রাহুলের গুরুত্ব বাড়ায় চাপ বাড়ল বিজেপিতে
ংগ্রেসের সহ-সভাপতি পদে রাহুল গাঁধীর নাম ঘোষণা বিজেপি নেতৃত্বের উপর প্রবল চাপ সৃষ্টি করল তাঁদের নির্বাচনী কাণ্ডারি চূড়ান্ত করার বিষয়ে।
আরএসএস তথা সঙ্ঘ পরিবারের ইচ্ছায় নিতিন গডকড়ীকে দলের সভাপতি পদে আরও এক বার রেখে দেওয়ার সিদ্ধান্ত বিজেপি ঘোষণা করেছে জয়পুরে চিন্তন বৈঠক শুরুর দিনেই। চিন্তন বৈঠক শেষ হওয়ার পর আগামিকাল এআইসিসি-র প্রকাশ্য অধিবেশনের মুখে রাহুলের নাম ঘোষণায় বিজেপি শিবিরে প্রবল প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। বিজেপি নেতারা বুঝতে পারছেন, এ বার রাজ্যে রাজ্যে বিজেপি কর্মীরাও কংগ্রেসের ধাঁচে রাস্তায় নামবে নরেন্দ্র মোদীকে দলের কাণ্ডারী করার দাবিতে। মনমোহন সিংহ যেহেতু প্রধানমন্ত্রী পদে বহাল রয়েছেন, তাই কৌশলগত কারণেই প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে রাহুল গাঁধীর নাম ঘোষণা করবে না কংগ্রেস। কিন্তু সহ-সভাপতি নির্বাচিত হওয়ায় রাহুল যে প্রচারের মুখ হতে চলেছেন, তা নিয়ে সন্দেহ নেই।
এ ক্ষেত্রে বিজেপি নেতারাও মনে করছেন, এখনই কাউকে প্রচারের মুখ হিসেবে চূড়ান্ত করে ফেলা উচিত দলের। এ ব্যাপারে দেরি করার অর্থ কংগ্রেসকে রাজনৈতিক ভাবে সুযোগ করে দেওয়া। বিজেপি সূত্র বলছে, দল ও সঙ্ঘের নেতারা এখনও নরেন্দ্র মোদীকে নির্বাচনী কমিটির প্রধান করার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেননি। কিন্তু মোদীর এই দফার গুজরাত জয়ের পর থেকেই তাঁর সমর্থকরা এ ব্যাপারে দলের নেতাদের উপরে চাপ বাড়িয়ে চলেছেন।
রাহুলের নতুন দায়িত্বের খবর পেয়ে উচ্ছ্বসিত কংগ্রেস সমর্থকরা। জয়পুরে। ছবি: পি টি আই
কিন্তু দলে মোদী-বিরোধিতারও চাপ কম নয়। ফলে মোদী প্রশ্নে দ্বিধা তো আছেই, তার সঙ্গে রাজ্যে রাজ্যে সাংগঠনিক ক্ষেত্রে অগোছালো অবস্থা, গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, আরএসএস বনাম দলের নেতাদের একাংশের লড়াই এ সব নিয়ে হিমসিম খাওয়ার মতো অবস্থা বিজেপি নেতৃত্বের। এ বার রাহুলের দায়িত্ববৃদ্ধি বাড়তি চাপে ফেলল বিজেপিকে।
কংগ্রেসের অনেক নেতাই মনে করছেন, রাহুলের নাম ঘোষণার পর মোদীকেই প্রচারের প্রধান মুখ হিসেবে ঘোষণা করবে বিজেপি। এটিই রাজনৈতিক ভবিতব্য। এবং মোদীর নাম ঘোষণা হলে রাজনৈতিক মেরুকরণ হবে অনেক বেশি। তখন গোধরা-কলঙ্কিত মোদী হবেন প্রচারের প্রধান বিষয়। মূল্যবৃদ্ধি, মুদ্রাস্ফীতির মতো আর্থিক বিষয় চলে যাবে পিছনে। সংখ্যালঘু সমাজ কংগ্রেসকেই ভোট দেবে নিরাপত্তার অভাববোধ থেকে। কংগ্রেস সাংসদ রাজীব শুক্ল এ-ও বলেন যে, “লালু-মুলায়মদের দলকেও যদি সংখ্যালঘুরা ভোট দেন, তাতেও লাভ কংগ্রেসেরই।” বিজেপি নেতাদের একটা অংশও কংগ্রেসের এই তত্ত্বের সঙ্গে সহমত। এ ছাড়া অরুণ জেটলি, সুষমা স্বরাজ, লালকৃষ্ণ আডবাণী, এমনকী রাজনাথ সিংহও মনে করেন তিনিই প্রধানমন্ত্রী পদের যোগ্যতম দাবিদার। ফলে এঁরা কেউই আন্তরিক ভাবে মোদীকে সমর্থন করেন না। কৌশল হিসেবে লালকৃষ্ণ আডবাণী সুষমা স্বরাজের নাম সামনে আনলেও এই নেত্রীর ব্যাপারে আপত্তি আছে সঙ্ঘে। পাশাপাশি সঙ্ঘ নিতিন গডকড়ীকে যে রকম নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে, মোদীকে ততটা ঘরের ছেলে বলে মনে করে না। তবু রাহুলের নাম ঘোষণার পরে বিজেপি-কেও এখন দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। পুণেতে দলের জাতীয় বৈঠকে গডকড়ীর দ্বিতীয় বারের অভিষেক ও মোদীকে দলের মুখ হিসাবে তুলে ধরা এই যৌথ প্যাকেজ নিয়ে দলের মধ্যে আলাপ-আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে। সিপিএম পলিটব্যুরোও কংগ্রেসের এআইসিসি অধিবেশনের প্রস্তাবগুচ্ছ ও রাহুল গাঁধীর নতুন ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করতে চলেছে। সিপিএম গোটা বিষয়টি নিয়ে সংশয়ে রয়েছে। এক দিকে সাম্প্রদায়িক শক্তি অন্য দিকে কংগ্রেসের জনবিরোধী নীতি। এক দিকে রাহুল ও অন্য দিকে মোদী এই পরিস্থিতি তৈরি হলে সিপিএমের ভূমিকা কী হবে? সিপিএম তথা প্রকাশ কারাট চাইছেন, রাজ্য স্তরে মমতা-বিরোধিতা যে রকম চলছে চলুক। কিন্তু কেন্দ্রে কতটা বিরোধিতা করা হবে কিংবা মতাদর্শগত বিরোধিতা যতই করা হোক না কেন, কৌশলগত ভাবে কংগ্রেসের সঙ্গে সম্পর্ক রাখা হবে কি না তা নিয়েও আলোচনা হতে চলেছে সিপিএমের বৈঠকে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.