পর্যটন উৎসবে দিল্লির ছায়া, প্রশ্ন জার্মান প্রতিনিধির
দিল্লির ঘটনার ছায়া পড়ল আন্তর্জাতিক পর্যটন উৎসবে। দেশের বৃহত্তম পর্যটন সমাবেশে জার্মানির প্রতিনিধি প্রশ্ন তুললেন, ভারতবর্ষে মেয়েদের উপরে যে ধরণের হামলা হচ্ছে, তাতে বিদেশের একাকী মহিলা পর্যটকরা ভারতে কতটা নিরাপদ? জানতে চাইলেন, ভারত তার ভাবমূর্তি ফেরাতে কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে কি?
কাল থেকে গুয়াহাটিতে শুরু হল ‘আন্তর্জাতিক পর্যটন সমাবেশ, গুয়াহাটি ২০১৩’। আসিয়ান, সার্ক ও পশ্চিমের দেশ মিলিয়ে, মোট ২৩টি দেশের প্রায় ৮০ জন মন্ত্রী, আমলা, প্রতিনিধি এই পর্যটন সমাবেশে অংশ নিচ্ছেন। কেন্দ্রীয় পর্যটন সচিব পরভেজ দেওয়ান জানান, এটিই এখন অবধি দেশের বৃহত্তম পর্যটন সমাবেশ। কেন্দ্রীয় পর্যটন সচিব, অসম-মণিপুর-অরুণাচল-সিকিমের পর্যটন সচিবরা যখন উত্তর-পূর্ব তথা ভারতের পর্যটন সম্ভাবনার সোনালী চিত্র আঁকছেন, তখনই দিল্লি ও উত্তর-পূর্বে নারীদের উপরে হওয়া অত্যাচার ও ধর্ষণের প্রসঙ্গ তুলে তাল কেটে দিল জার্মানি। জার্মান প্রতিনিধি সাফ জিজ্ঞাসা করেন, ভারতে মেয়েদের উপরে সম্প্রতি যে সব ঘটনা ঘটেছে, তাতে কোন ভরসায় একলা বিদেশিনীরা ভারতে ঘুরতে আসবেন? অপ্রস্তুত দেওয়ান বলেন, “ভারতে পর্যটকদের উপরে কোনও হামলা হয় না। এখানকার যে কোনও রাজ্যে নির্ভয়ে আসতে পারেন সকলে”
সমাবেশের উদ্ধোধন করেন রাজ্যপাল জানকীবল্লভ পটনায়েক ও কেন্দ্রীয় পর্যটনমন্ত্রী চিরঞ্জীবী। প্রথমবার উত্তর-পূর্ব সফরে আসা দক্ষিণী অভিনেতা তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী চিরঞ্জীবী বলেন, “উত্তর-পূর্ব প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যে ভরপুর। এখানে চলচ্চিত্রের শ্যুটিং করতে আসার জন্য পরিচালকদের আমি নিজে উৎসাহ দেব। উত্তর-পূর্বে পর্যটন বিকাশের উদ্দেশে বিদেশি পর্যটকদের উপরে বেশ কিছু নিয়মকানুন শিথিল করা হচ্ছে। দু’বার ভারত ভ্রমণের ক্ষেত্রে অন্তত ২ মাসের ব্যবধান থাকার নিয়মও উঠে যাচ্ছে। অসম-সহ উত্তর-পূর্বে একই সঙ্গে বন্যপ্রাণী-পর্যটন, ইকো-পর্যটন, গল্ফ-পর্যটন, চা-পর্যটন, নদী-অভিযান, র্যাফটিং, ধর্ম-পর্যটন, প্রত্ন-পর্যটন, অ্যাডভেঞ্চার-পর্যটন, উপজাতি জীবন ও ঐতিহ্য-পর্যটন সম্ভব। এক যাত্রায় এত ধরণের অভিজ্ঞতা লাভের সুযোগ আর কোথায় মিলবে?” উত্তর-পূর্বে অরুণাচল-মিজোরাম-নাগাল্যান্ড ঘুরতে গেলে ‘ইনার লাইন পারমিট’ ও ‘রেস্ট্রিকটেড এরিয়া পারমিট’ লাগে। কেন্দ্রীয় পর্যটন সচিব জানান, প্রক্রিয়াটি শীঘ্রই অনলাইন হয়ে যাবে। পর্যটকদের এক দিনের মধ্যেই অনুমতি মিলবে।
তবে বাইরের দেশের সামনে বিস্তর চমকের পসরা হাজির করতে চাইলেও, একাদশ পরিকল্পনায় উত্তর-পূর্বের পর্যটন বিকাশে যে ১১টি পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল, তারমধ্যে মাত্র ১টি প্রকল্পই সম্পূর্ণ হয়েছে। এই ব্যর্থতা নিয়ে প্রশ্ন তুললে দেওয়ান বলেন, “উত্তর-পূর্বের বিভিন্ন এলাকায় যোগাযোগ, সড়ক, পরিবহণ ও প্রতিকূল প্রাকৃতিক পরিবেশ সংক্রান্ত সমস্যার জন্যই প্রকল্পগুলি শেষ করা যায়নি।” মণিপুরের পর্যটন সচিব রাজেশ কুমার বলেন, “মণিপুরে সন্ত্রাস নিয়ে বিস্তর ভীতি রয়েছে। তবে তা অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক সমস্যা। দেশি বিদেশি পর্যটকরা নির্ভয়ে আসুন। কোনওদিন কোনও পর্যটককে আক্রমণ করা হয়নি, হবেও না।” অরুণাচলের পর্যটন সচিব সোনম চম্বে নিজে তাওয়াং নিবাসী। তিনি বলেন, “অরুণাচল বললেই মানুষ তাওয়াং-বমডিলা বোঝেন। ওখানে পর্যটনের বিকাশের প্রয়োজন নেই। এ বার আমরা জিরো, দাপোরিজু, মেচুকার মতো অনাঘ্রাত এলাকাগুলিতে পর্যটক টানতে পরিকল্পনা নিচ্ছি।”
পর্যটন মন্ত্রকের আশা, বৃহত্তম পর্যটন মেলায় এতগুলি দেশের পর্যটন বিভাগের কর্তা ও পর্যটন সংস্থার প্রতিনিধিদের মধ্যে আলাপ-আলোচনার জেরে, পরের বছর উত্তর-পূর্বে আন্তর্জাতিক পর্যটকের সংখ্যা ২০ শতাংশ বাড়বে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.