জেলা শহরে রাজ্য ও বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে তথ্যপ্রযুক্তি পার্ক তৈরির প্রস্তাবে সবুজ সঙ্কেত দিয়েও পিছিয়ে এল কেন্দ্র। সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর, সড়ক ও অন্যান্য পরিকাঠামোর খামতির কারণে এ ধরনের ‘পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ’ (পিপিপি) মডেলের প্রকল্পে কতটা লগ্নি টানা যাবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রক।
সল্টলেক, শিলিগুড়ি, হলদিয়া, দুর্গাপুর ও খড়গপুরে তিন একর করে জমি আছে টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রকের। কলকাতা-সহ রাজ্যের পাঁচ শহরে জমি ফেলে না-রেখে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের পরিকাঠামো তৈরি করতে রাজি ছিল কেন্দ্র। এক বছর আগে রাজ্যের তথ্যপ্রযুক্তি দফতরকে চিঠি দিয়ে এ বিষয়ে সবুজ সঙ্কেত দেয় কেন্দ্র। কিন্তু এখন কলকাতা ছাড়া আর কোথাও লগ্নিতে আগ্রহী নয় তারা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর, সল্টলেকের জমির বাণিজ্যিক ব্যবহারেই একমাত্র উৎসাহী কেন্দ্র।
মূলত সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক বা এস টি পি প্রকল্পের জন্য এই জমি নিয়েছিল কেন্দ্র। প্রকল্পের আওতায় থাকা তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলি কর ও রফতানির ক্ষেত্রে বিশেষ ছাড় পেত। দেশের ছোট ও মাঝারি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার হাত ধরতেই এস টি পি প্রকল্প চালু করে কেন্দ্র। তবে ২০১১ সালে এই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। ফলে এস টি পি প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ জমি আর কাজে লাগছে না।
এ দিকে, রাজ্যে নতুন সরকার ক্ষমতায় এসেই জানিয়ে দেয় জেলায় জেলায় তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা। সেই সূত্রেই কেন্দ্রের কাছে এই জমি ব্যবহার করার প্রস্তাব দেয় রাজ্য। প্রস্তাবিত পরিকাঠামোর এক তৃতীয়াংশ জায়গা রাজ্য সরকারকেও নিজের প্রয়োজন মতো ব্যবহার করার অনুমতি দিয়েছিল কেন্দ্র। সে ক্ষেত্রে এখানে বিভিন্ন নতুন ও ছোট সংস্থার জায়গা পাওয়ার সুযোগ তৈরি হত।
সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, এ ক্ষেত্রে মূলত পরিকাঠামোর ঘাটতি বাদ সাধছে। টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রকের এক কর্তার মতে, সড়ক যোগাযোগ উন্নত না-হলে জেলায় বিনিয়োগ টানা সহজ নয়। অন্য দিকে সল্টলেকে সেক্টর ফাইভের মতো অঞ্চলে জমির চাহিদা আকাশছোঁয়া। ফলে সেই জমিতে পরিকাঠামো গড়ে দ্রুত লাভের মুখ দেখা যাবে। কিন্তু অন্যান্য জেলা শহরে সেই সুযোগ নেই বলেই মনে করছেন ওই কর্তা। ফলে চাহিদা ও জোগানের এই হিসেব কষেই শুধু সল্টলেকে নিজেদের জমিতেই পরিকাঠামো গড়তে চায় কেন্দ্র।
রাজ্যের তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পমহলের মতে, জেলায় তথ্যপ্রযুক্তি পার্ক গড়ে উঠলে আর্থিক সঙ্কটে নাজেহাল রাজ্য সরকারের কাছে তা বড় প্রাপ্তি হত। কারণ এস টি পি প্রকল্পের জন্য রাজ্য সরকারকে কিছুটা আর্থিক ব্যয়ভার বহন করতে হত। কেন্দ্রের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধতে পারলে সেই দায়ও থাকত না। |