বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে ইউজিসি-র চিঠি
ক্যাম্পাসে যৌন নিগ্রহ রুখতে বাড়তি নজরদারি
ক্যাম্পাসে মহিলাদের সঙ্গে অশালীন আচরণ রুখতে কঠোর হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তাদের দাবি, নেহাত দায়সারা ভাবে নয়। যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে এই কাজ করছেন তাঁরা।
কী রকম?
মহিলাদের নিগ্রহ ঠেকাতে নিজেদের সব বিভাগে এবং পাশাপাশি অধীনস্থ সব কলেজে চিঠি পাঠাচ্ছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়।
মহিলাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে পৃথক কমিটি গড়তে চলেছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়।
প্রেসিডেন্সিতেও গড়া হচ্ছে কমিটি।
রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘শারীরিক নিগ্রহ প্রতিরোধক সেল’ ঢেলে সাজা হচ্ছে।
সিসিটিভি বসছে অসমের শিলচরের কলেজেও।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান বেদ প্রকাশ সম্প্রতি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভিতরে মহিলাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার কথা জানিয়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন। গত সপ্তাহে সেই চিঠি রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির কাছে পৌঁছেছে। চিঠির সূত্র ধরেই এক-এক বিশ্ববিদ্যালয়ে এক-এক রকম ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কোন বিশ্ববিদ্যালয় কী ব্যবস্থা নিল, ইউজিসি-র কাছে তা জানাতে হবে। সম্প্রতি দিল্লি-সহ বিভিন্ন রাজ্যে মেয়েদের নিগ্রহের যে সব ঘটনা ঘটছে, তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ইউজিসি বলেছে, ক্যাম্পাসে মহিলাদের নিরাপত্তার বন্দোবস্ত খতিয়ে দেখা দরকার। প্রয়োজনে সেই ব্যবস্থা আরও বাড়াতে হবে। মহিলাদের নিরাপত্তায় পৃথক টাস্ক ফোর্স গড়ার কথাও বলা হয়েছে চিঠিতে। মহিলা হস্টেলের আশপাশে আরও কড়া নজরদারি দরকার বলে জানান চেয়ারম্যান।
গত কয়েক বছরে শিক্ষকের হাতে ছাত্রীর নিগৃহীত হওয়ার একাধিক অভিযোগ উঠেছে কলকাতা-সহ রাজ্যের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে। সম্প্রতি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজাবাজার ক্যাম্পাসের সামনে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রীর সঙ্গে অশালীন আচরণের অভিযোগ ওঠে। অভিযুক্তেরা বাইরের লোক হলেও ঘটনার আঁচ পড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপরে। গত ১০ জানুয়ারি প্রথম ঘটনাটি ঘটার পরে ক্যাম্পাসের সামনে পুলিশি নজরদারি জোরদার করা হয়। দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটে গত শুক্রবার বিকেলেই। পরপর এমন ঘটায় কলকাতার পুলিশ কমিশনার রঞ্জিতকুমার পচনন্দার সঙ্গে যোগাযোগ করে রীতিমতো উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন উপাচার্য সুরঞ্জন দাস। ইউজিসি-র চিঠিও সেই একই উদ্বেগ ব্যক্ত করেছে। শনিবার সুরঞ্জনবাবু বলেন, “ইউজিসি-র চিঠিটির সঙ্গে ছাত্রী-শিক্ষিকা-মহিলা কর্মীদের প্রতি নিগ্রহমূলক আচরণ ঠেকাতে সজাগ থাকার নির্দেশ দিয়ে সব কলেজের অধ্যক্ষ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগীয় প্রধানদের কাছে চিঠি পাঠাব।” তবে তাঁর মতে, ক্যাম্পাসের বাইরে কোনও ঘটনা ঘটলে তা আটকানোর ব্যবস্থা করতে হবে সরকার তথা প্রশাসনকেই। তা না হলে এই ‘সামাজিক ব্যাধি’ প্রতিরোধের সম্ভাবনা ক্ষীণ বলে মনে করেন তিনি।
রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সব্যসাচী বসুরায়চৌধুরী বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘শারীরিক নিগ্রহ প্রতিরোধক সেল’টিকে ঢেলে সাজা হচ্ছে। নারীর অধিকার রক্ষার জন্য যে সব সংস্থা আছে, সেগুলিকে পুনরুজ্জীবিত করে মেয়েদের অধিকার রক্ষায় বিশেষ নজর দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।” যাদবপুর ও প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে এই উদ্দেশ্যে পৃথক কমিটি গড়ার পরিকল্পনা হয়েছে। যাদবপুরের এক কর্তা বলেন, “ক্যাম্পাসের ভিতরে যে নিরাপত্তা-কর্মীরা আছেন, তাঁরা তো নজর রাখেনই। তা ছাড়া কিছু কিছু জায়গায় সিসিটিভি আছে। ইউজিসি-র চিঠির প্রেক্ষিতে আমরা এ বার একটি কমিটির গড়ার কথা ভাবছি।” মেয়েদের উপরে অশালীন আচরণ ঠেকাতে সিসিটিভি বসছে শিলচরের গুরুচরণ কলেজেও। দিল্লি গণধর্ষণ কাণ্ডের পরে উদ্বিগ্ন কলেজ কর্তৃপক্ষ নিজে থেকেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি সমরকান্তি রায়চৌধুরী জানান, ক্যাম্পাসের ভিতরে ২০টি স্পর্শকাতর জায়গা চিহ্নিত করে সেখানে ক্যামেরা বসানো হবে বলে ঠিক হয়েছে। ক্যামেরাগুলির উপরে নজরদারি চলবে অধ্যক্ষ বিভাস দেবের ঘর থেকে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.