামত করা দরকার।
এক) সবার আগে বলব, বিরাট কোহলির কথা। বিরাট ধীরে ধীরে ফর্মে ফিরছে, আজ ৭৭ করল। কিন্তু শর্ট বলের সামনে দেখলাম, পায়ের পজিশন ঠিক থাকছে না। অস্বস্তিতে পড়ে যাচ্ছে।
দুই) দেশে ভাল স্পিনারের অভাব। স্পিনার বলতে আমাদের হাতে এখন হরভজন, অশ্বিন আর ওঝা। অশ্বিনকে দেখছি, বৈচিত্র্য বাড়াতে পেস কমিয়েছে। এতে সুবিধা হল, আপনি টার্ন পাবেন বেশি। ফ্লাইটে ব্যাটসম্যানকে বোকা বানাতে পারবেন। শনিবার ইয়ন মর্গ্যান যেমন অশ্বিনের বলের পেসই বুঝতে পারল না। কিন্তু একটা অশ্বিন দিয়ে তো হবে না। আমার মনে হয়, আগামী দেড় বছরে ভাল স্পিনার যেমন তুলতে হবে, তেমনই নির্বাচকদের উচিত ফর্ম্যাট ধরে স্পিনারদের ভাগ করে দেওয়া।
তিন) ওপেনিং স্লট। সহবাগ নেই, রাহানের থেকেও বিশেষ ভাল কিছু দেখতে পাচ্ছি না। ও ভাল ব্যাটসম্যান, কিন্তু রান করতে হবে। উল্টে কোচিতে যে ভাবে আউট হল, এ দিনও তাই। ইনসাইড এজ হয়ে বোল্ড।
চার) অলরাউন্ডার স্লট। ইরফান পাঠান কবে ফিট হবে, কেউ জানে না। জাডেজাকে ভাবা যেতে পারে। জাডেজার নির্বাচন নিয়ে প্রচণ্ড কথা হয়েছিল। কিন্তু ওর বাঁ হাতি স্পিন উপমহাদেশের উইকেটে ভাল কাজ দিচ্ছে। আজও তিন উইকেট নিল। শনিবার টার্গেট অল্প ছিল, কঠিন প্রশ্নপত্রের সামনে ব্যাটিং কখনওই পড়েনি। বোলিং ছাড়া ভাল জিনিস যেটা দেখলাম, টিমটার মধ্যে কোচি ম্যাচে জয়ের রেশটা ধরে রাখার ইচ্ছেটা ছিল। সোজা কথায়, সিরিজ জেতা-হারা নিয়ে ভেবে লাভ নেই এখন। বরং ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবা ভাল। |
মহেন্দ্র সিং ধোনি |
জাডেজার জন্যই টিমে ব্যালান্স ফিরেছে। পারফেক্ট বোলিং অলরাউন্ডার বলতে যা বোঝায়, জাডেজা তাই...
আমি জানি যে রাঁচির লোক দেখতে চেয়েছিল আমি ব্যাট হাতে আগে নামি। কিন্তু ম্যাচ জেতাটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আমি এখানে তো শুধু রাঁচির মানুষকে আনন্দ দিতে আসিনি। |
ভারত আবার এক নম্বরে |
ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে চলতি সিরিজে ২-১ এগিয়ে যাওয়ার পরে আইসিসি ওয়ান ডে র্যাঙ্কিংয়ে ধোনির ভারত আবার এক নম্বরে উঠে এল। র্যাঙ্কিংয়ে একে ভারত (১১৯), দুইয়ে ইংল্যান্ড (১১৮) ও তিন নম্বরে দক্ষিণ আফ্রিকা (১১৬)। |
পরের দুটো ওয়ান ডে-র জন্য ভারতীয় দল একই রেখে দিলেন নির্বাচকেরা। |
|
|
ইংল্যান্ড |
কুক এলবিডব্লিউ সামি ১৭
বেল ক ধোনি বো ভুবনেশ্বর ২৫
পিটারসেন ক ধোনি বো ইশান্ত ১৭
রুট ক ধোনি বো ইশান্ত ৩৯
মর্গ্যান ক যুবরাজ বো অশ্বিন ১০
কাইসওয়েটার বো জাডেজা ০
সমিত এলবিডব্লিউ জাডেজা ০
ব্রেসনান বো অশ্বিন ২৫
ট্রেডওয়েল নটআউট ৪
ফিন ক যুবরাজ বো রায়না ৩
ডার্নবাখ বো জাডেজা ০
অতিরিক্ত ১৫
মোট ৪২.২ ওভারে ১৫৫।
পতন: ২৪, ৬৮, ৬৮, ৯৭, ৯৮, ৯৮, ১৪৫, ১৪৫, ১৫৫।
বোলিং: ভুবনেশ্বর ১০-২-৪০-১, সামি ৮-০-২৩-১, ইশান্ত ৭-০-২৯-২,
জাডেজা ৬.২-০-১৯-৩, অশ্বিন ১০-০-৩৭-২, রায়না ১-০-১-১।
|
ভারত |
গম্ভীর ক রুট বো ট্রেডওয়েল ৩৩
রাহানে বো ফিন ০
কোহলি নঃআঃ ৭৭
যুবরাজ বো ট্রেডওয়েল ৩০
ধোনি নঃআঃ ১০
অতিরিক্ত ৭
মোট ২৮.১ ওভারে ১৫৭-৩।
পতন: ১১, ৭৮, ১৪৪।
বোলিং: ফিন ৯.১-০-৫০-১, ডার্নবাখ ৫-০-৪৫-০, ব্রেসনান ৭-২-৩১-০, ট্রেডওয়েল ৭-১-২৯-২। |
|
|
|
|
|
|
|